হোম জাতীয় আওয়ামী লীগের বিবৃতি; ঐতিহ্যবাহী দল স্বমহিমায় ফিরে আসবে

আওয়ামী লীগের বিবৃতি; ঐতিহ্যবাহী দল স্বমহিমায় ফিরে আসবে

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 11 ভিউজ

জাতীয় ডেস্ক:

জুলাইজুড়ে ছাত্র জনতার বিপ্লবের পর ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে নেতাকর্মীরাও রয়েছেন পলাতক। নেই কোনো প্রকাশ্য উপস্থিতি। তবে হুটহাট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দলের পেজ থেকে দেয়া হচ্ছে নানা রকম বার্তা। এবার আবারও আওয়ামী লীগের অফিশিয়াল পেজ থেকে দেয়া হয়েছে এক দীর্ঘ বার্তা। সেখানে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়, কেউ যদি মনে করেন অত্যাচার, নির্যাতন করে আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করে দিবেন তাহলে তারা বোকার স্বর্গে বাস করেন।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড পেজ থেকে দেয়া হয়েছে একটি বিবৃতি। সেখানে দলের নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

দলটি বিবৃতিতে জানায়, আওয়ামী লীগের শিকড় অনেক গভীরে, এই দেশের জন্মের সাথে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক। দেশের ঐতিহ্যবাহী দল আওয়ামী লীগ এর স্বমহিমায় ফিরে আসবে, দেশের অসমাপ্ত উন্নয়নের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবে। বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে একটি উন্নত জাতি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করবে।

আওয়মী লীগের বিবৃতিতে বলা হয়, জানি আপনারা ভালো নেই। দেশের সার্বিক অবস্থা চারদিকে সবার মাঝে এক সংকটময় অরাজক পরিস্থিতি তৈরী করেছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং দলের সভানেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা যে কোন পরিস্থিতিতে আপনাদের পাশে আছেন এবং থাকবে ইনশাল্লাহ। আপনারা সবাই মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে দেশ ও দেশের জনগনের জন্য দোয়া করবেন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আপনারা সবই জানেন, সবই দেখেছেন। এখন হয়তো সবকিছু অনুধাবন করতে পারছেন, কি পরিস্থিতিতে দেশরত্ন শেখ হাসিনা দেশ ছেড়েছিলেন। ষড়যন্ত্রকারীরা আরও লাশ চেয়েছিলে। তিনি চাননি আর কোন বাবা-মায়ের বুক খালি হোক। তাই সময়ের প্রয়োজনে এই সাময়িক পদক্ষেপ নিয়েছেন। আপনারা দেখেছেন, মহামান্য আদালতের রায় শিক্ষার্থীদের সব দাবীর পক্ষেই গিয়েছে। দেশরত্ন শেখ হাসিনা ও আমাদের সরকার তাদের সকল দাবী মেনে নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচারের নিশ্চয়তা দিয়েছিল। নিহত সকল পরিবারের পাশে দাড়িয়েছিল, আহতদের বিনা খরচে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিল। তারপরও কেন এই অরাজকতা, এতো হত্যা, এতো ধ্বংসযজ্ঞ করা হলো? কারণ, এর পিছনে ছিল ক্ষমতা দখলের দেশীয় ও আন্তর্জাতিক এক ষড়যন্ত্র। আপনারা দেখেছেন ১৬ জুলাই থেকেই ছাত্রদের আন্দোলনকে হাইজ্যাক করে কিভাবে দেশের রাজনৈতিক অপশক্তি ও বিদেশী এজেন্টরা কিভাবে হত্যা ও অগ্নিসংযোগ শুরু করে। এমনকি ছাত্রদের উপর ৭.৬২ রাইফেল ব্যবহার করে গুলি চালিয়ে পরিস্থিতিকে অগ্নিগর্ভ করে তোলা হয়। কিভাবে ঢাকা শহরে অবস্থিত রাষ্ট্রীয় স্থাপনাগুলো ধ্বংস করা হয়েছে। কিভাবে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, বৌদ্ধ মঠে হামলা ও ভাংচুর চালানো হয়েছে। কত নিষ্ঠুরভাবে পুলিশ ও সাংবাদিক হত্যা এবং মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন, শিক্ষক, সাংস্কৃতিক কর্মীদের লাঞ্ছিত করা হয়েছে। পাঁচই আগষ্ট কিভাবে বাঙালি জাতির মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের সুতিকাগার, জাতীর পিতার স্মৃতি বিজড়িত বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর ধ্বংস করা হয়েছে।

এছাড়া অভিযোগ করে বলা হয়, বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্যতম নিদর্শন জাতীয় সংসদ ভবন ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। এছাড়া প্রধান বিচারপতির বাসভবন, নির্বাচন কমিশনসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরত্বপূর্ন ব্যাক্তিবর্গের সরকারি, বেসরকারি অফিস আদালত বাসভবন পোড়ানো ও লুটপাট করা হয়েছে। আপনারাই ভেবে দেখুন, এইসব সহিংসতা ও ধ্বংসযজ্ঞের সাথে কোটা আন্দোলনের কি সম্পর্ক ছিলো। যে পুলিশ বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে, পরিকল্পিতভাবে কিভাবে তাদেরকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে এবং ৪৫০টি থানা ও অস্ত্রাগার লুট করা হয়েছে। নিষ্ঠুরভাবে একজন অন্তঃসত্ত্বা মহিলা পুলিশ অফিসারকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। কতজন পুলিশকে হত্যা করা হয়েছে এই সংখ্যাও জাতির সামনে এখনো সরকার প্রকাশ করছে না। এরসবই ছিল ক্ষমতাদখলের একটি ষড়যন্ত্র। তখন সরকার আরও কঠোর হলে হয়তো আরও লাশ পড়তো, আরও অনেক বাবা-মায়ের বুক খালি হতো। তাই মানুষের জানমাল রক্ষায় দেশরত্ন শেখ হাসিনা এই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।

পাঁচই আগস্টের পর দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন করা হচ্ছে বলেও বিবৃতিতে অভিযোগ এনেছে আওয়ামী লীগ।
সেখানে সকল ‘হত্যাকাণ্ড, লুটতরাজ, ভাংচুর, আগুন সন্ত্রাস, নির্যাতন, চাঁদাবাজির’ সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করা হয়েছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন