হোম রাজনীতি বাংলাদেশে এসে সব পক্ষকে একই কথা, মার্কিনিদের মনে কী আছে?

বাংলাদেশে এসে সব পক্ষকে একই কথা, মার্কিনিদের মনে কী আছে?

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 83 ভিউজ

রাজনীতি ডেস্ক:

সরকার কিংবা সংসদের বাইরে থাকা রাজনৈতিক দল সবাইকে সহযোগিতার আশ্বাসে ভাসিয়ে গেলেন মার্কিন প্রতিনিধিরা। প্রশ্ন উঠেছে তাদের এমন আচরণ ‘দুই ধরনের চরিত্র’ কি না। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্যবসায়িক স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে এটি যুক্তরাষ্ট্রের কৌশল। চাপ সৃষ্টির জন্য বিরোধী পক্ষের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখে তারা। তবে সহযোগিতা করবে সরকারকে।

তিন দিনের সফর শেষে সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঢাকা ছেড়েছে নির্বাচনের পর প্রথম বাংলাদেশে আসা যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল।

প্রতিনিধি দলে ছিলেন- মার্কিন রাষ্ট্রপতির বিশেষ সহকারী ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলর (এনএসসি) ডিরেক্টর ইলিন লাউবাকের, ইউএসএআইডির এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর মাইকেল শিফার এবং ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আক্তার।

এর আগে দুদিনে তারা সাক্ষাৎ করেছেন বিএনপি, আওয়ামী লীগ, নির্ধারিত সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, শ্রমিক নেতা কল্পনা আক্তার এবং পররাষ্ট্র সচিব ও মন্ত্রীদের সঙ্গে।

মার্কিন উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তারের হাতে নির্বাচন নিয়ে সমস্ত অভিযোগ এবং কারাবন্দি কর্মীদের তালিকা তুলে দেন বিএনপি নেতারা। পরে বিবৃতিতে মার্কিন দূতাবাস জানায়, সামনের দিনে মার্কিন সরকার বিএনপির সঙ্গে সম্পৃক্ততা চলমান রাখবে।

আলোচিত শ্রমিক নেতা কল্পনা আক্তারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তারা জানান, যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিক অধিকার উন্নয়নে নিয়োজিত থাকবে।

নিজেদের নির্ধারিত সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষেও সহযোগিতা অব্যাহত রাখার কথা জানায় মার্কিন দূতাবাস।

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠকেও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করতে নানা বিষয়ে আলোচনা করে প্রতিনিধি দল। এরপরই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে তারা। প্রতিনিধি দলের প্রধান জানান, সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করতে চান তারা।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের বাসভবনে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে আগামী ৫০ বছর এবং এর পরবর্তী সময়েও বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক বিনিয়োগ বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্র উন্মুখ বলে বিবৃতি দেয় দেশটি।

অর্থাৎ সরকার, বিরোধী রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ কিংবা শ্রমিক নেতা। যার সঙ্গে যখন দেখা হয়েছে সবাইকেই একই আশ্বাস দিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। প্রশ্ন ওঠে মার্কিন আচরণ ‘দুই ধরনের চরিত্র’ কি না। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্যবসায়িক স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যেই এটি যুক্তরাষ্ট্রের কৌশল। সহযোগিতা রাখবে সরকারের সঙ্গেই তবে চাপ সৃষ্টির জন্য বিরোধী পক্ষের সঙ্গেও সুসম্পর্ক বজায় রাখে তারা।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কোনো দেশের সরকারের সঙ্গে কাজ করবে। আবার সেই দেশের বিরোধী দল কিংবা নাগরিক সমাজের যে অংশটা অনেক বেশি ক্রিটিক্যাল তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখবে। এটা তাদের একটা কৌশল। যদিও তারা বলছে এগুলো মানবাধিকার রক্ষা সহ বিভিন্ন কারণে করে।

‘যুক্তরাষ্ট্র যখন এসব করে বুঝতে হবে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জায়গা থেকে কূটনীতিক স্বার্থ রয়েছে। এক ধরনের দর কষাকষির জায়গা বাড়ানোর জন্যই তারা এমনটা করে, যোগ করেন দেলোয়ার।

বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশেই এমন নজির যুক্তরাষ্ট্র আগেও দেখিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন এই আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন