আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ভারতের আসন্ন লোকসভা নির্বাচন সামনে করে নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করেছে দেশটির বিরোধী রাজনৈতিক দল ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস। শুক্রবার (৫ এপ্রিল) রাজধানী নয়াদিল্লিতে দলের সদরদফতরে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ইশতেহার প্রকাশ করা হয়।
এ সময় কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, দলের সাবেক দুই সভাপতি সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধী উপস্থিত ছিলেন। নির্বাচনী ইশতেহারকে ‘নয়া পত্র’ নামে অভিহিত করেছে কংগ্রেস।
এতে তিন ‘ডাব্লিউ’ এর ওপর জোর দেয়া হয়েছে: ওয়ার্ক, ওয়েলফেয়ার ও ওয়েলথ। পাঁচটি স্তম্ভের মাধ্যমে ন্যায়বিচারের প্রতি প্রতিশ্রুতি জোরদার করা হয়েছে। স্তম্ভগুলো হলো ইয়ুথ জাস্টিস, জেন্ডার জাস্টিস, ফার্মার্স জাস্টিস, ওয়ার্কার্স জাস্টিস ও ইকুইটি জাস্টিস।
নির্বাচনী ইশতেহারে কংগ্রেস যেসব বিষয় জানিয়েছে সেগুলো হলো: এক. প্রত্যেক নাগরিকের মতো সংখ্যালঘুদেরও পোশাক, খাদ্য, ভাষা ও ব্যক্তিগত আইন পছন্দের স্বাধীনতা থাকবে। ব্যক্তিগত আইনের সংস্কারকে উৎসাহিত করা হবে। সংশ্লিষ্ট সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণ ও সম্মতিতে এ ধরনের সংস্কার করা হবে।
দুই. সরকারি পরীক্ষা এবং সরকারি পদগুলোর আবেদন ফি বাতিল করা হবে। ব্যাপক বেকারত্বের কারণে, ত্রাণের এককালীন ব্যবস্থা হিসেবে সব শিক্ষার্থী শিক্ষাঋণের ক্ষেত্রে ১৫ মার্চ ২০২৪ তারিখে অপরিশোধিত সুদসহ প্রাপ্য পরিমাণটি লিখে দেয়া হবে এবং ব্যাংকগুলোকে সরকার ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।
তিন. এলজিবিটিকিউআইএ+ সম্প্রদায়ের অন্তর্গত দম্পতিদের মধ্যে নাগরিক ইউনিয়নকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য একটি আইন আনা হবে।
চার. জাতি ও উপ-বর্ণ এবং তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা গণনা করার জন্য দেশব্যাপী আর্থ-সামাজিক ও বর্ণ জনগণনা পরিচালনা করবে এবং এসসি, এসটি এবং ওবিসিদের জন্য সংরক্ষণের উপর ৫০ শতাংশ ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানোর জন্য একটি সংবিধান সংশোধনী পাস করা হবে।
পাঁচ. জাতীয় সামাজিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় প্রবীণ নাগরিক, বিধবা এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পেনশনে কেন্দ্রীয় সরকারের অবদান মাসিক ২০০-৫০০ টাকা। কংগ্রেস এই পরিমাণ বাড়িয়ে মাসে ১০০০ টাকা করা হবে।
ছয়. গরিব মেয়েদের বছরে ১ লক্ষ টাকা দেয়া হবে। পাশাপাশি দেশে সংরক্ষণের সীমা ৫০ শতাংশ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
ইশতেহারের ‘বৈদিশিক নীতি’ অংশে বলা হয়েছে, ভারতের নিকটতম প্রতিবেশীদের প্রতি আরও বেশি মনোযোগ দেবে কংগ্রেস। এতে বলা হয়েছে, আমরা নেপাল ও ভুটানের সাথে আমাদের বিশেষ সম্পর্কের প্রাধান্য পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করব এবং পারস্পরিক সুবিধার জন্য তাদের শক্তিশালী করব।
কংগ্রেসের ইশতেহারে বাংলাদেশের সাথে ভারতের সম্পর্কও উঠে এসেছে। বলা হয়েছে, আমরা দক্ষিণ এশিয়ার দুই সর্বাধিক জনবহুল দেশ ভারত ও প্রতিবেশী বাংলাদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করব।
শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাপারে বলা হয়েছে, আমরা দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করতে শ্রীলঙ্কার সাথে কাজ করব। আমরা শ্রীলঙ্কাকে রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানে (বিশেষ করে তামিলদের) সাথে সহায়তা করব।
মালদ্বীপ, মিয়ানমার ও পাকিস্তানের সাথে সম্পর্কের ব্যাপারে ইশতেহারে বলা হয়েছে, আমরা মালদ্বীপের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করব এবং মিয়ানমারের জনগণের রাজনৈতিক ও মানবাধিকার রক্ষায় দেশটির সঙ্গে কাজ করব। পাকিস্তানের সাথে সম্পৃক্ততা নির্ভর করবে মূলত আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের অবসান ঘটাতে দেশটির সদিচ্ছা ও সক্ষমতার ওপর।