অর্থনীতি ডেস্ক:
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে নানামুখী কথাবার্তা ও পরিসংখ্যানের নানা ঘোরপ্যাচের মধ্যে চলতি মাসেই রিজার্ভে এক বিলিয়ন ডলার যোগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ১২ ডিসেম্বর এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) আলাদাভাবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে বসবে।
একইদিনের বৈঠকে এডিবির প্রতিশ্রুত ৪০০ মিলিয়ন ডলার এবং আইএমএফের দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮১ মিলিয়ন ডলার ঋণ ছাড়ের সম্ভাবনা আছে। এতে চলতি মাসের মধ্যে রিজার্ভে ১ দশমিক শূন্য ৮ বিলিয়ন ডলার যোগ হবে।
চলতি বছরের ১৯ অক্টোবর বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মলেনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক জানান,
আইএমএফ যেসব শর্ত দিয়েছে, তার বেশিরভাগই পূরণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিশেষ করে, সুদের হার বৃদ্ধি থেকে শুরু করে অন্যান্য শর্ত বাংলাদেশ ব্যাংক পূরণ করেছে। কেবল রিজার্ভ এবং রাজস্ব সংশ্লিষ্ট শর্ত পূরণ হয়নি। তবে বাংলাদেশ ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ঋণ পাবে।
এর আগে ৩ অক্টোবর আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসে। তাদের সঙ্গে সরকারের বিভিন্ন বিভাগ ও সংস্থার আলোচনা হয়েছে। মূলত আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণের শর্ত বাংলাদেশ কতটা পূরণ করতে পেরেছে এবং সরকারি বিভাগগুলো শর্ত পূরণে কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে, সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা হয়। এসব পর্যালোচনার ওপর ভিত্তি করে চলতি মাসে দ্বিতীয় কিস্তির ঋণ ছাড়ের সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র।
এর বাইরে জুন মাসে অভ্যন্তরীণ সম্পদের ব্যবহার, পাবলিক খাতের উন্নয়ন এবং নারী উদ্যোক্তাদের কর্মক্ষমতা ও আওতা বাড়ানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশকে ৪০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেয়ার কথা জানিয়েছে এডিবি।
মূলত করোনাপরবর্তী সময়ে ২০২১ সালের অক্টোবরে এডিবির চালু করা ‘সাস্টেইনেবল ইকোনোমিক রিকভারি প্রোগ্রাম’র আওতায় বাংলাদেশকে এ ঋণ দিচ্ছে এডিবি।
ম্যানিলাভিত্তিক সংস্থাটির বিজ্ঞপ্তিতে এডিবির দক্ষিণ এশিয়ার প্রিন্সিপাল পাবলিক ম্যানেজমেন্টের অর্থনীতিবিদ আমিনুর রহমান বলেন,
এই প্রোগ্রামটি বাংলাদেশকে রাজস্ব বাড়াতে, সরকারি ব্যয় ও পাবলিক প্রকিউরমেন্টে দক্ষতা ও স্বচ্ছতা বাড়াতে এবং রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের সংস্কারে সহায়তা করবে। একই সঙ্গে ক্ষুদ্র ব্যবসা ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ব্যাংকিং খাত থেকে স্বল্প সুদে সাশ্রয়ীভাবে ঋণ পেতে সাহায্য করবে।
এ প্রোগ্রামের আওতায় নতুন আয়কর আইনের মাধ্যমে আয়কর সংগ্রহ বাড়বে বলেও জানিয়েছে এডিবি। সংস্থাটির মতে, প্রোগ্রামটি একই সঙ্গে কর আদায়ে বিদ্যমান ফাঁকফোকর কমিয়ে আনবে, কর আইন বাস্তবায়নের ব্যবস্থা আরও জোরালো করবে।
এ ছাড়া ইলেকট্রনিক প্রকিউরমেন্ট এবং ইলেকট্রনিক পেমেন্ট সিস্টেমকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে পাবলিক খাতের স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বাড়ানো হবে। পাশাপাশি নতুন চালু হওয়া ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যবহার করে বিভিন্ন পাবলিক প্রকল্পের অনুমোদন ও মূল্যায়ন করা সম্ভব হবে বলেও জানিয়েছে এডিবি।