নিজস্ব প্রতিনিধি:
শ্যামনগর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাগর কুমার মন্ডলসহ তার ছয় সহযোগীর বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য “ফেনসিডিল” ব্যবসার অভিযোগে মামলা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ছয়জনকে আটক করার পর সাতক্ষীরা জেলা গোয়েন্দা শাখার সহকারী উপ-পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম বাদি হয়ে শ্যামনগর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। ছাত্রলীগ সভাপতিসহ তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসার মামলার বিষয়টি সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসার পর থেকে সর্বত্র সমালোচনার ঝড় বইছে।
দলীয় নেতাকর্মীদের অনেকে দ্রুত উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির পদ থেকে তাকে বহিস্কারের দাবিও তুলেছে। অভিযোগ উঠেছে বিকাশ এজেন্টের ২৬ লাখ টাকা ছিনতাই এর অভিযোগে জেলা ছাত্রলীগের বহিস্কৃত সাধারন সম্পাদক সাদেক এর পকেট কমিটি পাওয়া সাগর কুমার মন্ডল দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। জানা গেছে ভারত থেকে আসা ফেনসিডিল কেনা বেচার খবরে গত ২১ জুন রাতে শ্যামনগর উপজেলার পরানপুর এলাকায় অভিযান চালায় জেলা গোয়েন্দা শাখার পুলিশ সদ্যরা।
এসময় ঘটনাস্থল থেকে ছয় সহযোগী আটক হলেও ছাত্রলীগ সভাপতি কৌশলে মটর সাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে আটককৃতদের নিকট থেকে ৪০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয় এবং রাতেই অভিযানে অংশ নেয়া সহকারী উপ-পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম রফিক বাদি হয়ে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন। বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের হওয়া মামলা নং ৩৯। তবে সাগর কুমার মন্ডল ছাত্রলীগ সভাপতি হওয়ায় এবং উপজেলা আওয়ালীগের প্রভাবশালী এক নেতার আস্তাভাজন হওয়ায় মামলার বিষয়টি গোপন রাখা হয়। এদিকে ঈদুল আযহার পর ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই ছাত্রলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি তুলেছে স্থানীয় অনেক নেতাকর্মী।
এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে নানা ধরনের মন্তব্য ছোড়া হচ্ছে। খোদ মামলার বাদি তার ভেরিফাইড ফেসবুকে লিখেছেন, “আমার শ্যামনগরে অনেক প্রাপ্তি আছে, আবার সব প্রাপ্তিকে বিলীন করার মত কষ্টের অনুভূতিও আছে। যেমন সাগর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, ওকে যেদিন মাদক মালা দিতে হয়েছিল আমি সত্যি অবাক হয়েছিলাম। আমাকে ভাবতে বাধ্য করেছিল কি করে সম্ভব একজন উপজেলা ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্ট হয়ে মাদক ব্যবসায়ী হতে পারে।
আমি অবাক হলেও সেটি সত্য ছিল, ও ছাত্রলীগের সত্যি কলঙ্ক”। তিনি সবাইকে চিহ্নিত খারাপ মানুষকে এড়িয়ে চলাসহ নিজ নিজ সন্তানদের প্রতি খেয়াল রাখারও আহবান জানান তার লেখায়। এছাড়া অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাত্রলীগের মত এমন একটি আদর্শভিত্তিক রাজনৈতিক সংগঠনে এমন নীতি বিবর্জিতদের জায়গা না দেয়াসহ বিভিন্ন তীর্যক মন্তব্য লেখেন। মাদকের মামলাসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে সমালোচনার বিষয়ে জানার জন্য মুটোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।