রাজনীতি ডেস্ক:
জামালপুর-৫ (সদর) আসনে সরকারি ভাতাভোগী ব্যক্তিরা নৌকার প্রার্থী মো.আবুল কালাম আজাদের সভায় অংশ না নিলে নির্বাচনের পর ভাতা কার্ড বাতিলের হুমকি দেয়াতে লক্ষ্মীরচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাতেম আলীর কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে তলব করেছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি।
শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ও দায়রা জজ ফারজানা আহমেদ ব্যাখ্যা চেয়ে তাকে চিঠি পাঠান।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, হাতেম আলী গত মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে সদর উপজেলার লক্ষ্মীরচর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের পক্ষে একটি মিছিলের পর ভোটারদের উদ্দেশ্যে নৌকা প্রার্থী মো.আবুল কালাম আজাদের সভায় অংশ না নিলে নির্বাচনের পর ভাতা কার্ড বাতিলের হুমকি দিয়ে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি বাধাগ্রস্ত করেছেন। এই হুমকির বিষয়টি বুধবার (২০ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
এমন অবস্থায় তার বিরুদ্ধে কেন নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নিবে না এই মর্মে আগামী রোববার (২৪ ডিসেম্বর) অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যানের কার্যালেয়ে সশরীরে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয় হাতেম আলীকে।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের সমর্থনে বারুয়ামারী বাজার এলাকায় হাতেম আলী বক্তব্য দেন।
হাতেম আলীর দেয়া বক্তব্যের ২ মিনিট ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে হাতেম আলীকে বলতে শোনা যায়, ‘শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন, আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু শান্তি যদি নষ্ট করতে চান, তাহলে বিএনপি-জামায়াতের মতো আপনাদের অবস্থান হবে। আর আমি বলতে চাই, এই ১৫ বছরে যে ভাইয়েরা, বিভিন্ন ভাতার অধীনে অন্তর্ভুক্ত হয়ে চেয়ারম্যান ও মেম্বারের মাধ্যমে ভাতা ভোগ করছেন তারা যদি সভায় উপস্থিত না হন, ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে আমরা নির্বাচনের পরে সব ভাতা বন্ধ করে দেবো।
হাতেম আলী আরও বলেন, ‘আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ রাখছি, আওয়ামী লীগ করেন, আওয়ামী লীগের টা খাবেন, নৌকা মার্কার অর্থ ভোগ করবেন, সুবিধা ভোগ করবেন, আর এই ১০ দিনের জন্য লেমন জুস খাবেন অন্য দলের তা হবে না। যারা মিছিল নিয়ে আসবেন, নৌকার মিছিল নিয়ে এলে আপনাদের সম্মান করা হবে, আপনাদের খরচ দেয়া হবে, আপ্যায়ন করা হবে।’
এই বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে হাতেম আলী বলেন, ‘নৌকা মার্কার একটি মিছিল ছিল। মিছিল শেষে আমি বক্তব্য দিচ্ছিলাম। সেই সময় চেয়ারম্যান আমাকে বলেছিল, তিনি নৌকার পক্ষে বারুয়ামারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে একটি সভার আহ্বান করবেন। সেখানে সবাইকে উপস্থিত হওয়ার জন্য বলছিলাম। সেই সময় ভুলবশত ওই সব কথা বলে ফেলেছি। অনুসন্ধান কমিটির চিঠি পেয়েছি, আগামী ২৪ ডিসেম্বর হাজির হয়ে জবাব দিবো।