রাজনীতি ডেস্ক:
গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, পশ্চিমারা নির্বাচনের আগে যেভাবে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বলেছে- নির্বাচনের পরও নির্বাচন যে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হয়নি স্পষ্টভাবে সে কথা বলছে। এ নির্বাচন দেশে-বিদেশে কোথাও গ্রহণযোগ্য হয়নি। বিভিন্ন বুদ্ধিজীবী, আন্তর্জাতিক সংগঠন যে বক্তব্য-বিবৃতি দিচ্ছে তাতেও তারা বলছে, ৫%-৭% এর বেশি ভোট পড়েনি। তার মানে ৯৫- ৯৩ ভাগ মানুষ এই সরকারকে সমর্থন করছে না, তারা সরকারের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) বিকেলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবিতে রাজধানীর পুরানা পল্টন সংলগ্ন আল রাজি কমপ্লেক্সের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ ও গণমিছিল করেছে গণঅধিকার পরিষদ। মিছিলটি পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেস ক্লাব, হাইকোর্ট কদম ফোয়ারা হয়ে পল্টন মোড়, নাইটিংগেল মোড় হয়ে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সড়ক ঘুরে বিজয়নগর মোড়ে এসে শেষ হয়।
ভিপি নুর বলেন, প্রহসনের নির্বাচন প্রত্যাখ্যান ও ভুয়া ভোট বর্জন করায় আমরা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাই। সরকারকে বলতে চাই, আপনারা কতটা জনবিচ্ছিন্ন আপনারা নিজেরাও জানেন। অনতিবিলম্বে এই ডামি পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন। আপনাদেরকে জনগণ পার্লামেন্টে বসতে দেবে না। রাষ্ট্রের ২ হাজার কোটি টাকা খরচ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী দিয়ে নির্বাচনী উৎসব করার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু সেটা প্রহসনে পরিণত হয়েছে। জনগণ আপনাদের এই সাজানো নির্বাচন বয়কট করেছে। বিদেশিরাও স্পষ্ট বলছে, হাজার হাজার বিরোধী নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে, জেলে ভরে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ রুদ্ধ করা হয়েছে। তাই জনগণকে সাথে নিয়ে গণতন্ত্রের জন্য আমাদের সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে। এ সংগ্রামে আমরাই জয়ী হবো।
দলের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেন, ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে ডামি সংসদ গঠিত হয়েছে। তাড়াহুড়ো করে ডামি এমপি-মন্ত্রীরা ডামি শপথ নিলো। কিন্তু এভাবে ক্ষমতার গদি টেকানো যাবে না। এই যে এখানে রিকশাচালকরা আছে, আমাদের বক্তব্য শুনছে, স্লোগান দিচ্ছে- তারাও ভোট দিতে যায়নি। তাহলে ভোট দিল কারা? ভোটকেন্দ্রে কুত্তা-বিড়াল ও ভেড়ার পালেরা ঘুরঘুর করেছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার নাকি ঘুমিয়ে ছিলেন। তিনি ঘুমের ঘোরে কখনো বলেছেন ২৭% ভোট পড়েছে, কখনো ৪০%। আবার এখন বলছেন ৪১%! এই নির্বাচন কমিশন এখন ঘুমন্ত কমিশনে পরিণত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ৭ তারিখে নির্বাচন করতে পেরেছে বলেই ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবে, বিষয়টি এমন না। জনগণ ফুঁসে উঠেছে, রাজপথে জনতার উত্তাল ঢেউ নেমেছে। সুতরাং কে নামলো, কে নামলো না, কে আন্দোলনের ঘোষণা দিলো, কে দিলো না- সেটি গুরুত্বপূর্ণ না। এই আন্দোলন জনগণের আন্দোলন, এই আন্দোলনে কোনো নেতা নেই, প্রতিটি কর্মীই নেতা। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই সরকারের পতন হবে, ইনশাআল্লাহ।
গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিলের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নাজিম উদ্দিন, মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমান, যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান, ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তারিকুল ইসলাম, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান প্রমুখ।