খুলনা অফিস :
খুলনার খানজাহান আলী থানার মশিয়ালী এলাকায় জাকারিয়া বাহিনী ও ফকির বংশের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধের জের ধরে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে ২জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় কমপক্ষে আরো ১৫ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) রাত সোয়া ৯ টার দিকে স্থানীয় মশিয়ালী শামসুল উলুম মাদরাসা সংলগ্ন হাড়াতলা নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন,নজরুল ইসলাম (৪৫) ও গোলাম রসুল (৩৫)। এদেরকে ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষনা করেন।নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফুলতলা থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম।
এদিকে, এ ঘটনার প্রতিবাদে হামলাকারী তিন সহোদর শেখ জাকারিয়া হাসান, শেখ জাফরিন হাসান ও শেখ মিল্টন হাসানের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ব্যাপক ভাংচুর চালায় বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী।
ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তানিয়া সুলতানা জানান,গুলিবিদ্ধ নজরুল ইসলাম ও গোলাম রসুলকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। এছাড়া, প্রাথমিক চিকিৎসার পর গুলিবিদ্ধ ৬জনকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আহতরা হলো সাইফুল ইসলাম (৩৫), আফসার আলী (৭০), শামিম (৩৭), আজাদ (৩০), রানা (২৫), আল আমিন গাজী (৪০), সুজন শেখ (২৫), আকতার শেখ, রবি, খলিল, রানা সহ ১৫/১৬ জন।
স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, মশিয়ালীর ফকির গ্রুপের মুজিবর রহমান বৃহস্পতিবার বিকেলে স্থানীয় সিএমবি এলাকায় আখ ক্ষেতে কাজ করছিল। এ সময় প্রতিপক্ষ শেখ জাকারিয়া হাসান পার্শ্ববর্তী সরকারি জমিতে অবৈধভাবে গড়ে তোলা তার কথিত অফিসে মুজিবরকে ডেকে এনে কাছে কয়েক রাউন্ড গুলি ধরিয়ে দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। এ খবর ফকির গ্রæপের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে তারা সংঘবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ করে। এভাবে দু’পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এক পর্যায়ে রাত সোয়া ৯টার দিকে ফকির গ্রুপের লোকজন জড়ো হয়ে আবারো প্রতিবাদ জানালে শেখ জাকারিয়া, জাফরিণ ও মিল্টন- এই তিন সহোদর অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর ঝাপিয়ে পড়ে নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই গোলাম রসুল ও নজরুল ইসলাম মারা যায়। পরবর্তীতে ফকির গ্রুপের লোকজন স্থানীয় মসজিদের মাইকে তাদের ওপর হামলার জন্য বাঁচানোর আকুতি জানিয়ে ঘোষণা দিলে এলাকার লোকজন এসে হামলাকারীদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে।
খবর পেয়ে কেএমপি’র ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (উত্তর) সোনালী সেন ও সহকারী পুলিশ কমিশনার (দৌলতপুর জোন) বায়জিদ হোসেনসহ পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে খানজাহান আলী থানার ওসি এস.এম শফিকুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
জানা গেছে, হামলায় অভিযুক্ত শেখ জাকারিয়া হাসান খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-প্রচার সম্পাদক এবং তার ভাই শেখ জাফরিন হাসান খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের বহিস্কৃত সহ-সভাপতি।
এদিকে স্থানীয় অপর একটি সুত্র জানায়, মশিয়ালীতে জাফরিন, জাকারিয়া ও মিল্টন তিন ভাইয়ের একটি বাহিনী রয়েছে। তাদের সাথে এলাকার ফকির গংদের দীর্ঘদিনের শত্রুতা রয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে ফকির গংদের সাথে মিল্টনের মেয়েলি একটি ব্যাপার নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়।