হোম অর্থ ও বাণিজ্য জ্বালানি সংকটের বৃত্তে আটকা বিদ্যুৎ উৎপাদন!

জ্বালানি সংকটের বৃত্তে আটকা বিদ্যুৎ উৎপাদন!

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 35 ভিউজ

বাণিজ্য ডেস্ক:

ভরা গ্রীষ্মে সরবরাহ বাড়ানোর সিদ্ধান্তের মধ্যেও প্রাকৃতিক গ্যাসের অভাবে হোঁচট খাচ্ছে চাহিদামাফিক বিদ্যুৎ উৎপাদন। সর্বোচ্চ ক্ষমতায় প্ল্যান্ট চালানোর নির্দেশনা থাকলেও বাস্তবে তার মিল নেই। সংশ্লিষ্ট প্রতিমন্ত্রীর দাবি, চাহিদামতো গ্যাস পেলে সর্বোচ্চ ১৮ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। পাশাপাশি চরম গরমের এই মৌসুমে প্রাথমিক জ্বালানি কিনতে অর্থছাড়ের বিষয়েও শঙ্কা খোদ মন্ত্রণালয়ের। এদিকে, সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনেও লোডশেডিংয়ের ভোগান্তিতে নাকাল প্রান্তিক জনপদের মানুষ।

বৈশাখের শুরু থেকেই এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় রুদ্র রূপে প্রকৃতি। সূর্যের প্রখর কিরণে উত্তপ্ত ধরণি, বাতাসে জলীয়বাষ্পের আধিক্য বাড়াচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত গরমের অস্বস্তি। দীর্ঘ থেকে দীর্ঘায়িত হচ্ছে আবহাওয়া বিভাগের হিট অ্যালার্ট।

তীব্র তাপদাহের এই সময়ে, পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মানুষের বিদ্যুৎ চাহিদা। খেটে খাওয়া মানুষ অল্পবিস্তর সুযোগে বৈদ্যুতিক পাখায় কিছুটা শীতল হতে চাইলেও তাদের নাজেহাল অবস্থা অপরিকল্পিত লোডশেডিংয়ে।

প্রশ্ন হলো, দেশে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংখ্যা প্রায় দেড়শ। উৎপাদন সক্ষমতাও ২৬ হাজার মেগাওয়াটের ঘর ছাড়িয়েছে। তবু কেন লোডশেডিংয়ের ভোগান্তি? এর উত্তর কিছুটা পাওয়া গেল দেশের প্রথম পাওয়ার হাব হিসেবে স্বীকৃত আশুগঞ্জের কেন্দ্রগুলোতে। এখানে ছোট-বড় মিলিয়ে সরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনের ইউনিট ছয়টি। কিন্তু সবগুলো চলছে না পর্যাপ্ত গ্যাসের অভাবে।

আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী সাইদ একরাম উল্লা বলেন, আশুগঞ্জে সরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনের ইউনিট ছয়টি। যার সবগুলো চলমান। তবে গ্যাস সংকটে পূর্ণ সক্ষমতায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না।

একে তো সংকট। তার ওপর খাতা-কলমে বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানো হলেও চাহিদা পূরণ হচ্ছে না পুরোটুকু। চলতি মাসে সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ২৩৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। এই মৌসুমে ১৮ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত চাহিদার প্রক্ষেপণ সরকারের। শঙ্কা আছে প্রাথমিক জ্বালানি কেনার প্রয়োজনীয় অর্থের সংকুলান নিয়েও।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, চাহিদামতো গ্যাস পেলে সর্বোচ্চ ১৮ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। তবে পর্যাপ্ত গ্যাসের অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এ সমস্যাও শিগগিরই কেটে যাবে।

সর্বোচ্চ চাহিদার এই সময়ে, বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রতিদিন গ্যাসের চাহিদা কমবেশি ২৩০ কোটি ঘনফুট হলেও সরবরাহ বাড়ানোর সিদ্ধান্তের পরও ১৩৫ কোটি ঘনফুটের বেশি গ্যাস পাচ্ছে না পাওয়ার প্ল্যান্টগুলো।

এতে সঞ্চালন এবং উৎপাদন মিলিয়ে অন্তত দেড় থেকে দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের লোডশেডিং নিয়েই পার হচ্ছে দিন।

প্রান্তিক পর্যায়ে বিদ্যুৎ শতভাগ ঘোষণা করা হলেও শুধুমাত্র প্রাথমিক জ্বালানির অভাবেই সবগুলো ইউনিট চালানো সম্ভব হচ্ছে না আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশনে। এমন সংকটগুলোর সমাধান না হলে শতভাগ বিদ্যুতের সুফল মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছানো দুষ্কর হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন