হোম অন্যান্যসারাদেশ খুলনায় এক সপ্তাহে ৭ খুন !

খুলনায় এক সপ্তাহে ৭ খুন !

কর্তৃক
০ মন্তব্য 109 ভিউজ

খুলনা অফিস :
খুলনায় চলতি সপ্তাহে সাতটি হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে মহানগরীতে ৬টি এবং রূপসা উপজেলায় ১টি। মহানগরীর মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গোলাগুলি ও পিটিয়ে একই রাতে চার জন খুন হয়। এসব হত্যাকান্ডে দেশীয় অস্ত্র, গুলি ব্যবহার করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে পুলিশের ভ‚মিকা নিয়ে সাধারণ জনমণে প্রশ্ন উঠেছে। তবে আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন মহল।
অনুসন্ধানে জানা যায়, অস্ত্র-গুলি, ধারালো ছুরি দিয়ে বেশিরভাগ হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এসব হত্যার শিকার হয়েছেন সাধারণ মানুষ, শ্রমিক ও ছাত্র।আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বাকবিতন্ড, মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করাও হত্যার পিছনের কারণ। তাছাড়া অজ্ঞাত যুবকের লাশ মিললেও তার কোন পরিচয়ও শনাক্ত করা যায়নি। সব মিলিয়ে নগরীতে অল্প সময়ের ব্যবধানে ৬টি হত্যাকান্ডে উদ্বিগ্ন সাধারণ নাগরিকরা।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) সূত্র থেকে জানা যায়, গত ১৪ জুলাই দিবাগত রাতে নগরীর দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জামাল (৩৪) নামে এক শ্রমিককে খুন করা হয়। দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বলেন, এই হত্যা মামলায় ২জনকে আটক করা হয়েছে।
এরপর গত ১৬ জুলাই নগরীর খানজাহান আলী থানার মশিয়ালি এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গোলাগুলির ঘটনায় ৩জন এবং প্রতিপক্ষের লাঠিপেটায় ১জন নিহত হয়। গুলি, ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে এই চারটি খুন সংঘটিত হয়। এলাকাবাসী জানায়, দীর্ঘদিনের ক্ষোভ থেকেই এই ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের সাথে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জাফরিন, তার ভাই সাবেক আ’লীগ নেতা জাকারিয়া এবং মিল্টনের সুসম্পর্ক থাকায় দীর্ঘদিন তারা দাপট দেখিয়েছে। তবে নির্যাতনের শেষ সীমানায় আসায় এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়লেই দুই গ্রুপের সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। ‘রাম রাজত্ব’ কায়েম করতে গুলি ছোড়েন তারা। এসময় গিলাতলার মশিয়ালী এলাকার মোঃ নজরুল ইসলাম (৬০), একই এলাকার গোলাম রসুল (৩০) ঘটনাস্থলে নিহত হন। পরবর্তীতে রাতে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় কলেজ ছাত্র মোঃ সাইফুল ইসলাম (২৭) খুলনা মেডিকেল কলেজে মারা যায়। এদিকে ঐদিন দিবাগত রাত ২টার দিকে হামলাকারী পক্ষের জেহাদ শেখ (৩৪) কে পিটিয়ে হত্যা করে বিক্ষুব্ধরা। এ ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত চারজনকে আটক করেছেন। এরা হলেন জাফরিন, জাহাঙ্গীর, রহিম আকুিঞ্জ এবং আরমান।
এদিকে গত ১৮ জুলাই জেলার রূপসার নৈহাটি মোড়ে সুমন শেখ (২৬) নামে এক কলেজ ছাত্রকে হত্যা করা হয়েছে। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সুমনকে হত্যা করা হয় বলে স্থানীয় সূত্র জানায়। এ ঘটনায় পুলিশ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত মাহমুদুল্লাহ নামে একজনকে আটক করে। সর্বশেষ গত ১৯ জুলাই নগরীর হরিণটানা এলাকা থেকে ৩০ বছরের এক যুবকের গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। হরিণটানা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম জানান, কৈয়া বাজারের আগে জয়খালী ব্রীজ সংলগ্ন একটি মাছের ঘেরের পাশে গলিত লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। তার পরিচয় জানা যায়নি।
এ ব্যাপারে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (মিডিয়া) কানাই লাল সরকার বলেন, নগরীতে যে সকল হত্যার ঘটনা ঘটেছে তার কারণ চিহিৃত করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত অনেক আসামীদেরও আটক করা হয়েছে। যারা আটক হয়নি তাদের আটক করতে অভিযান চলছে। পাশাপাশি অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টাও চলছে। তিনি বলেন, নগরীতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা আছে। আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন