আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গেল বছরের ২৪ আগস্ট ইউক্রেনে হামলা করে ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ রাশিয়া। যুদ্ধের দেড় বছরে নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে পরাশক্তি রাশিয়ার সঙ্গে লড়াই করে টিকে আছে ইউক্রেন। এই কাজে দেশটিকে সামরিক ও অর্থনৈতিকভাবে সাহায্য করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলো। তবে মাঠে-ময়দানে লড়াই করতে হয়েছে ইউক্রেনবাসীদেরই।
যুদ্ধ শুরুর পর সেনাবাহিনীতে যুবকদের যোগদান বাধ্যতামূলক করেছে কিয়েভ। প্রথম দিকে দেশমাতৃকার ডাকে হাজার হাজার যুবক সাড়া দিলেও বর্তমানে উল্টো চিত্র দেখছে ইউক্রেন। যুদ্ধে যোগদান এড়াতে এখন দলে দলে দেশ ছাড়ছে ইউক্রেনীয় যুবকরা। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক যোগদান এড়াতে এ পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার পুরুষ ইউক্রেন ছেড়ে পালিয়েছে।
এ ছাড়া দেশ থেকে পালানোর চেষ্টা করার সময় ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষের হাতে ধরা পড়েছে আরও ২১ হাজার ১১৩ জন। এদের মধ্যে কেউ কেউ বিপজ্জনক নদী সাঁতরে, আবার কেউ কেউ রাতের আঁধারে হেঁটেই সীমান্ত অতিক্রম করেছে। আর ইউক্রেন ছাড়ার সময় যারা আটক হয়েছে তারা সাঁতরে বা হেঁটে কিংবা অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে সীমান্ত পার হওয়ার চেষ্টা করেছে। শনিবার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে ইউক্রেন।
গেল বছর প্রতিবেশী রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করলে ১৮-৬০ বছর বয়সী পুরুষদের দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় কিয়েভ। তবে বিবিসি বলছে, সরকারি এমন নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রতিদিনই দেশ থেকে পালিয়েছেন কয়েক ডজন করে পুরুষ। ইয়েভগেনি নামে এক ইউক্রেনীয় বলেছেন, আমার আর কী করার ছিল? আমরা সবাই তো আর যোদ্ধা নই। যুদ্ধ না জানলে কিছু করার নেই।
ইউক্রেনের প্রতিবেশী রাষ্ট্র রোমানিয়া, মলদোভা, পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়ার কাছ থেকে সীমান্ত পারাপারের তথ্য সংগ্রহ করে ব্রিটিশ সংবামমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত ইউক্রেন থেকে অবৈধভাবে এসব দেশে প্রবেশ করেছে ১৯ হাজার ৭৪০ পুরুষ।
অন্যদিকে, ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলছেন, ২১ হাজার ১১৩ জন দেশ থেকে পালানোর চেষ্টা করার সময় ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষের হাতে ধরা পড়েছে। এদের মধ্যে ১৪ হাজার ৩১৩ জন সাঁতরে কিংবা হেঁটে সীমান্ত পার হওয়ার চেষ্টা করেছে। এ ছাড়া অসুস্থতার অজুহাতে ভুয়া নথি তৈরি করে সীমান্ত পার হওয়ার চেষ্টা করেছে বাকি ৬ হাজার ৮০০ জন।