হোম খুলনাযশোর মনিরামপুরে পাট পণ্য সামগ্রী তৈরিতে ঝুঁকছেন নারীরা

মনিরামপুরে পাট পণ্য সামগ্রী তৈরিতে ঝুঁকছেন নারীরা

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 15 ভিউজ

রিপন হোসেন সাজু:

দিনমজুর বাবার সন্তান মারুফা খাতুন। ছোট তিন বোনসহ ৫ জনের সংসার চালাতে বাবার অনেক কষ্ট হয়। অভাবের সংসারে বাবার কাঁধে বোঝা হতে চান না মারুফা। তাই পড়ালেখার পাশাপাশি পাট ও পাট জাতীয় পণ্য তৈরীর কাজ করে উপার্জিত রোজগার বাবার সংসারে দিয়ে অবদান রাখছেন। বর্তমান সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ক্ষতিক্ষারক পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করায় আরও আত্মবিশ্বাস ও উৎসাহ বেড়ে গিয়েছে মারুফা খাতুনের। তার মতো আরও কয়েকজন নারী রীতা দত্তের “অপরূপা হস্তশিল্পে” পাট জাতীয় পণ্য সামগ্রীসহ সুতোয় তৈরী হস্তশিল্পের উপর প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন গৃহিনী খাদিজা বেগম, মাছুমা খাতুনসহ আরও কয়েকজন নারী । স্বামীর স্বল্প আয়ের সংসারে সহযোগিতা করতে পাট জাতীয় পণ্য সামগ্রী তৈরীর কাজে এসেছেন তারা। মনিরামপুর উপজেলার রীতা দত্ত নামে এক নারী উদ্যোক্তা পাট জাতীয় পণ্য সামগ্রী তৈরীর উপর বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তিনি গড়ে তুলেছেন “অপরূপা বহুমূখী মহিলা ও শিশু উন্নয়ন সংস্থা” রীতা দত্ত এই প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক। সংগ্রামী ও প্রবল আত্মবিশ্বসী নারী এই রীতা দত্ত গ্রামীণ নারীদের কাজের সুযোগ সৃষ্টি করছেন। এ্যাডভোকেট আলমগীর হোসেন বলেন,পণ্যে পাটজাত মোড়কের ব্যবহার আইন-২০১০, পাট আইন-২০১৭-এ ধান, চাল, হলুদ, মরিচসহ এ ধরনের পণ্য সামগ্রী পাট জাতীয় পণ্যে মোড়কজাত বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই আইনটি প্রয়োগ করলেই পলিথিনের ব্যবহার থাকবে না। উদ্যোক্তা রীতা দত্ত বলেন, পরিবেশের ক্ষতিক্ষারক পলিথিনের বিকল্প হতে পারে পাট জাতীয় এসব পণ্য। এজন্য দরকার সরকারের কার্য্যকরী উদ্যোগ ও ভূমিকা। পাটের সুতোর মূল্য নাগালের মধ্যে রেখে দেশীয় বাজারে সহজ বিকেন্দ্রীকরণ করা হলে পলিথিনের দৌরাত্ম কমে আসবে। দেশে পাট জাতীয় পণ্যের বাজার সৃষ্টি হলে অনেক নারী এ পেশায় এগিয়ে আসবে। এজন্য সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগে নারীদের কার্যকরী উন্নতর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থার প্রয়োজন। মনিরামপুর সরকারি কলেজের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নুরুল ইসলাম খোকন বলেন, প্রতিদিন যে পরিমান পলিথিন ব্যবহার হয়, তাতে অর্থের অপচয়। কারন এটি কেবল একবারই ব্যবহার হয়। অথচ একটা পাটের তৈরী ব্যাগ একশ’ টাকায় কিনে অনায়াসে তিন থেকে চার বছর ব্যবহার করা যায়। শুধু বাজার করা ব্যাগ হিসেবে নয়, কাপড় রাখা থেকে শুরু করে সাংসারিক সব ধরনের কাজ এই পাট জাতীয় পণ্যে সম্ভব। শিক্ষানবিশ কর্মী খাদিজা পারভীন বলেন, সকাল ৯টা হতে বেলা ১টা পর্যন্ত প্রশিক্ষণ নিয়ে নতুন পণ্য তৈরী করি। এতে উপার্জিত স্বল্প রোজগার সংসারের কাজে লাগায়। মারুফা খাতুন বলেন, সংসারে তার আরও তিন বোন রয়েছে। বাবার একার রোজগারে সংসার চলে না। এখান হতে উপার্জিত স্বল্প রোজগার বাবার সংসারে সহযোগিতা করি। পাট অধিদপ্তর মনিরামপুরে উপজেলায় দায়িত্বরত সোহানুর রহমান বলেন, রীতা দত্তই একমাত্র পাট জাতীয় পণ্যের উপর বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। আমরা পাট জাতীয় পণ্য তৈরীতে প্রশিক্ষণ দিয়ে পলিথিনের বিকল্প বাজার সৃষ্টির চেষ্টা করছি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন