রাজনীতি ডেস্ক:
লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের শূন্যপদে উপনির্বাচনে ব্যালট বইয়ে নৌকা মার্কায় অনবরত সীল মারার ঘটনায় সেই আজাদ হোসেনকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আজাদের বড় ভাই আলমগীর হোসেন, চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম মাসুদুর রহমান মাসুদ ও স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহানারা বেগম রুমি সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আজাদ লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দিঘলী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ খাগুড়িয়া গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে। নৌকায় অনবরত সীল মারার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন তিনি।
আজাদের বড় ভাই আলমগীর হোসেন বলেন, ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর মোবাইল রেখে আজাদ আত্মগোপনে চলে যায়। সে কোথায় ছিল, কিভাবে ছিল কিছুই জানা ছিল না। খবর পেয়েছি শুক্রবার ভোর ৬টার দিকে চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদের বাসা থেকে পুলিশের স্পেশাল টিম তাকে তুলে নিয়ে গেছে। আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, আজাদ এখন পুলিশ সুপার কার্যালয়ে রয়েছে।
চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম মাসুদুর রহমান মাসুদ বলেন, আমি বাড়ি ছিলাম না। বাড়ি থেকে জানানো হয়েছে, আজাদ ভোরে আমাদের বাড়িতে আসে। পরে তাকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। ধারণা করা হচ্ছে- পুলিশ আগ থেকেই ওঁৎ পেতে ছিল।
মাসুদের বোন ও চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত সদস্য শাহানারা বেগম রুমি সাংবাদিকদের বলেন, ডিবি পুলিশ পরিচয়ে আমাদের বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালানো হয়েছে। আমাদের মোবাইল নিয়ে গেছে। তারা আমাদেরকে মারধর করেছে। পরে আজাদকে তুলে নিয়ে যায়।
এর পর থেকে পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের ফোন রিসিভ করছেন না। তবে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি সাহাদাত হোসেন টিটো সাংবাদিকদের বলেন, আজাদকে আটক করা হয়েছে কি না, তা আমার জানা নেই। এটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলতে পারবে।
প্রসঙ্গত,রোববার (৫ নভেম্বর) লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের ১টি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়নের ১১৫টি কেন্দ্রে উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এরমধ্যে দিঘলী ইউনিয়নের দক্ষিণ খাগুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আজাদ ব্যালট বইয়ে নৌকায় মার্কায় অনবরত সীল মারেন। এ ঘটনার ৫৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজাকি যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এ ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে গেজেট প্রকাশ স্থগিত রেখেছে নির্বাচন কমিশন। একই সঙ্গে জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার ও উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তাকে পৃথকভাবে ঘটনাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। তদন্ত চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।