রিপন হোসেন সাজু:
সাত বছর পর মনিরামপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শুরু হয়েছে বইমেলা। ঢাকা থেকে আসা বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের একটি গাড়ি থেকে অনেকগুলো র্যাক নামিয়ে একটি স্টল করা হয়েছে। সেই স্টলে শোভা পাচ্ছে ১০ হাজারের বেশি বই। বইমেলায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাসহ বইপ্রেমিরা ছুটে আসছেন। এই ভ্রাম্যমান বইমেলা চলবে ২২ জানুয়ারী পর্যন্ত। মনিরামপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
জানা যায়, ২০০০ সাল থেকে মনিরামপুর শিল্পী গোষ্ঠি নামে একটি সাংস্কৃতি সংগঠন বইমেলার আয়োজন করে আসছিল। রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা ও নানা জটিলতায় কারণে সর্বশেষ ২০১৮ সালের বইমেলা হয় মনিরামপুরে। এরপর থেকে মনিরামপুর শিল্পী গোষ্ঠি বইমেলার আয়োজনের চেষ্টা করলেও তা অজ্ঞাত কারনে থমকে গেছে। প্রায় সাত বছর পর ঐতিহ্যবাহী মনিরামপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আবারও শুরু হয়েছে পাঁচদিন ব্যাপী বইমেলা। তবে, সেটি ভ্রাম্যমাণ বইমেলা। যা বাস্তবায়ণে রয়েছে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও সহযোগীতায় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এছাড়া মেলা আয়োজন সহযোগী হিসেবে রয়েছে মেটলাইফ। এখানে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের নিজস্ব বই ছাড়াও অন্যান্য প্রকাশনারও বই রয়েছে। রোববার (১৯ জানুয়ারি) দুপুর ৩ টার বইমেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, ভ্রাম্যমাণ বইমেলার স্টলে ক্রেতা-দর্শনার্থীর ভিড়। বড়দের সঙ্গে মেলায় শিশু-কিশোরদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মত। স্কুল পড়–য়া শিক্ষার্থীরা ভিড় করছে ভ্রাম্যমাণ বইমেলা প্রাঙ্গণে। কেউ বই কিনছেন, কেউ দেখছেন, কেউ ছবি তুলছেন আবার কেউবা মেলায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। মেলায় আসা তাসনিমুল হাসান প্রান্তের সাথে কথা হয়।
তিনি বলেন, দীর্ঘ সাত বছর পর স্কুল মাঠে বইমেলায় আসতে পেরে খুব ভাল লাগছে। তবে, মনিরামপুরের ঐতিহ্যবাহী বইমেলা পুনরায় চালু হোক এটা আমাদের প্রাণের দাবী। কলেজ শিক্ষার্থী তাব্বাসুম ইয়াসমিন জানান, একটা সময় ছিল প্রতিবছর বইমেলার আয়োজন করা হতো। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াকালীন পরিবারের সঙ্গে আসতাম মেলা দেখতে। স্বল্প পরিসরে ভ্রাম্যমান বইমেলা এসে বেশকিছু বই সংগ্রহ করছি। ভ্রাম্যমান বইমেলার মনিরামপুরের ইউনিট ইনচার্জ কামরুজ্জামান বলেন, দেশব্যাপী আলোকিত মানুষ গড়ার আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের বিশেষ উদ্দ্যোগ ভ্রাম্যমান বইমেলা। এখানে দেশি-বিদেশী সকল প্রখ্যাত প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রকাশিত দশ হাজারেরও বেশি বই রয়েছে। পাঠকরা পছন্দ ও চাহিদা অনুযায়ী বই কিনতে পারবেন ভ্রাম্যমান বইমেলা থেকে। ৫ জন কর্মকর্তা মনিরামপুরের এই মেলার দেখভাল করছেন। ৫ দিন ব্যাপী বইমেলা প্রতিদিন দুপুর ২ টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবসাধারণের জন্য খোলা থাকবে। মেলায় ২১ জানুয়ারি সংস্কৃতি প্রতিযোগীতার আয়োজন করা হবে। মনিরামপুর শিল্পী গোষ্ঠির প্রতিষ্ঠাতা প্রভাষক সঞ্জয় দেবনাথ দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বছরের জানুয়ারি মাস আসলেই মনিরামপুরের ঐহিত্যবাহী বইমেলা কার্যক্রম শুরু হত। সাতদিন ব্যাপী মেলার আয়োজন করা হত মনিরামপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে। চেষ্ঠার ঘাটতি ছিল না তবে, মহামারী করোনা ও রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতার কারনে সাত বছর বইমেলার আয়োজনটা বন্ধ আছে। প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক সহযোগীতা পেলেই পুনরায় ঐতিহ্যবাহী বইমেলা আয়োজন করা সম্ভব হবে মন্তব্য করেন তিনি।