আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ভারতের অর্থনীতি বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতিতে বাড়ছে, যা দেশটিকে বৈশ্বিক পরাশক্তির তালিকায় থাকার যোগ্য করে তুলেছে বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সোচিতে অনুষ্ঠিত ভালদাই আলোচনা ক্লাবের প্লেনারি সেশনে বক্তব্য রাখার সময় তিনি এই মন্তব্য করেন। ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআই এ খবর জানিয়েছে।
ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে পারস্পরিক আস্থার উচ্চমাত্রা রয়েছে এবং দুই দেশ সব দিক থেকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও সুসংহত করছে।
পুতিন বলেন, ভারতের প্রায় দেড়শ কোটি জনসংখ্যা, প্রাচীন সংস্কৃতি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দিক থেকে বিশ্বের দ্রুততম অগ্রগতির দেশে পরিণত হওয়ার মাধ্যমে দেশটি নিশ্চিতভাবেই পরাশক্তির তালিকায় থাকা উচিত।
ভারতের প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এটি একটি মহান দেশ এবং আমরা সব দিক থেকেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলছি। এখন জনসংখ্যার দিক থেকে ভারত বিশ্বের শীর্ষে এবং প্রতি বছর এর জনসংখ্যা প্রায় ১০ মিলিয়ন করে বাড়ছে।
অর্থনৈতিক দিক থেকেও ভারত বিশ্বের অন্যান্য দেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
রাশিয়ার বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, পুতিন আরও বলেন, দুই দেশের সম্পর্কের গতি ও দিক নির্ধারণ করা হয়েছে বর্তমান বাস্তবতার ভিত্তিতে এবং প্রতি বছর দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার পরিমাণ বহুগুণ বাড়ছে।
ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা ক্ষেত্রে সহযোগিতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীতে রাশিয়ার অসংখ্য সামরিক সরঞ্জাম ব্যবহৃত হচ্ছে এবং এই সম্পর্কের ক্ষেত্রে উচ্চ আস্থা বিদ্যমান।
উদাহরণ হিসেবে ব্রাহ্মোস ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে পুতিন বলেন, এই ক্ষেপণাস্ত্রটিকে আমরা তিনটি ভিন্ন পরিবেশে–আকাশে, সাগরে ও স্থলে ব্যবহারের উপযোগী করেছি। ভারতের নিরাপত্তার স্বার্থে পরিচালিত এই প্রকল্পগুলো এখনও চলমান।
তিনি বলেন, এটি ব্যাপকভাবে পরিচিত এবং কেউ এর বিরোধিতা করে না। এই প্রকল্পগুলো উভয় দেশের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও সহযোগিতার উচ্চ স্তর প্রদর্শন করে।
ভারত ও চীনের মধ্যে সীমান্ত বিরোধ প্রসঙ্গে পুতিন বলেন, উভয় দেশের মধ্যে কিছু জটিলতা রয়েছে। তবে দুই দেশই বুদ্ধিমান নেতৃত্বের অধীনে ভবিষ্যতের দিকে নজর রেখে সমঝোতার পথ খুঁজছে এবং এক সময় এই সমঝোতা নিশ্চিত হবে।
তিনি আরও বলেন, যদি এই মনোভাব অব্যাহত থাকে, তবে সমঝোতার পথ খুঁজে পাওয়া যাবে এবং তা অবশ্যই সম্ভবপর হবে।
২০২০ সালের জুনে গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের পর থেকে ভারত ও চীনের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। যা গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র সামরিক সংঘর্ষ হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি জানিয়েছেন, দীর্ঘ আলোচনার পর দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছে। যা পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর টহল ও সেনা প্রত্যাহারকে সামনে রেখে চার বছরের বেশি সময় ধরে অচলাবস্থা নিরসনে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।