আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের আঙিনায় তিনটি পৃথক গণকবর থেকে এখন পর্যন্ত ৩৯২টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এসব লাশের মধ্যে অনেকেকই জীবন্ত কবর দেয়ার চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে গাজার জরুরি উদ্ধারকারী দল সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি।
চলতি সপ্তাহে খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের ভেতরে তিন তিনটা গণকবর আবিষ্কার ফিলিস্তিনিদের মধ্যে একই সাথে ক্ষোভ ও আতঙ্কের জন্ম দিয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরাইল যে গণহত্যা চালাচ্ছে, একের পর এক গণকবরের অনুসন্ধান তার স্পষ্ট প্রমাণ।
জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এর তীব্র নিন্দা ও সেই সঙ্গে ‘স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য’ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। আল জাজিরার প্রতিবেদন মতে, গত ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি নাসের হাসপাতাল ঘিরে ফেলে অভিযান শুরু করে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। যা প্রায় দুই মাস ধরে চলে।
চলতি মাসের (৭ এপ্রিল) শুরুর দিকে ইসরাইলি বাহিনী হাসপাতাল ত্যাগ করে। গত রোববার থেকে (২১ এপ্রিল) হাসপাতালের আঙিনায় প্রথম গণকবর খুঁজে পায় গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি। এরপর সেখানে শুরু হয় ব্যাপক খনন কাজ।
খননের ফলে পৃথক পৃথক তিনটি গণকবর পাওয়া যায়। এগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে থাকে একের পর এক লাশ। এখন পর্যন্ত মোট ৩৯২টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
সিভিল ডিফেন্স এজেন্সির মতে, বেশিরভাগ লাশের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। তার কারণ, লাশগুলো হয় পঁচে গেছে অথবা বিকৃত করা হয়েছে।
সিভিল ডিফেন্সের সদস্য মোহাম্মদ মুঘাইয়ের বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) জানান, কিছু কিছু লাশে নির্যাতনের আলামত পাওয়া গেছে। এবং অন্তত ২০ জনকে জীবিত কবর দেয়া হয়েছিল বলে মনে হচ্ছে।
মোহাম্মদ মুঘাইর বলেন, ১০টি মরদেহের হাত বাধা ছিল। অন্যদের শরীরে মেডিকেল টিউব সংযুক্ত ছিল। বিষয়টি নির্দেশ করছে তাদের খুব সম্ভবত জীবিত অবস্থায় কবর দেয়া হয়েছে। তাদের মরদেহ ফরেনসিক পরীক্ষা করলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।
কয়েকটি ভিডিওতে দেখা গেছে রাফাহ থেকে ৫ কিলোমিটার দূরের খান ইউনিসে সারি সারি তাঁবু স্থাপন করা হয়েছে। স্যাটেলাইট প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সার টেকনোলোজিসের ছবিতে দেখা গেছে, যেখানে তাঁবুগুলো স্থাপন করা হয়েছে সেই জায়গাটি কয়েক সপ্তাহ আগেও খালি ছিল।