রাজনীতি ডেস্ক:
যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কার প্রার্থী ডা. তৌহিদুজ্জামান তুহিন নির্বাচনের হলফনামায় ৩০ কোটি ২১ লাখ ৪৬ হাজার ৩ টাকা দেখিয়েছেন।
অন্যদিকে দশম জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে (ডামি প্রার্থী) স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে হলফনামায় সম্পদের পরিমাণ দেখিয়েছেন ১ কোটি ৫২ লাখ ৬৯ হাজার ৭১২ টাকা। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি তার হলফনামায় সম্পদের পরিমাণ দেখিয়েছিলেন ৬ লাখ ৫৯ হাজার ৭০৩ টাকা। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে হলফনামা অনুযায়ী তার সম্পদ ২০ থেকে ২২ গুন বৃদ্ধি পেয়েছে।
নির্বাচনী হলফনামায় আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ডা. তৌহিদুজ্জামান তার আয়ের উৎস দেখিয়েছেন কৃষি খাতে একলা ১৯০ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া অ্যাপার্টমেন্টে পাঁচ লাখ সাতচল্লিশ হাজার ৩৫৬ টাকা ব্যবসা থেকে ১১ লাখ ১১ হাজার ১০১ টাকা, শেয়ার সঞ্চয়পত্রে ২২ লাখ ৬১ হাজার ২৪২ টাকা, স্কয়ার হাসপাতালে সিনিয়র কনসান্টেন্ড আর্টিওলজিস্ট হিসেবে সম্মানী ভাতা পান এক কোটি ৯৬ লাখ ৬৪ হাজার ২৬০ টাকা, নগদ অর্থ এক লাখ ৭৫ হাজার ৭২০ টাকা ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত ৪ কোটি ৫৯ লাখ ২৭ হাজার ৩৮৩ টাকা, ঋণ সঞ্চয়পত্র বন্ড স্টক এক্সচেঞ্জ ইত্যাদিতে ২ কোটি ৮৩ লাখ ৬ হাজার ৯৮৭ টাকা, সেভিংস সার্টিফিকেটসহ সঞ্চয়পত্র আমানতে বিনিয়োগ ১ কোটি ৫৮ লাখ ২১ হাজার ৭০৯ টাকা, বাস ট্রাক মোটর গাড়িতে ৩৫ লাখ টাকা, মূল্যবান ধাতু ৩ লাখ টাকা, আসবাবপত্র ৫০ হাজার টাকা অন্যান্য অগ্রিম প্রদান ২৬ লাখ ৬ হাজার টাকা, ব্যবসার বিনিয়োগ ৩৮ লাখ ৫ হাজার ৭৭৪ টাকা, কৃষি জমিতে আয় ৫৮ লাখ, ৫৫ হাজার ৩৭৫ টাকা, অদ্রিসে তে আয় ১ কোটি ৭৭ লাখ ৬৯ হাজার ৭৪ টাকা, আবাসিকে ৩০ লাখ টাকা, বাড়ি/এপার্টমেন্টে ৫ লাখ ৮৭ হাজার ৪১৭ টাকা, এবং বাড়ি ভাড়ার অগ্রিম গ্রহণ ৮৮ হাজার ৮০০ টাকা। তার স্ত্রীর আয়সহ সম্পদের পরিমাণ ১৪ কোটি ৮৮ লাখ ৯৫৫ টাকা এবং তার ওপর নির্ভরশীলদের আয়ের পরিমাণ ২৮ লাখ ৬৫ হাজার ৬৪০ টাকা। সব মিলিয়ে ডাক্তার তৌহিদুজ্জামান এর সম্পদের পরিমাণ ৩০ কোটি ২১ লাখ ৪৬ হাজার ৩ টাকা।
অন্যদিকে দশম জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্য এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদের স্বতন্ত্র প্রার্থী, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম তার হলফনামায় আর আয়ের পরিমাণ দেখিয়েছেন ১ কোটি ৫২ লাখ ৬৯ হাজার ৭১২ টাকা। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হলফনামায় তার সম্পদের পরিমাণ দেখানো হয়েছিল ৬ লাখ ৫৯ হাজার ৭০৩ টাকা।
হিসাব অনুযায়ী, স্বতন্ত্র প্রার্থীর (ডামি প্রার্থী) সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে ২০ থেকে ২২ গুণ। তিনি তার সম্পদ বিবরণীতে উল্লেখ করেছেন বার্ষিক আয় কৃষি খাতে ৩৫ হাজার টাকা, শেয়ার সঞ্চয়পত্রে ও অন্যান্যে ২ লাখ ৪৮ হাজার ৩২৯ টাকা, পেশায় অর্জন ৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, নগদ ১০ লাখ টাকা, ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ৩ লাখ ৭০ হাজার ১২ টাকা, এরিকো লাইফ ইন্সুরেন্স থেকে ৭ লাখ ৩৩ হাজার ৫৯৮ টাকা, ডিপিএস ১৫ লাখ ৪০ হাজার ৯৮৩ টাকা, একটি জিপ গাড়ির মূল্য ৫৬ লাখ ৪৯ হাজার ৮৩০ টাকা, ৩ ভরি স্বর্ণ ১ লাখ টাকা, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ১ লাখ ৪০ হাজার ৫০০ টাকা, ৬৭ শতক জমি ৯৫ হাজার টাকা, অকৃষি জমি (৫.২ কাঠা) ১৭ লাখ ৪৬ হাজার টাকা, আসবাবপত্র ১ লাখ ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা, সংসদ সদস্য থাকাকালীন রাজউক থেকে প্রাপ্ত ৫ কাঠা প্লট ২৯ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে বর্তমান সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৫২ লাখ ৬৯ হাজার ৭১২ টাকা।
একাদশ সংসদের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) ডা. নাসির উদ্দিন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন বঞ্চিত হন। সেখানে নৌকার প্রার্থী হিসেবে ডা. তৌহিদুজ্জামান মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য তোফায়েল আহমেদের একমাত্র জামাতা। তার বাড়ি ঝিকরগাছা পৌর সদরের কীর্তিপুর গ্রামে।
একই দলের দশম সংসদের সংসদ সদস্য ও যশোর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থী (ডামি প্রার্থী) হিসেবে ঝিকরগাছা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর বিজয়ী সংসদ সদস্য ৫ বছর পর কেমন সম্পদ হবে তা দেখার অপেক্ষায় রইলো ঝিকরগাছা চৌগাছাবাসীর জনগণ।