হোম খুলনাযশোর মনিরামপুরে বিতর্কিত টেকারঘাট সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ

মনিরামপুরে বিতর্কিত টেকারঘাট সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 36 ভিউজ

রিপন হোসেন সাজু:

আইনি জটিলতায় যশোরের মনিরামপুর ও অভয়নগর সীমান্তবর্তী টেকের ঘাট সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে মনিরামপুর ও অভয়নগর উপজেলার দশ লক্ষাধিক মানুষ। নির্ধারিত সময়ে নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে (এলজিইডি) দুষলেন রিটকারি ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক ইকবাল কবীর জাহিদ। অপরদিকে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হলে পুনরায় কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন যশোর জেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আহমেদ মাহবুবুর রহমান। জানা গেছে, অভয়নগর ও মনিরামপুর উপজেলার সীমান্তে টেকা (মুক্তেশ্বরী) নদী রয়েছে। নদীর এক পাশে অভয়নগর উপজেলার পায়রা ইউনিয়ন। অপরপাশে মনিরামপুর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়ন। দুই উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা ঠিক রাখতে ১৯৮০ দশকে অভয়নগরের টেকারঘাট এলাকায় একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল। দীর্ঘদিনের পুরাতন সেই সেতু ভেঙে ২০২১ সালের ১৩ অক্টোবর একই স্থানে নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর।

খুলনা বিভাগীয় অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৮ কোটি ৫৫ লাখ ৭৩ হাজার টাকা ব্যয়ে মোজাহার এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে। ২০২৩ সালের ৭ মার্চ নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়া এবং সেতুর উচ্চতা সমস্যা নিয়ে উচ্চ আদালতে রিট করেন যশোরের বাসিন্দা ইকবাল কবীর জাহিদ। সরেজমিনে দেখা গেছে, টেকারঘাট সেতুর নির্মাণকাজ প্রায় ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ডসহ কোনো মালামাল সেখানে নেই। অসমাপ্ত সেতুর পাশে একটি কাঠের তৈরি বিকল্প সেতু দিয়ে ছোট যানবাহন ও মানুষ চলাচল করছে। পার্শ্ববর্তী ভবদহ মহাবিদ্যালয় এর সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুল মতলেব বলেন, আইনি জটিলতায় সেতুর কাজ বন্ধ রয়েছে। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছে দুই উপজেলার মানুষ। কাঠের তৈরি বিকল্প সেতু দিয়ে চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ। যে কারণে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ না হলে দুই উপজেলার মানুষ রাস্তায় নামতে বাধ্য হবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের এক প্রতিনিধি বলেন, আদালতের নির্দেশ মেনে কাজ চলছিল। ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু গত ৫ আগস্টের পর নির্মাণ সামগ্রীসহ অন্যান্য মালামাল লুট হয়ে যায়। আমাদের লোকজনকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। কথাগুলো বলে প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান তিনি। রিটকারী ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহŸায়ক ইকবাল কবীর জাহিদ বলেন, ছয় মাসের মধ্যে নিয়ম অনুযায়ী কাজ শেষ করে রিপোর্ট করার নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। আদালতের দেওয়া সময় শেষ হয়ে গেছে। অথচ এলজিইডি কিছুই করেনি। যে কারণে দায় এড়াতে পারে না তারা। এখন এলজিইডি হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে ব্যবস্থা গ্রহণ করলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। যশোর জেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আহমেদ মাহবুবুর রহমান বলেন, উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞায় টেকারঘাট সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না হলে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন