অনলাইন ডেস্ক:
রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের পোড়া ভবনে হামলা ও ভাঙচুর শেখ হাসিনার বক্তব্যে ছাত্রদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গণমাধ্যমে সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এ সময় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ভাঙচুর প্রসঙ্গে উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘শেখ হাসিনা ভারতে থেকে যে ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন তা ছাত্ররা ভালোভাবে নিচ্ছে না। এটা তারই বহিঃপ্রকাশ।’
তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘ভারতে লিখিতভাবে অনুরোধ করা হয়েছিল শেখ হাসিনা যেন উসকানিমূলক বক্তব্য থেকে বিরত থাকেন। আমরা আজও আবার চিঠি দিয়েছি, ভারতের দায়িত্বপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলব করে।’
ভারতের দাবি তারা শেখ হাসিনাকে কোন প্লাটফর্ম দিচ্ছেন না। কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রী তার ব্যক্তিগত ফোন ব্যবহার করে অন্যদেশ থেকে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন।
ভারতে অবস্থান করা ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গত বুধবার অনলাইনে ভাষণ দেন। এর প্রতিবাদে পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর অভিমুখে ‘বুলডোজার মিছিল’ কর্মসূচি দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
বুধবার রাত ৮টার আগে থেকে বিক্ষুব্ধ জনতা বাড়িটিতে ঢুকে পড়ে। এরপর গভীর রাত পর্যন্ত ভাঙচুর চালানো হয় বাড়িটিতে। এক পর্যায়ে আনা হয় একটি এক্সকেভেটর। এ কার্যক্রম বৃহস্পতিবারও অব্যাহত ছিল।
বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে বঙ্গবন্ধু বাড়ির সামনে গিয়ে দেখা যায়, এক্সকেভেটরটি দিয়ে ৩২ নম্বরের বাড়িটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। উৎসুক জনতার ভিড় রয়েছে বাড়িটি ঘিরে। কেউ কেউ ভাঙা স্লাব থেকে রড খুলে নিয়ে যাচ্ছে, কেউ বাড়িটি থেকে এসি খুলে রিকশায় করে নিয়ে যাচ্ছে। আবার কেউ কেউ নিজের মোবাইল ফোনে ভিডিও করছে।
বাড়িটির উল্টো পাশে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিটিও ভেঙে ফেলা হয়েছে। তবে ঘটনাস্থলের আশপাশে কোনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দেখা যায়নি।
এর আগে গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার তীব্র গণ আন্দোলনের মুখে পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সারা দেশে আওয়ামী লীগের যেসব নেতার বাড়ি ভেঙে দিল ছাত্র-জনতাসারা দেশে আওয়ামী লীগের যেসব নেতার বাড়ি ভেঙে দিল ছাত্র-জনতা
সরকার পতনের পর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের এই বাড়িটিতে তাণ্ডব চালিয়েছিল বিক্ষুব্ধ জনতা। সে সময় বাড়িটি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
ভারতের সাথে সই হওয়া বিভিন্ন চুক্তি প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে সই হওয়া চুক্তিগুলো চাইলেই একতরফাভাবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বাতিল করা সম্ভব নয়। আদানি সঙ্গে সই হওয়া চুক্তিতে দেশের স্বার্থ দেখেনি বিগত সরকার।’
আগামী এপ্রিলে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা সফর করতে পারেন বলে জানান উপদেষ্টা তৌহিদ। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানকে বিশ্বের অন্য সব দেশের মতই দেখতে চাই।’