হোম আন্তর্জাতিক ভারতের দেয়া বিমান ব্যবহারে সরকারের ‘না’, মালদ্বীপে কিশোরের মৃত্যু

ভারতের দেয়া বিমান ব্যবহারে সরকারের ‘না’, মালদ্বীপে কিশোরের মৃত্যু

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 93 ভিউজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

মালদ্বীপে চিকিৎসা কাজে ভারতীয় বিমান ব্যবহারের অনুমতি না দেয়ায় এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছেন মৃত কিশোরের পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন।

শনিবার (২০ জানুয়ারি) মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ জনিত কারণে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে ১৪ বছর বয়সী একটি ছেলে। কিন্তু মালদ্বীপ সরকার তার চিকিৎসায় ভারতের দেয়া বিমান ব্যবহারের অনুমতি দেয়নি। এ ঘটনার জন্য প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুকে দায়ী করেছেন তার সরকারের মন্ত্রী মিকাইল নাসিম।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের মতে, মালদ্বীপকে অ্যাডভান্সড লাইট হেলিকপ্টার ও ডর্নিয়ার নামের কিছু ছোট বিমান দিয়েছে ভারত। অতীতে চিকিৎসা ও দুর্যোগে উদ্ধার অভিযানের মতো মানবিক সহায়তার কাজে এসব বিমান ব্যবহার করা হয়েছে।

কিন্তু গত বছর প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু ক্ষমতায় আসার পর সব ডর্নিয়ার বিমান ব্যবহার বন্ধ রেখেছেন তিনি। তিনি বলেছেন, মালদ্বীপে মোতায়েন ভারতীয় সেনা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত এসব বিমান ওড়ানো হবে না।

শনিবার যা ঘটেছে

১৪ বছর বয়সী একটি ছেলের ব্রেন টিউমারের কারণে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে গাফ আলিফ ভিলিংগিলির প্রত্যন্ত দ্বীপ উইলমিংটন থেকে মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হয়।

এর জন্য একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স খুঁজছিল তার পরিবার এবং তারা সরকারের এভিয়েশন তথা বিমান বিভাগে ফোন করে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিতে দিতে ১৬ ঘণ্টা পার হয়ে যায়। দেরি হওয়ায় ছেলেটির মৃত্যু হয়।

স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন মতে, ছেলেটির পরিবার অভিযোগ করেছে, কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়ায় তাদের ছেলে মারা গেছে। কিশোরের বাবা বলেছেন, স্ট্রোক করার পর আমার ছেলেকে দ্রুত মালে নেয়ার জন্য বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করি। কিন্তু তারা আমাদেরকে কোনো সাড়া দেয়নি।

তিনি আরও বলেন, নানা টালবাহানার পর বিকল্প বন্দোবস্ত করে মালে পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়েছিল অসুস্থ কিশোরকে। কিন্তু বাঁচানো যায়নি। এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সের আবেদন জানানোর ১৬ ঘণ্টা পরে রাজধানীতে পৌঁছায় কিশোর। সেখানে নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভর্তি করা হয় আইসিইউতে। পরে শনিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

বিমান সরবরাহে কেন দেরি হলো তার একটা ব্যাখ্যা দিয়েছে এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসার জন্য লোকজনকে স্থানান্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মালদ্বীপের আসানধা কোম্পানি লিমিটেড এক বিবৃতিতে বলেছে, আবেদন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা উদ্ধার অভিযান শুরু করে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য তাদের বিলম্ব ঘটে।

এ ঘটনায় গাফ আলিফ ভিলিংগিলিতে হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে মালদ্বীপ সরকারের মন্ত্রী মিকাইল নাসিম বলেন, ভারতের প্রতি প্রেসিডেন্টের শত্রুভাবাপন্ন মনোভাবের কারণে মানুষজনের প্রাণ দেয়া উচিত নয়।

মলদ্বীপে গত বছরের নভেম্বরে ক্ষমতায় এসেছেন মোহাম্মদ মুইজ্জু। তিনি ভারত বিরোধী বলে পরিচিত। ক্ষমতায় আসার পরেই তিনি মলদ্বীপ থেকে ভারতকে সেনা সরিয়ে নিতে বলেন।

সম্প্রতি তার তিন মন্ত্রী ভারতের প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে অবমাননাকর মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছেন। তার পর থেকে ভারতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘বয়কট মলদ্বীপ’ রব ওঠে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন