জাতীয় ডেস্ক:
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করায় ড. হাছান মাহমুদকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর।
রোববার (১৪ জানুয়ারি) এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে বাংলাদেশের নবনিযুক্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান তিনি।
এরপর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হওয়ায় ড. হাছান মাহমুদকে অভিনন্দন। ভারত ও বাংলাদেশের মৈত্রী আরও গভীর করতে আমরা একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে প্রত্যাশা করছি।
এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর আজ নিজ দফতরে সাংবাদিকদের ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশকে এগিয়ে নিতে হলে অর্থনৈতিক কূটনীতিভাবে শক্তিশালী করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন নিয়ে সব দেশে কমবেশি প্রশ্ন থাকে, তবে সরকার কোনো চাপ অনুভব করছে না। আমরা কারো চাপ অনুভব করছি না। নির্বাচন নিয়ে চাপ–গভীর চাপ, মধ্যম চাপ আরও নানা ধরনের চাপ ছিল। সব চাপ উতরে নির্বাচন হয়ে গেছে। সুতরাং আমরা কখনও কারো কোনো চাপ অনুভব করি নাই।’
শিক্ষা- রাজনীতি ও তার কর্মময় জীবন-
টানা দ্বিতীয় এবং সবমিলে তৃতীয়বারের মতো মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছেন ড. হাছান মাহমুদ। একাদশ জাতীয় সংসদে শেখ হাসিনার চতুর্থ মন্ত্রিসভায় তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা হাছান এবার সামলাবেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে নবগঠিত মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ গ্রহণ শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে বুধবার (১০ জানুয়ারি) মন্ত্রীদের নাম ঘোষণা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। পরের দিনে ড. হাছান মাহমুদকেও নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মত আওয়ামী লীগের মনোনয়নে চট্টগ্রাম-৬ আসন থেকে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ড. হাছান মাহমুদ। এ সময় শেখ হাসিনার তৃতীয় মন্ত্রীসভায় ২০০৯ সালের ৮ জানুয়ারি থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত প্রথমে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, একই বছরের ১ আগস্ট থেকে ২০১১ সালের ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এবং পরবর্তীতে একই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এবং ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া ও বোয়ালখালী আংশিক) আসন থেকে নির্বাচিত হন। দশম জাতীয় সংসদে তিনি পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একাদশ জাতীয় সংসদে শেখ হাসিনার চতুর্থ মন্ত্রিসভায় তিনি তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও চট্টগ্রাম-৭ আসন থেকে চতুর্থবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে সংসদে শপথ নেন ড. হাছান মাহমুদ।
ড. হাছান মাহমুদ ১৯৬৩ সালের ৫ জুন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮৮ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়ন বিষয়ে স্নাতক এবং ১৯৮৯ সালে স্নাতকোত্তর শেষ করেন। তিনি ২০০১ সালে বেলজিয়ামের লিম্বুর্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিবেশ রসায়ন বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
ড. হাছান ১৯৭৭ সালে চট্টগ্রাম ওয়ার্ড শাখা ছাত্রলীগে যোগদানের মাধ্যমে ছাত্ররাজনীতি শুরু করেন। ১৯৭৮ থেকে ১৯৭৯ পর্যন্ত তৎকালীন সরকারি ইন্টারমিডিয়েট কলেজ (বর্তমান সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ) শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৮৮ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৯২ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।
১৯৯৩ সাল থেকে তিনি বেলজিয়ামে অবস্থানকালে সেখানকার আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। এরমধ্যে ১৯৯৫ থেকে ২০০০ সালের মার্চ পর্যন্ত বেলজিয়াম শাখা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সপ্তম জাতীয় সংসদের সময়কালে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন।
বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।