রাজনীতি ডেস্ক:
মাদারীপুরে কালকিনি উপজেলায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর মিছিলে বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার লক্ষ্মীপুরে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য কাজী তোফাজ্জেল হোসেন ওরফে গেন্দু কাজী (৭০), গেন্দু কাজীর ছেলে মুরাদ কাজী (৩০), লক্ষ্মীপুরের আতিবর সরদারের স্ত্রী আখলিমা বেগম কহিনুর (৪৫), হাবিবুর রহমান সরদারের ছেলে কাঞ্চন সরদার (৫৫), মো. খোকন সরদারের ছেলে সোহেল সরদার (৪০), হাতেম সরদারের ছেলে ইয়াদুল সরদার (৪০)। বাকিদের নাম তাৎক্ষনিক পাওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিকেলে মাদারীপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগমের পক্ষে তোফাজ্জেল হোসেন ওরফে গেন্দু কাজীর নেতৃত্বে ঈগল মার্কার মিছিল বের করে কর্মী ও সমর্থকরা। এ সময় নৌকার প্রার্থী ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপের সমর্থক লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুল হক বেপারীর লোকজন বাধা দেয়। পরে মিছিলে অতর্কিতভাবে অর্ধশত হাতবোমা নিক্ষেপ করেছে। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। হাতবোমায় উভয়পক্ষের অন্তত দশজন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
অভিযুক্ত ফজলুল হক বেপারী বলেন, ‘আমি এলাকায় ছিলাম না। গেন্দু কাজীর লোকজন আমার কয়েকজন কর্মীকে প্রথমে মারধর করে। পরে হামবোমারও ঘটনা ঘটেছে। আমার ৩-৪ জন লোক আহত আছে। তারা হাসপাতালে ভর্তি।
গেন্দু কাজীর ছেলে মুরাদ কাজী বলেন, ‘আমরা ঈগল পাখি মার্কার মিছিল নিয়ে বের হয়। মিছিলে ৪০০-৫০০ লোক ছিল। মিছিলটি লক্ষ্মীপুর নূরানী মাদ্রাসার সামনে আসলে ফজলুল হক বেপারীর লোকজন অতর্কিত হামলা চালায়। পরে হাতবোমা নিক্ষেপ করে। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।’
মাদারীপুর জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. ফয়জুর রহমান বলেন, ‘বোমার বিস্ফোরণের ঘটনায় হাসপাতালে বেশ কয়েকজন এসেছে। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া শেষে ভর্তি করে দেয়া হয়েছে।’
মাদারীপুরের কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাজমুল হাসান জানান, বোমা বিস্ফোরণের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসেছে। একই সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ভূমি সহকারি কমিশনারসহ অতিরিক্ত পুলিশ রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। দুপক্ষের লোকজন আহত রয়েছে। ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে পুলিশ কাজ করছে।
প্রসঙ্গত, মাদারীপুর-৩ আসনের নৌকার প্রার্থী ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক। অপরদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগম মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।
মাদারীপুর-৩ আসনে ৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী ড. আবদুস সোবহান গোলাপ মিয়া, স্বতন্ত্র প্রার্থী কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসা. তাহমিনা বেগম, সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুজ্জামান শাহীন, তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী প্রবীণ হালাদার, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির নিতাই চক্রবর্তী, কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের মনোনীত প্রার্থী নকুল কুমার বিশ্বাস, জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. আব্দুল খালেক, জাকের পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন।
কালকিনি ও ডাসার উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এবং মাদারীপুর সদরের পাঁচটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মাদারীপুর-৩ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৫৭ হাজার ৮৫৬ জন। পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৮৬ হাজার ৮৯৩ ও নারী ভোটার ১ লাখ ৭০ হাজার ৯৬০ জন। এছাড়া হিজড়া ভোটারের সংখ্যা ৩ জন।