হোম অন্যান্যশিক্ষা শিশুদের সাঁতার শিখাতে ৮ হাজার সুইমিংপুল সেন্টার করা হবে: রিমি

শিশুদের সাঁতার শিখাতে ৮ হাজার সুইমিংপুল সেন্টার করা হবে: রিমি

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 117 ভিউজ

শিক্ষা ডেস্ক:

পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু হার হ্রাস ও তাদের সাঁতার শেখাতে দেশে ৮ হাজার সুইমিং পুল সেন্টার করার কথা জানিয়ে নারী ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি বলেছেন, বিদ্যালয় বা বাড়িতে পাঠ্যপুস্তক পড়ার পাশাপাশি অন্যান্য বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে তাদের মাঝে।

বুধবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিআইসিসি মিলনায়তনের মিডিয়া সেন্টারে আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস ২০২৪ উপলক্ষে “টেকসই শান্তির জন্য শিক্ষা” শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী রিমি বলেন, শিশুদের সাঁতার শিখাতে সুইমিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত আজই একটি ফাইলে স্বাক্ষর করেছি। ৮ হাজার সুইমিং সেন্টারে ৩ লাখ ৬০ হাজার শিশু সাঁতার শিখতে পারবে। এতে করে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার কমে আসবে। একজন শিশু পড়াশোনায় যতই ভালো হোক না কেন স্কাউটিং এর কোনো বিকল্প নেই। আর স্কাউটিং এ পারদর্শী হতে হলে বাধ্যতামূলক সাঁতার শিখতে হবে। শিশুরা যত দ্রুত সাঁতার শিখবে পানিতে তত বেশি নিরাপদ থাকবে। এছাড়া আমাদের খাল-বিল-নদীর এ দেশে সাঁতার জানা একটি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা।

এছাড়া দেশে বাল্যবিবাহের হার নিয়ে রিমি বলেন, আমাদের অনেকের ধারনা বাল্যবিবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু গ্রামঞ্চলে এখনও এটি প্রচলিত আছে। দেখা যায়, ছেলের বয়স ১৭, মেয়ের বয়স ১৪। এরা আবার তাদের বয়স ২০ বছর হতে না হতেই সন্তান জন্ম দিচ্ছে। বাবা-মা যেখানে শিশু, সেখানে সন্তানকে উপযুক্ত শিক্ষা তারা কীভাবে দেবেন।

শিশুদের শিক্ষা নিয়ে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বলেন, একসময় আমাদের দেশে লাইব্রেরি কালচার ছিল। বিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েরা বই নিয়ে পড়ত। বই ফেরত দেয়ার সময় কী পড়ল তা নিয়ে লাইব্রেরিয়ান জিজ্ঞাসা করতেন। এখন প্রতিটি বিদ্যালয়ে লাইব্রেরি আছে ঠিকই, কিন্তু লাইব্রেরি কালচার উঠে গেছে।

নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সময়ে পাঠ্যপুস্তকের বাইরে বই পড়ার ওপর জোর দেয়া হতো। তখন বিদ্যালয়গুলোতে একটি লাইব্রেরি কেন্দ্রিক সংস্কৃতি গড়ে উঠেছিল। লাইব্রেরিয়ান ছিলেন শিক্ষকের মতো। তিনি বই ফেরত দেয়ার সময় জিজ্ঞাসা করতেন এই বই পড়ে কী শিখেছি। এই যে বই পড়ার একটি দায়বদ্ধতা ছিল এটি গুরুত্বপূর্ণ। এখন লাইব্রেরিয়ান বা শিক্ষার্থী তাদের ভেতর থেকে এই সংস্কৃতির চলটাই উঠে গেছে।

সিমিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের লাইব্রেরির কালচারে জোর দিতে হবে। পাঠ্যপুস্তকের বই পড়তে কারও ভালো লাগে না৷ পৃথিবীর যে কোনো মানুষকে জিজ্ঞাসা করলেই সে বলবে তার নিজের পাঠ্যপুস্তকের বই পড়তে ভালো লাগে না৷ পাঠ্যপুস্তকের বাহিরের বই ভালো লাগে। পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি মানসিক বিকাশের জন্য বাহিরের বই পড়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্কুলগুলোতে লাইব্রেরি বাধ্যতামূলক থাকতে হবে। পাঠ্যপুস্তকের বাহিরে অন্যান্য বই রাখতে হবে। আমি অনেকগুলো স্কুলে লাইব্রেরি বাধ্যতামূলক করেছি। কিছুদিন পর অনেক শিক্ষার্থী এসে আমাকে বলেছে, তাদের অভিভাবকরা নাকি তাদের বাহিরের বই পড়া পছন্দ করেন না। তারা পরীক্ষায় অনেক নাম্বার চানে সন্তানের কাছ থেকে। এটি খুবই হতাশাজনক কথা।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী, অ্যাডুকেশন ওয়াচের চেয়ারপারসন ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, গণসাক্ষরতা অভিযানের ডিপিএম সামছুন নাহার কলিসহ শিক্ষক ও অন্যান্য ব্যক্তিবর্গরা।

প্রসঙ্গত, ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর বাংলাদেশে গড়ে ১৭ হাজার শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। এ মৃত্যুর সংখ্যা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। যা মোট শিশুমৃত্যুর ২৮ ভাগ। এই মৃত্যুর বেশির ভাগ খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয় না। বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাস্থ্য ও তথ্য জরিপ ২০১৬ অনুযায়ী, বছরে ১ থেকে ১৭ বছর বয়সি ১৪ হাজার ৪৩৮ জন শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। শিশু ও কিশোরদের মৃত্যুর অন্যতম কারণ পানিতে ডুবে যাওয়া, যা বর্তমানে একটি অবহেলিত জাতীয় সংকট বলে জানান বিজ্ঞজনেরা।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন