হোম ঢাকাশরীয়তপুর ক্ষমা চাওয়ার পরেও কেন ভিডিও ভাইরাল..!

ক্ষমা চাওয়ার পরেও কেন ভিডিও ভাইরাল..!

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 76 ভিউজ

অনলাইন ডেস্ক:

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের ঘটনা। চিকিৎসকরা লাঞ্ছিত হলেন আন্তঃজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক নেতা এলিম পাহাড়ের হাতে। এরপর তিনি ক্ষমা চাওয়ায় বিষয়টি মিটে যায়। কিন্তু ক্ষমা চাওয়ার সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় তৈরি হয়েছে দ্বিধাদন্দ্বের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রোববার (৫ মে) দুপুরে একটি মারামারির ঘটনায় মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে আন্তঃজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি এলিম পাহাড়ের ছেলে অভি পাহাড় (১৫)। খবর পেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে হাসপাতালে ছুটে আসেন এলিম পাহাড় ও তার লোকজন। এসময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্ব পালন করছিলেন চিকিৎসক লিমিয়া সাদিয়া। আর তার পাশেই ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তৈরি করছিলেন ডাক্তার শাহরিয়ার ইয়াছিন।

এসময় এলিম পাহাড় তার ছেলেকে দ্রুত চিকিৎসা না দেয়ার অভিযোগ তুলে দায়িত্বরত চিকিৎসক লিমিয়া সাদিনাকে গালমন্দ শুরু করলে চিকিৎসক শাহরিয়ার ইয়াছিন প্রতিবাদ করেন। আর তখনই এলিম পাহাড় ও তার লোকজন চিকিৎসক শাহরিয়ার ইয়াছিনের গলা চেপে ধরে তাকে চর থাপ্পড় দেন। এসময় চিৎকার চেঁচামেচির শব্দে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হাবিবুর রহমান ছুটে এলে তাকেও লাঞ্ছিত করা হয় বলে অভিযোগ এলিম পাহাড়ের বিরুদ্ধে।

বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার আগেই পালিয়ে যান এলিম পাহাড় ও তার লোকজন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী চিকিৎসক শাহরিয়ার ইয়াছিন থানায় লিখিত অভিযোগ করলে অভিযান চালিয়ে এলিম পাহাড়কে আটক করে পুলিশ। পরে সন্ধ্যায় বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষের হস্তক্ষেপে ভুক্তভোগী চিকিৎসকদের কাছে এলিম পাহাড় ক্ষমা চাওয়ার পর বিরোধের অবসান ঘটে। এরইমধ্যে এ ঘটনার ১ মিনিট ৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ভুক্তভোগী চিকিৎসক শাহরিয়ার ইয়াছিন ও হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হাবিবুর রহমান ছাড়াও অন্য চিকিৎসকরা বসে আছেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন আহম্মেদ। সেখানে চিকিৎসকদের পা ধরে ক্ষমা চাচ্ছেন এলিম পাহাড়।

জানতে চাইলে সদর হাসপাতালের চিকিৎসক শাহরিয়ার ইয়াছিন মোবাইল ফোনে বলেন, ‘হাসপাতালে বসে আমার সঙ্গে যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছিল সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমি থানায় একটি এজাহার দাখিল করলে পুলিশ এলিম পাহাড়কে আটক করে। পরে মানবিক দিক বিবেচনায়, এমপি স্যার শুনেও বললেন যে, ওনার ছেলেও যেহেতু অসুস্থ; তাই মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে অভিযোগটি প্রত্যাহার করে নিতে। আমি তাই নিয়েছি।’

এই ঘটনায় স্থানীয় কিংবা অন্য কোনও চাপ ছিল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের ওপর কোনও চাপ ছিল না। এমপি স্যার বিষয়টি মিনিমাইজ করার কথা বললেন। তাছাড়া আমাদের হাসপাতালে এমন অপ্রত্যাশিত ঘটনা আর ঘটবে না বলে তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।’

জানতে চাইলে আন্তঃজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি এলিম পাহাড় বলেন, ‘আমার সঙ্গে চিকিৎসকদের মনমালিন্য হয়েছিল। পরে এমপি সাব আমাদের দুপক্ষের সবাইকে ডেকে মিলাইয়া দিছে।’

ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে শরীয়তপুর বিএমএ সভাপতি ডা, মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘যেহেতু বিষয়টি মীমাংসা হয়ে গেছে, সেহেতু ভিডিওটি ভাইরাল করা একেবারেই ঠিক হয়নি। বিষয়টি নিয়ে আমি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে কী করা যায় দেখছি।’

এ ব্যাপারে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, এ ঘটনায় ডাক্তার শাহরিয়ার ইয়াছিন একটি লিখিত অভিযোগ করলে এলিম পাহাড়কে আটক করা হয়। পরে অভিযোগটি তুলে নিলে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন