হোম খুলনাযশোর মনিরামপুরে জামাইয়ের হাতে শাশুড়ি হত্যা, ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা

মনিরামপুরে জামাইয়ের হাতে শাশুড়ি হত্যা, ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 30 ভিউজ

মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি:

মনিরামপুরে পাষন্ড জামাইয়ের হাতে মারপিটে আহত হয়ে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার বিকেলে মারা যান উপজেলার চালুয়াহাটি ইউনিয়নের ঘিবা গ্রামের বজলুর রহমানের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম। পরে সোমবার রাত ১১ টার দিকে ঢাকা থেকে লাশ বাড়িতে আসার পর তড়িঘড়ি করে দাফন করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত জামাই আবুল বাশারকে রক্ষা করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে স্থানীয় একটি মহল।

এলাকার সুধী সমাজের দাবি, শাশুড়িকে পিটিয়ে ও মাথায় আঘাত করে মেরে ফেলে দেয়ার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা যদি ধামাচাপা পড়ে যায় তবে সমাজে এর একটা বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসি।

খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, আনোয়ারা বেগম ও বজলুর রহমান দম্পতির একমাত্র মেয়ে রেক্সোনা খাতুনকে বিয়ে করে ঘর জামাই থাকেন আবুল বাশার (৪২)। গত ১৯ অক্টোবর আনোয়ারার মেয়ে অসুস্থ রেক্সোনা খাতুনকে ডাক্তার দেখানো নিয়ে কথা কাটাকাটি হয় শাশুড়ি ও জামাইয়ের মধ্যে। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে জামাই আবুল বাশার বাঁশের লাঠি দিয়ে শাশুড়ি আনোয়ারাকে বেদম মারপিট করে। এতে আহত হয়ে বারান্দায় বসে চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকলে পাষন্ড আবুল বাশার মোটা একটি বাঁশ দিয়ে শাশুড়ি আনোয়ারার মাথায় আঘাত করলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এসময় স্বজনরা উদ্ধার করে তাকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার বিকেলে তার মৃত্যু হয়। নিহতের ছোট বোন আঞ্জুয়ারা বেগম ও নাতি ছেলে শফিকুল ইসলামসহ স্থানীয় অনেকে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।

নিহত আনোয়ারা খাতুনের নাতি ছেলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া শফিকুল ইসলাম জানান, সেদিন তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার পিতা নানির মাথায় বাঁশের লাঠি দিয়ে আঘাত করে। তবে অভিযোগ উঠেছে, বিষয়টিকে ধামাচাপা দিতে রোববার রাত থেকে স্থানীয় ভাটা মালিক জামসেদ আলী খাঁর নেতৃত্বে আব্দুল আলিমসহ বেশ কয়েকজন মরিয়া হয়ে উঠেন। তারা অভিযুক্ত বাশারের পক্ষ নিয়ে তার বিরুদ্ধে যেন কোন মামলা না হয় সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

নিহতের ছোট ভাই তবিবুর রহমান বলেন, আমরা আপোস-মীমাংসার পক্ষে নেই। বাশারের বিরুদ্ধে মামলা করতে চাই। কিন্তু জামসেদ আলী আমাদেরকে মামলা করতে নিষেধ করেছেন।

ইউপি সদস্য হারুন অর রশীদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, শুনেছি বাশারের নামে ১৮ শতক জমি স্ত্রী রেক্সোনার নামে লিখে দেয়ার শর্তে আপোস-মীমাংসা হয়েছে।

তবে ভাটা মালিক জামসেদ আলী অভিযুক্ত বাশারের পক্ষ নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, তারা আমার প্রতিবেশি। ওরা দুই পরিবার বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমি সেখানে ছিলাম।

ওসি (দায়িত্বপ্রাপ্ত) পলাশ কুমার বিশ্বাস জানান, ঢাকা মেডিকেলে লাশের ময়না তদন্ত করার কথা। কিন্তু হয়েছে কি হয়নি তা আমাদের কেউ জানায়নি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন