হোম রাজনীতি ফরিদপুর-৩: শামীম বলছেন ‘মাথায় মুরগির রক্ত’, একে আজাদের দাবি হামলা

রাজনীতি ডেস্ক:

ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী শামীম হক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল কাদের আজাদ (এ কে আজাদ) পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে এ কে আজাদ তার ঝিলটুলীর বাসভবনে এবং শামীম হক প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর, প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীদের হামলাসহ চিহ্নিত অস্ত্রধারী-সন্ত্রাসীদের নির্বাচনের মাঠে নামিয়ে ইতোমধ্যে শামীম হক তার প্রার্থিতা বাতিলের সব কর্মকাণ্ড করে ফেলেছেন বলে মন্তব্য করেন ফরিদপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদ।

বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে নিজ বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদ। স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল কাদের আজাদের সমর্থক মো. আব্দুর রহমান শেখ ঝনকের ওপর হামলাসহ গত কয়েকদিনের ভাঙচুর ও নৈরাজের প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী অফিসে হামলা, আমার কর্মীকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করাসহ একটা ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করে শামীম হকই নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছেন। আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে চান, এদিকে শামীম হক নির্বাচন ভণ্ডুলের সব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন। তিনিই মূলত বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছেন।’

একে আজাদ বলেন, ‘আজকে ফরিদপুরে একটা ভয়ার্ত পরিবেশ। শামীম হকের পক্ষে কাজ করছে ফরিদপুরের শীর্ষ চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। গতকাল রাতেও আমার কর্মীকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে জখম করেছে। বর্তমানে সে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। আমার নারী কর্মীদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। ঈগল মার্কার প্রচার-প্রচারণায় যারা কাজ করছেন তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকিধমকি দেয়া হচ্ছে। অসংখ্যবার থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। প্রার্থী নিজেও আমার কর্মীকে হুমকি দিচ্ছেন নির্বাচনের পরে দেখে নেবেন। এসবের মধ্য দিয়েই নৌকা মার্কার প্রার্থী শামীম হক তার প্রার্থিতা বাতিলের সব কর্মকাণ্ড করে ফেলেছেন।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবল সাহা, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য বিপুল ঘোষ, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভী মাসুদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ফারুক হোসেন, সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাড.শামসুল হক ভোলা মাস্টার প্রমুখ।

এদিকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেন ফরিদপুর-৩ আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক।

বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের হলরুমে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে শামীম হক বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী নিয়ে মাঠে নেমেছে স্বতন্ত্র প্রার্থী। নির্বাচন বাঞ্চাল করতে নানা ধরনের পায়তারা করছে তারা। আমার নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। আমি যদি মনে করতাম তাহলে সে মাঠে নামতে পারতো না, কিন্তু আমি তা করিনি। আমি চাই জনগন তার মতো করে ভোট দেক। যাকে পছন্দ তাকে ভোট দেবে।’

তিনি বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রথম থেকেই আমার বিরুদ্ধে লেগে রয়েছেন। উনি নৌকা চেয়ে না পেয়ে আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র শুরু করে। প্রথমেই আমার বিরুদ্ধে দ্বৈত নাগরিকের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। এরপর আমি রায় পেয়ে মাঠে রয়েছি। পুনরায় তিনি উচ্চ আদালতে আমার প্রার্থিতা বাতিলের আবেদন করেছেন। উনি চান আমি যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারি। কারণ স্বতন্ত্র প্রার্থী জানেন তার ভোট নেই, নির্বাচন হলে তিনি পরাজিত হবেন। একারণে আমার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলছেন।’

শামীম হক বলেন, ‘আমি বলেছি, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বাদ দিয়ে ভোটের মাঠে থাকো। ৭ তারিখে জনগণই রায় দেবে। কিন্তু সে ফরিদপুর শহরকে অশান্ত করতে চাচ্ছে। নির্বাচন বাঞ্চাল করতে চাচ্ছে স্বতন্ত্র প্রার্থী। বাইরে থেকে লোক এনে শহরকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে।’

তিনি বলেন, ‘রাস্তায় কেউ পরে গিয়ে মাথা ফেটে গেছে, মুরগির রক্ত দিয়ে তাকে বানানো হচ্ছে হামলায় আহত। এধরনের ঘটনা সৃষ্টি করে অশান্ত করে তুলছেন। মানুষ যাতে ভোটকেন্দ্রে না যেতে পারে সেইকারনে এধরনের ঘটনা ঘটিয়ে আতংকের সৃষ্টি করছেন। এটা তার একটা রাজনৈতিক কৌশল। এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে তিনি এসেছেন। আমার নেতাকর্মীদের বলেছি, তোমরা শান্ত থাকো, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়গুলো দেখছে। ফরিদপুরের মানুষকে ভয় দেখিয়ে লাভ হবে না। ভোটের মাধ্যমে প্রমান করে দিবে জনগণ।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ্ মো. ইশতিয়াক আরিফ, পৌর মেয়র অমিতাভ বোস প্রমুখ।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন