হোম আন্তর্জাতিক যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা কমানোয় প্রভাব রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে

যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা কমানোয় প্রভাব রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 21 ভিউজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
বিশ্বব্যাপী ত্রাণ তহবিল স্থগিত নিয়ে মার্কিন সরকারের সাম্প্রতিক নির্বাহী আদেশে এরই মধ্যে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ওপর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) শরণার্থী বিষয়ক এক শীর্ষ কর্মকর্তা এ কথা জানিয়েছেন।

মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে শত শত বছর ধরে বসবাস করে আসলেও ১৯৮০-এর দশকে তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়। এরপর থেকে তাদের অনেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।

২০১৭ সালে সামরিক অভিযানের পর সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা ফের বাংলাদেশে ঢোকে। এটিকে জাতিসংঘ মিয়ানমারের জাতিগত নিধনের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ হিসেবে উল্লেখ করে আসছে।

বর্তমানে ১৩ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে কক্সবাজার জেলার ৩৩টি ক্যাম্পে গাদাগাদি করে বসবাস করছে। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির।

শরণার্থীরা প্রায় সম্পূর্ণরূপে মানবিক সহায়তার উপর নির্ভরশীল। অথচ কোভিড-১৯ মহামারীর পর থেকে এই সহায়তা ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের এখানে সবচেয়ে বড় দাতা। তারা গত বছর রোহিঙ্গাদের জন্য ৩০ কোটি ১০ লাখ ডলার বা মোট বৈদেশিক সাহায্যের ৫৫ শতাংশ দিয়েছে।

তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন জানুয়ারির শেষের দিকে ঘোষণা করেছিল, তারা বিশ্বব্যাপী বেশিরভাগ মার্কিন সহায়তা বন্ধ করে দিচ্ছে।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান আরব নিউজকে বলেন, মার্কিন বাজেট কাটছাঁট সরাসরি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর প্রভাব ফেলবে। কেননা যুক্তরাষ্ট্র যৌথ প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনার জন্য এই তহবিলের ৫০ শতাংশেরও বেশি দিয়ে থাকে। মার্কিন তহবিল না পাওয়া গেলে স্বাস্থ্য, স্যানিটেশন ও পুষ্টি খাত বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

শিবিরের বেশ কয়েকটি হাসপাতাল ইতিমধ্যে তাদের পরিষেবা কমিয়ে দিয়েছে এবং কোনমতে সচল থাকার ব্যবস্থা করছে। মার্চের মধ্যে অর্থায়ন সমস্যার সমাধান না হলে এসব হাসপাতাল বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবে।

মিয়ানমারে নতুন করে সংঘাতের প্রেক্ষাপটে বৃহত্তম দাতাদের সহায়তা বন্ধ কীভাবে রোহিঙ্গা সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলবে, তা নিয়ে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর মধ্যেই গত আগস্ট থেকেও প্রায় ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে।

বিশ্বের অন্যান্য স্থানে সংঘাতের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রোহিঙ্গাদের জন্য বৈদেশিক সহায়তা ক্রমাগত কমে আশায় বাংলাদেশ ক্রমবর্ধমান কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে। সেভ দ্য চিলড্রেন, ব্র্যাক ও ইউনিসেফের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ইতোমধ্যে ভুগতে শুরু করেছে। ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক তহবিল কাটছাঁটের কারণে হাসপাতালের কার্যক্রম উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। এমনকি কিছু স্বাস্থ্য সংস্থা কর্মীদের ছাটাইও করা হয়েছে।

মিজানুর রহমান বলেন, যদি মার্কিন সহায়তা শেষ পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে আমরা অন্যান্য দাতা দেশ ও সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের প্রচেষ্টা আরও জোরদার করব। একই সঙ্গে আমরা আমাদের রিসোর্সকে যৌক্তিকীকরণ করে অ্যাডজাস্টমেন্ট করব। তহবিল সংগ্রহের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে এখানকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে চূড়ান্তভাবে এর পরিণতি ভোগ করতে হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন