ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইব) ক্রিকেট এবং ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন ১২ জন, তাদের মধ্যে ১ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল মাঠ, ডায়না চত্বর এবং মেডিকেল সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ফুটবল মাঠের একদল শিক্ষার্থী ক্রিকেট এবং আরেকদল শিক্ষার্থী ফুটবল খেলছিল। খেলা চলাকালীন সময়ে ক্রিকেট বলটি ফুটবল মাঠে যাওয়া নিয়ে উভয় দলের মাঝে তর্ক হয়। এসময় ফুটবল খেলোয়ার বীজন রায় ও জিয়ন ক্রিকেটের স্ট্যাম্পগুলো তুলে ফেলে। পরে দুপক্ষের মধ্যে মারামারি শুরু হলে ক্রিকেট টিমের আলি রিয়াজ ও তুর্য আহত হন। পরে ক্রিকেট টিমের খেলোয়াড়রা ফুটবল খেলোয়াড়দের মারার জন্য হল থেকে তাদের বন্ধুদের নিয়ে আসে। এসময় তারা ব্যাট, স্ট্যাম্প ও বাঁশের লাঠি দিয়ে ফুটবলের গোল কিপার বিজনকে এলোপাতাড়ি মারধর করে। এতে ফুটবল ও ক্রিকেট টিমের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এর কিছুক্ষণ পর ডায়না চত্বরে গিয়ে সংঘর্ষে জড়ায় উভয় গ্রুপ। এসময় তারা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে রাস্তার ধারে লাগানো রঙ্গিন পতাকা লাগানো বাঁশ উপড়ে ফেলে মারামারি করেন। এছাড়াও চিকিৎসা কেন্দ্রে গিয়ে পুনরায় মারধর শুরু করেন দুই গ্রুপ। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে এসে অবস্থা নিয়ন্ত্রণ করেন।
সংঘর্ষ চলাকালীন সময়ে ক্রিকেট টিমের খেলোয়ারদের মধ্যে মার্কেটিং বিভাগের তুর্য, আলী রিয়াজ ও হাফিজ, বাংলা বিভাগের ধ্রুব, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের জ্যাকি ও সিয়াম, অর্থনীতি বিভাগের সাদি এবং উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের মাহমুদুল হাসান সাফি আহত হয়। এদিকে, ফুটবল টিমের খেলোয়ারদের মধ্যে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের জিয়ন সরকার ও কবিরুল ইসলাম, আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিজন এবং আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের মেজবাহুল ইসলাম আহত হয়। এর মধ্যে তুর্যের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আহত শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান সাফি বলেন, আমরা মাঠে সেখানে সাত আট জন ছিলাম। তারা মাঠের ওইপাশ থেকে বাঁশ নিয়ে এসে আমাদের উপর হামলা করে৷ তারা উদ্দেশ্য মূলকভাবেই আমাদের উপর হামলা চালায়।
চিকিৎসা কেন্দ্রের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. খুরশিদা জাহান বলেন, আমরা আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। এদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক, সে চোখে আঘাত পেয়েছে। বাকিরা দ্রুতই সুস্থ হয়ে উঠবে বলে আশাকরি।
নিরাপত্তা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম সেলিম বলেন, ঘটনাটি জানার পরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। ক্যাম্পাস শান্ত রাখার জন্য আমরা তৎপর আছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, আমরা বিষয়টি তদন্ত করে অভিযুক্তদের ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এতে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপ কিংবা বহিরাগতের কোন ইন্দন বা চক্রান্ত আছে কি না তা খতিয়ে দেখবো।