নড়াইল অফিস:
নড়াইলের গোপালগঞ্জ সীমান্তবর্তী ডুমুরিয়া পশ্চিমপাড়া গ্রাম। এই গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ এখন গুলির আতঙ্কে বাড়িছাড়া। গত ১৪ জুন সন্ধ্যায় এলাকার সন্ত্রাসীদের হাতে গুলিবিদ্ধ হন বাচ্চু সর্দারের ছেলে তৌহিদুল সর্দার(৪৪) ও হাসমত শেখের ছেলে তুহিন শেখ(৩৮)। সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে আহত তুহিন শেখের দুই পা পঙ্গু হয়ে যায়। তাদের গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা করে পা থেকে গুলি বের করে। এসময় সন্ত্রাসীরা ৮টি বাড়িঘর ভাংচুর করে।
এ ঘটনায় ১৭ জুন তৈয়েবুর রহমান শেখ নড়াগাতি থানায় সন্ত্রাসী ৬ জন সহ ৪৫ জনের নামে মামলা দায়ের করে। ঘটনার পরে পুলিশ পার্শ্ববর্তী গোপালগঞ্জ থেকে সন্ত্রাসী ৬ জনকে আটক করে ঐ মামলায় জেল হাজতে প্রেরন করে।
এলাকাবাসী ও বিভিন্ন সূত্রে খবর পেয়ে জানা গেছে,গ্রেফতার হওয়া আহমেদ বিশ্বাস,শামীম বিশ্বাস,ইমন বিশ্বাস,রুবেল বিশ্বাস,মুকুল বিশ্বাস ও সাগর বিশ্বাস এরা প্রত্যেকেই প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে চলাফেরা করে। এই অ লের পার্শবর্তী গোপালগঞ্জ সদর,বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ,খুলনার তেরখাদা খুবই কাছাকাছি হওয়ায় সন্ত্রাসীরা ঐ সব এলাকা পালিয়ে যায়। পুলিশ তাদের খোজ না পেলেও এর আগে অস্ত্রসহ র্যাবের হাতে আটক হয় সন্ত্রাসী আহমেদ বিশ্বাস,নানা ফাক দিয়ে সে জামিনে বের হয়ে আসে। এরপর প্রতিনিয়ত বিভিন্ন এলাকায় তারা অস্ত্রের কারবার চালিয়ে গেলেও পুলিশ তাদের নাগাল পায়নি।
ভুক্তভোগী আনিসুর রহমান শেখ জানান,১১ বছর আগে মামা মুনসুর বিশ্বাস এর কাছ থেকে ৪৬ শতাংশ জমি ক্রয় করেন তিনি। এই জমি রেজিষ্ট্রি করার চাপ দেয়ায় দীর্ঘদিন ধরে শত্রুতা চলছিলো। ২০২৩ সালে জমি চাষ করতে গেলে মামাতো ভাই রুবেল বিশ্বাস জমি থেকে অস্ত্রের মুখে তাদের তাড়িয়ে দেয়। সেই থেকে শত্রুতা চরমে রয়েছে।
সোমবার(২৪জুন) সকাল ১১ টায় ডুমুরিয়া পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে এলাকার নিরীহ লোকেরা। সন্ত্রাসীদের ভয়ে ব্যানার পর্যন্ত বানাতে পারেনি ভুক্তভোগীরা। এসময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গৃহবধু মৌসুমী শেখ। কথা বলেন গুলিবিদ্ধ তৌহিদ সর্দার,তুহিন শেখ, তৈয়েবুর রহমান, বাচ্চু সর্দার, ইসহাক মোল্যা প্রমুখ।
গৃহবধু মৌসুমী শেখ বলেন,সন্ত্রাসীরা আটক হলেও তাদের অন্যরা নানাভাবে আমাদের ছেলে-মেয়েদের হুমকী দিচ্ছে। ভয়ে আমরা ছেলেদের স্কুলে পাঠাতে পারছি না। তারা বের হয়ে আবার আমাদের উপর চড়াও হবে এই আতঙ্কে আছি।
তৈয়েবুর রহমান বলেন,এই সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে হাফপ্যান্ট পরে অস্ত্র নিয়ে মাদকের কারবার করে,জমি দখল করে কথা বলতে গেলে অস্ত্রের ভয় দেখায়। পুলিশ আমাদের একল শেল্টার দিচ্ছে কিন্তু তারা বের হয়ে আসলে আমাদের পালিয়ে যেতে হবে।
নড়াগাতি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,এলাকার আতঙ্ক নিরসনে আমরা উভয় পক্ষের সাথে কথা বলেছি। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশের তৎপরতা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন,এটাতো উদ্ধার করতেই হবে এটা নিয়ে কোন আপস চলবে না,এটা রাষ্ট্রবিরোধী কাজ।