শিপলু জামান, ঝিনাইদহ :
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বারইপাড়া গ্রামের সুজাতা সাহা দুই মেয়েকে নিয়ে নিদারুন কষ্ট সহ্য করেছেন ।১৩ বছর আগে স্বামী প্রশান্ত সাহার আকষ্কিক মৃত্যুতে স্বামীর ভিটা ছাড়তে বাধ্য হন সুজাতা সাহা।দুই পায়ে শক্তি না থাকা ছোট মেয়ে প্রীতিলতা ও বড় মেয়ে প্রিয়াংকাকে নিয়ে ১৩ বছর আগে চলে আসেন নিজ বাবার বাড়িতে ।বাবার ভিটা না থাকায় স্থানীয় এক চাচাতো ভাইয়ের সহযোগীতায় সামান্য জমিতে থাকতে শুরু করেন তিনি ।এরপর স্থানীয় একটি কারখানার সামান্য উপার্জনে চলে সংসার ।এর ভিতর দিয়েছেন বড় মেয়েকে বিয়ে আর দুই পায়ে শক্তি না থাকা প্রীতিলতাকে নিয়ে বেধেছেন নানা স্বপ্ন ।কারন প্রীতিলতা আর ৫ জন ছাত্রেরমত না। চলাচলে অক্ষম প্রীতিলতা অভাবের সংসারে কখনো পড়ালেখা ছাড়েনি । প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের গন্ডি পার হয়ে সফলতার সাথে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেছে ।নানা কষ্টের মাঝেও সে এবার সদ্য ঘোীষত এইচ এস সি পরীক্ষায় যশোর শিক্ষা বোর্ডের অধিনে মানবিক শাখা থেকে জিপিএ ৫ পেয়েছে।
নিজের ভবিষ্যত চিন্তা ও উচ্চমাধ্যমিকে জিপিএ ৫ পাওয়ার ব্যাপারে প্রীতিলতা সাহা জানান ,আমার পড়ালেখার ব্যাপারে অনেকে আমাকে সহযোগীতা করেছেন ।তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ ।আমি পড়ালেখা শেষ করে একটি চাকুরি করে মায়ের পাশে দাড়াতে চাই ।
প্রীতিলতা সাহার মা সুজাতা সাহা জানান ,আমার বড় মেয়েটা বিয়ের পর ভারত চলে গেছে ।আমার ভিটা নেই ।কারখানায় কাজ করে সামান্য অর্থ পায় ।তা দিয়ে সংসার কোনরকম চলে ।সবার সাহায্য নিয়ে এ পর্যন্ত এসেছি ।আপনারা সবাই আমার মেয়ের পাশে থাকবেন এ কামনা করি।
প্রীতিলতা সাহার লেখাপড়ার অন্যতম পৃষ্ঠপোষক যশোর সরকারী শহীদ সিরাজুদ্দিন হোসেন মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ বিকাশ চন্দ্র রায় মুঠোফেনে জানান ,প্রীতিলতার এ সফলতা আমার কাছে গগনচুম্বি মনে হলো ।কালীগঞ্জে আমাদের একটি ছোট স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আছে ,সেখান থেকে তাকে সহয়তা করেছি ।এ সহায়তা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে ।আমি তার মঙ্গল কামনা করি ।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইশরাত জাহান প্রতিবেদককে জানান ,প্রীতিলতা সমাজের জন্য অনুকরনীয় ।সে নানা প্রতিবন্ধকতা সত্বেও নিজের পড়া লেখা চালিয়ে যাচ্ছে ,এ কারনে আমি তাকে সাধুবাদ জানাই ।তার প্রতি আমাদের দৃষ্টি থাকবে ।