হোম জাতীয় বেনাপোল এক্সপ্রেসে নিখোঁজ রাজবাড়ীর তিনজনের বাড়িতে মাতম

বেনাপোল এক্সপ্রেসে নিখোঁজ রাজবাড়ীর তিনজনের বাড়িতে মাতম

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 134 ভিউজ

জাতীয় ডেস্ক:

রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগু‌নের ঘটনায় এখনও নি‌খোঁজ র‌য়ে‌ছেন রাজবাড়ী জেলার তিনজন। তা‌দের তিনজনের বাড়িতেই চল‌ছে মাতম।

নিখোঁজরা হলেন- রাজবাড়ী সদর উপজেলার সাজ্জাদ হোসেনে স্ত্রীর এলিনা ইয়াস‌মিন (৪০), সদর উপজেলার বেলগাছি আলিমুজ্জামান স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক প্রয়াত চিত্ত রঞ্জনের মেয়ে চন্দ্রিমা চৌধুরী সৌমি (২৬) ও কালুখালী উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের বড়ইচারা গ্রামের আব্দুল হকের ছেলে আবু তালহা (২৪)। তালহা সৈয়দপুরের বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি পরিবারের সঙ্গে ফরিদপুর শহরের গুহলক্ষীপুরে থাকেন।

জানা গে‌ছে, শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজবাড়ী রেলও‌য়ে স্টেশন থে‌কে ঢাকায় যাওয়ার জন্য বেনা‌পোল এক্স‌প্রেস ট্রেনে ওঠেন এলিনা ও সৌমিসহ ৬৫ জন যাত্রী। আর আবু তালহা ওঠেন ফরিদপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে। বাবার কুলখা‌নি শে‌ষে ছয় মা‌সের শিশু সন্তান, বোন ডেইজি আক্তার রত্না, বোনের স্বামী ইকবাল বাহার ও তা‌দের দুই সন্তানসহ বেনা‌পোল এক্স‌প্রেস ট্রেনে ‘চ’ ব‌গি‌তে ঢাকায় যা‌চ্ছিলেন এলিনা। অন্যদিকে সৌমি ঢাকায় তার ভাইয়ের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। আবু তালহার ঢাকা হয়ে সৈয়দপুরে তার বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার কথা ছিল। তবে কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছা‌নোর আগে রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেসে ভয়ানক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ট্রেনের ‘চ’ বগিসহ মোট চারটি বগি পুড়ে যায়। সেই সঙ্গে ঘটনাস্থলেই মারা যান চার যাত্রী। এরপর থেকেই নিখোঁজ এলিনা, সৌমি ও আবু তালহা।

সৌমির পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ট্রেনে আগুন লাগার আধাঘণ্টা আগেও সৌমির সঙ্গে কথা হয় তার পরিবারের। তবে ট্রেনে আগুন লাগার পর থেকে তার খোঁজ পাচ্ছে না পরিবার। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

সৌমির চাচা অতনু বলেন, সৌমি ঢাকার একটি বেসরকারি বিদ্যালয় থেকে ফার্মাসিস্ট বিভাগে মাস্টার্স শেষ করেছে। বর্তমানে সে ঢাকার মোহাম্মদপুরে ভাইয়ের বাসায় থেকে দেশের বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। একমাস আগে সে বাড়ি বেড়াতে যায়। শুক্রবার সন্ধ্যায় সে রাজবাড়ী রেলওযে স্টেশন থেকে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে ‘চ’ নম্বর বগিতে ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা হয়। কিন্তু অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে আমরা তার কোনো সন্ধান পাচ্ছি না।

আবু তালহার মা মাহ্ফুজা ফেরদৌসী বলেন, ‘আমাদের গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ীর কালুখালীতে হলেও আমরা এখন ফরিদপুর শহরের গুহলক্ষীপুরে থাকি। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭ টার দিকে আমার ছেলেকে ফরিদপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠিয়ে দেই। সে ঢাকা হয়ে সৈয়দপুরে তার বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবে। কিন্তু রাতে ট্রেনে আগুন দেওয়ার পরপরই তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাচ্ছি। তার বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়েছি, সেখানেও যায়নি। তার টিচাররাও তাকে খুঁজছে। ঢাকায় বিভিন্ন হাসপাতালে খুঁজেও ছেলের কোন খোঁজ পাইনি। জানি না আমার ছেলে বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে। আমি আমার ছেলের সন্ধান চাই।’

জানা গেছে, এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এলিনার সঙ্গে থাকা বোন, বোনের স্বামীসহ সবাই দগ্ধ হয়েছেন। বর্তমা‌নে সবাই ঢাকা মে‌ডি‌কে‌লে চি‌কিৎসাধীন। তবে এ ঘটনার পর থেকে এলিনা ইয়াসমিনের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। একই সঙ্গে এ ঘটনার পর সৌমি ও আবু তালহার কোনো খোঁজ পাচ্ছে না তাদের পরিবার। তাদের খোঁজ পেতে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহ‌যো‌গিতা কামনা ক‌রে‌ন পরিবারের সদস্যরা।

রাজবাড়ী রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার তন্ময় কুমার দত্ত বলেন, বেনাপোল থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে রাজবাড়ী জেলার জন্য আসন বরাদ্দ থাকে মোট ৫৫টি। কিন্তু গতকাল শুক্রবার রাজবাড়ী থেকে আনুমানিক ৬৫ যাত্রী বেনাপোল এক্সপ্রেসে ঢাকার উদ্দেশ্য যায়।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন