নিজস্ব প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরায় জেলা প্রশাসনের আওতাধীন ৪টি আদালতে আইনজীবীদের অনির্দিষ্ট কালের কলম বিরতি চলছে। আদালত গুলোতে সরকারি কার্টিজ পেপারের পরিবর্তে বøু পেপার চালু রাখার দাবিতে বৃহস্পতিবার থেকে আইনজীবীদের এ কলম বিরতি চলছে। জেলা প্রশাসন ও আইনজীবীরা নিজ নিজ ক্ষেত্রে অনড় থাকায় ব্যাপক দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা সেবা গ্রহীতারা।
জেলা প্রশাসন ও আইনজীবী সমিতি সূত্রে জানা যায়, জেলা প্রশাসনের অধীনে ৪টি কোর্ট রয়েছে। সেগুলো হলো, এডিএম কোর্ট, নির্বাহী কোর্ট, সার্টিফিকেট কোর্ট ও রাজস্ব কোর্ট। এসকল কোর্টে আরজি দাখিল, জবাব দাখিল, সময় প্রার্থণাসহ অন্যান্য সেবা গ্রহণ করেন আবেদনকারীরা। কার্টিজ পেপার ব্যবহারের সরকারি আদেশ উপেক্ষা করে আইনজীবীরা সমিতি থেকে সরবরাহকৃত বøু পেপারে আরজি দাখিলসহ অন্যান্য কাজ সম্পন্ন করেন। সম্প্রতি জেলা প্রশাসন থেকে সরকারি কার্টিজ পেপার ব্যবহারের আদেশ দেওয়া হয়। এতে বেঁকে বসেন আইনজীবীরা। নির্বাহী আদালত গুলোতে বøু পেপারের বৈধতা দেওয়ার দাবিতে বৃহস্পতিবার থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য আদালত বর্জন করেছেন আইনজীবীরা। এতে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছেন সেবাগ্রহীতারা।
পাটকেলঘাটা থেকে আগত শামসুর রহমান জানান, তার এডিএম কোর্টে একটি মামলা রয়েছে। বৃহস্পতিবার তার নির্ধারিত দিন ছিল। কিন্তু আইনজীবীদের কলম বরতির কারণে তার ফিরে যাওয়া ছাড়া কোন পথ নেই।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. শাহ্ আলম জানান, এডিএম কোর্ট, নির্বাহী কোর্ট, সার্টিফিকেট কোর্ট ও রাজস্ব কোর্টে আইনজীবীরা সমিতি থেকে নেওয়া বøু পেপার সরবরাহ করে। এটি শুধু সাতক্ষীরা নয়, ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ জায়গায় এটা করা হয়। ব্লু পেপার দিয়ে আদালতে আরজি, জবাব, সময়ের প্রার্থনা করা হয়। এ গুলো উচ্চতর আদালতেও গ্রহণ করা হয়। এ বিষয়ে আইনজীবীদের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের সাথে দেখা করা হয়েছে। কিন্তু তিনি অনড়। তাই আইনজীবী সমিরি সিদ্ধান্ত, বøু পেপার গ্রহণ না করা পর্যন্ত তারা আদালত বর্জন করে কলম বিরতি পালন করবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বøু পেপারের সাথে কোর্ট ফি লাগানো হচ্ছে। তাই সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে না। বিকল্প হিসেবে তিনি আদালতে সরকারের আয়ের ১০ ভাগ আইনজীবীদের দেওয়ার কথা বলেন।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ বলেন, সরকারিভাবে যে কার্টিজ পেপার দেওয়া হয়, তা আইনজীবীরা ব্যবহার করতে চাননা। তারা চান ব্লু পেপার সরবরাহ করতে। কার্টিজ পেপার ব্যবহারে সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। তাছাড়া বিজি প্রেস থেকে এটা আসে। কার্টিজ টেকসই ও মানসম্মত। সরকারের রাজস্ব আয়ের অন্যতম এই খাতকে নষ্ট করার সুযোগ নেই।
তিনি আরও বলেন, আইনজীবীরা তাকে বলেছে, এটা তাদের আয়ের জায়গা। কিন্তু বার তো আয়ের জায়গা হতে পারেনা। তাছাড়া কার্টিজ পেপার কিনতে তো আইনজীবীরা পকেট থেকে টাকা দেননা, মক্কেলদের কাছ থেকে নিয়ে দেন। সুতরাং রাস্ট্রের নির্দেশনার বাইরে গিয়ে এটা করা উচিৎ নয়।