হোম খুলনাসাতক্ষীরা মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক মায়ের সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিনিধি:

মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক মা। সোমবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে উক্ত সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন, শ্যামনগর উপজেলার জয়নগর গ্রামের আব্দুল হাই মোড়লের স্ত্রী রাশিদা বেগম।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার স্কুল শিক্ষিকা মেয়ে আফরোজা বিলকিছকে আমার নরপশু জামাই হুমায়ন কবিরের পরকিয়ার কারণে অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে এইচ.আই.ভি.এইচ জীবানু শরীরে প্রবেশ করিয়ে হত্যা করেছে। আমার মেয়ে একজন মেধাবী ছাত্রী। গত ২০১৬ সাল হতে সহকারী শিক্ষিকা হিসাবে প্রথমে আড়পাংগাশিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এরপর কাটিবারহল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকুরীরত ছিল। বিগত ১০/০৬/২০১৮ তারিখে একই উপজেলার হওয়ালভাঙ্গী গ্রামের হামজার গাইনের ছেলে হুমায়ুন কবির সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক মাস অতিবাহিত হলে জানতে পারি আমার জামাই একজন পরসম্পদ লোভী এবং চরিত্রহীন ব্যক্তি। আমার মেয়ের সরকারি চাকুরী করার কারণে তার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে বিয়ে করে। হুমায়ন বিয়ের সময় একমি কোম্পানির মেডিকেল রিপ্রেজেন্টটেটিভ (এম.আর) হিসাবে শ্যামনগরে কর্মরত ছিলো। বিয়ের পর তারা শ্যামনগরে জে.সি. মার্কেটের চতুর্থ তলায় ভাড়া বাসায় থাকতো। বিয়ের পর নানা অজুহাতে ছলচাতুরী করে আমার মেয়ের নিকট থেকে সে টাকা পয়সা গ্রহণ করতো। একপর্যায়ে আমার মেয়ে গর্ভে কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহন করার পর হতে জামাই হুমায়নের নানাবিধ পরিবর্তন শুরু হয়। মেয়ের কাছে জানতে পারি নারীলোভী হুমায়নের বিভিন্ন নারীর সাথে অবৈধ সম্পক রয়েছে। আমার মেয়ের প্রতি তার চরম অনিহা প্রকাশ পেতে থাকে। বিগত ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে হুমায়ন এলার্জী ও জ্বরের ভ্যাকসিন দেয়ার কথা বলে আফরোজাকে এক ধরনের ইনজেকশন পুশ করে। উক্ত ইনজেকশন পুশ করার কিছু দিনের মধ্যে আফরোজার জ্বর, সর্দি, কাশি, মাথাব্যাথাসহ নানা রোগে ভুগতে থাকে। অথচ জামাই হুমায়ন কখনও আমার মেয়েকে ডাক্তারের কাছে যেতে দিতো না। বরং হুমায়ন আমার মেয়েকে বলতো আমি ওষুধ কোম্পানির লোক বড় বড় ডাক্তারের সাথে আমি ওঠাবসা করি। সব ধরনের রোগের চিকিৎসা আমার জানা আছে। আমি ডাক্তারের কাছে শুনেছি এগুলো ভ্যাকসিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। ঘরোয়া ভাবে চিকিৎসা করতে বলেছেন। তাই সে নিজে এর চিকিৎসা দিতো। রোগ সম্পর্কে তাকে কোন রকম জানতে দেয়া হতোনা। এক পর্যায়ে আমার মেয়ে আমাকে এবং আমার ছেলেদের নিকট বিষয়টি প্রকাশ করে। আমরা এ ঘটনা সরল বিশ্বাসে স্বাভাবিক মনে করি।

তিনি বলেন, হুমায়ন আমার মেয়ের শরীরে ইনজেকশান পুশ করার পর থেকে নানা অজুহাতে সে বাড়ীতে কোন খাবার খেতো না। সুকৌশলে সে হোটেলে অথবা অন্যত্র খাবার খেতো। দীর্ঘ প্রায় এক বছর যাবৎ আফরোজা মারাতœক অসুস্থ থাকলেও তাকে ডাক্তার দেখানো হয়নি। এক পর্যায়ে মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে গত ১৪/ ০৮/২০২৩ তারিখে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর ১৬/০৮/২০২৩ তারিখে আফরোজার রক্ত পরীক্ষা করে এইডস সনাক্ত হয়। পরদিন আমার জামাই হুমায়নের রক্ত পরীক্ষা করা হয় কিন্তু তার নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। এর একদিন পর গত ১৮/০৮/২০২৩ তারিখে আমার মেয়ে সেখানে মৃত্যু বরণ করে। নরপশু পরসম্পদলোভী জামাতা হুমায়ন আমার মেয়ে আফরোজাকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফেলে রিপোর্টের কাগজ নিয়ে পালিয়ে যায়। আমার মেয়ের মৃত্যুর ৬ মাস পূর্বে হুমায়ন সুকৌশলে তার ডিবি ফান্ডের ২ লাখ ৫০হাজার টাকা উত্তোলন পূর্বক আত্মসাৎ করে। এছাড়া মৃত্যুর দুই দিন পর মৃত্যুর বিষয়টি গোপন করে সোনালী ব্যাংকে আমার মেয়ের একাউন্ট হতে ৪০ হাজার টাকা উত্তোলন পূর্বক আত্মসাৎ করে।

তিনি আরো বলেন, আমার একমাত্র নাতি (আফরোজার) শিশু কন্যা আফরা ইয়াসমিনও এইচ.আই.ভি রোগে আক্রান্ত। তাকেও ওই নরপশু কোন চিকিৎসা করায় না। সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি এ সময় তার মেয়ে আফরোজা হত্যাকারী নরপশু জামাই হুমায়নের উপযুক্ত শাস্তির দাবীতে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশ সুপারের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন