হোম খুলনাঝিনাইদহ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে আইন শৃঙ্খলা অবস্থার চরম অবনতি, হঠাৎ করেই বেড়েছে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই

কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি:

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় হঠাৎ করেই চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই এবং খুন-খারাবি বেড়ে গেছে। আগে কখনও এমনটা ঘটেনি দাবি করে স্থানীয়রা বলছেন, চুরি-ডাকাতির ভয়ে রাতে ঘুমানোও মুশকিল হয়ে গেছে, সাধারণ মানুষ চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন মহল।

তবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, এ ধরনের ঘটনা ঠেকাতে নিয়মিতই অভিযান চালাচ্ছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। নানা অপরাধে আসামীদের গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। বিশেষ করে চুরির ঘটনা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। চুরি-ডাকাতির অধিকাংশই রাতের বেলা বিভিন্ন বাসা-বাড়ি এবং দোকানে সংঘটিত হচ্ছে। চুরি হচ্ছে ব্যবসায়ীদের টাকা-পয়সাসহ বিভিন্ন মালামাল।

গত ২৫ অক্টোবর আড়পাড়া গ্রামের দুপুর ২ টার সময় বাড়ির সামনে থেকে এফজেড মটর সাইকেল চুরি, ১৫ অক্টোবর রাতে মস্তবাপুর গ্রামের রবিন দাসের বাড়ি থেকে ঘরের দরজা ভেঙ্গে ৪ লাখ টাকার মালামাল চুরি হয়। ১৪ ও ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে গোবরডাঙ্গা গ্রামের বাবুল আক্তারের ও হরিগোবিন্দপুর গ্রামের আজাদের মটর সাইকেল চুরি। বিশেষ করে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে গরু চুরি হওয়ার কারণে কৃষকরা সর্বশান্ত হয়ে পড়ছে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর পিরোজপুর গ্রাম থেকে গৌর চন্দ্র বিশসের দুটি, ফুলবাড়ি গ্রামের রহিমের দুটি গরু, ঝনঝনিয়া গ্রামের থেকে মতিয়ার রহমানের ১টি, ইসলাম খানের ২টি, ঝন্টু খানের ১টি দিপু খানের ২টি গরুচুরি রাতে গোয়াল ঘর থেকে চুরি করে নিয়ে যায়। ১০ সেপ্টেম্বর বুজিডাঙ্গা ও ভাতঘরা গ্রামের শিমুলের ১টি,কামারুল ইসলামের ২টি গরু হয়। বাদেডিহি গ্রামের মানিক, আলমগির, ইব্রাহীমের ও ফরিদুলের পৃথক ৪টি ৪টি অটো ভ্যান, পিরোজপুর গ্রামের ইউনুচের ২টি অটোভ্যান চুরি হয়। ১৩ সেপ্টেম্বর কালীগঞ্জ নলডাঙ্গা সড়কের পাইকপাড়া নামক স্থান থেকে এনজিও কর্মির টাকার ব্যাগ ছিনতাই হয়। ১৪ সেপ্টেম্বর গোবরডাঙ্গা গ্রামের বাবুল আক্তারের ১৫০ সিসি পালসার মোটর সাইকেল বাড়ির গ্রীল কেটে নিয়ে যায়। ১৫ সেপ্টেম্বর হরিগোবিন্দপুর গ্রামের আজাদের ব্যবহারিত কালো রং এর ১১০ সিসি মোটর সাইকেল চাপরাইল বাজার থেকে চুরি হয়। ১৬ সেপ্টেম্বর লস্কার ট্রেডার্স এর সাটার খুলে ক্যাস বাস্ক থেকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা নিয়ে যায়। ৩জুন শিমলা গ্রামের শাহাদৎ মইজ উদ্দিনের বাড়ির তালা ভেঙ্গে একটি ইজিবাইক ও ঘরে থাকা ৩২হাজার টাকা চুরি হয়ে যায়। ২৩ সেপ্টেম্বর খামার মুন্দিয়া গ্রামের মসজিদের আইপিএস এর ব্যাটারি, ২৪ সেপ্টেম্বর মোল্যাকুয়া গ্রামের রাসেদুল ইসলামের সেচ পাম্পের মোটর লাইনের বিদ্যুতিক ট্রান্সমিটার চুরি, ফিরোজ ইকবাল সেচ মোটর ডিপের লাইনের আরো তিনটি ট্রান্সমিটার চুরি হয়।সাত দিনের ব্যবধানে ১০ টি বড় গরু চুরি ১৫ সেপ্টেম্বর রওশন আলী খানের দুইটি গরু এিকই ওই রাতে মতিয়ার রহমান গাভী গরু, দিপু খানের একটি গাভী ও একটি ষাঁড় গর মুকুল হোসেন খানের একটি গরু চুরি করে নিয়ে যায়। বুজিডাঙ্গা মনদিয়া ও ভাতঘারা গ্রাম থেকে এক রাতে ৩ জন খামারির ৪ টি গরু চুরি হয়ে যায়। ৩ সেপ্টেম্বর কাকলাশ গ্রামের এক মহিলা কে ধর্ষনের অভিযোগে মশিয়ার রহমান আটক। একই রাতে বারোবাজার তেল পাম্পের সামনে বিদ্যুতের পিলারের সাথে গলায় ফাস লাগানো গোকুল কর্মকারের লাশ উদ্ধার।২৭ জুলাই জামাল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দু, পক্ষের সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়। ২৩ জুলাই দামোদরপুর গ্রামের ইট ভাটার পুকুর থেকে বিল্লাল হোসেনের লাশ উদ্ধার। ১২ জুলাই দুপুরে মালিয়াট গ্রামের ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন কে জবাই করে হত্যা করে। ৯ জুলাই রাত ১২ টার দিকে শহরের মাষ্টারপাড়ার মেহেদি হাছান কে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করে। ২৫ জুন ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে নিয়ামতপুর গ্রাম থেকে মনিরুলের ইজিবাইক ছিনতাই করে। ১৬ এপ্রিল বেথুলি গ্রামের চালক আজিম কে কুপিয়ে হত্যা করে। ২৬ মে দুই ভাই মাহাবুব রহমান ও সুলতান মাহমুদ কে কুপিয়ে জখম করে। ৪ মে শাীলখা গ্রামের পান চুরির অভিযোগে সুয্য মাল কে পিটিয়ে হত্যা। ৩০ মার্চ রাতে শহরের তিন ব্যবসা প্রতিষ্টান থেকে ৯ ব্যারেল সোয়াবিন তেল চুরি। ৩ মার্চ রাতে ছাগল ব্যবসায়ির ১২ লাখ টাকা ছিনতাই। ৩ মার্চ শহরের রেজা হোমিও হল থেকে বিশাক্ত স্প্রিট পান করে জাহাঙ্গির খা, বিপুল দাস ও রাজিব হোসেন মারা যায়। ১১ জানুয়ারি তেলকুপ গ্রামের আসাদুল ও দুলালমুন্দিয়া গ্রামের আসলামের মটর সাইকেল ছিনতাই। ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে চিনিকলের সড়কে আফ্রিদির মটর সাইখেল ও মোবাইল ফোন ছিনতাই করে নিয়ে যায়। ১৯ জানুয়ারী দুলালমুন্দিয়া বাজারে পল­ী বিদ্যুতের ব্যবহৃত নিশান এল পি জি ফিলিং ষ্টেশনের তিনটি ট্রান্সফর্মার চুরি হয়। বাগডাঙ্গা গ্রামে পুলিশ সুপার (এসপি) কানাই লাল সরকারে বাড়িতে বাড়ির বারান্দার গেটের তালা ভেঙ্গে বৃটিশ আলম থেকে জমিয়ে রাখা তামা,কাসা ও পিতলের তৈরী প্রায় ৬০ কেজি মালামাল লুট করে। নিয়ে যায় চুরির খবর পেয়ে পরের দিন সকালে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো : আবদুর রহিম মোল্লা, জেলা পিবিআই পুলিশ ও ডিএসবির সদস্যরা ঘটনাস্থালে পরিদর্শন করেন।

এই ব্যপারে কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহাবুবুর রহমানের কাছে জানান, ডাকাতের আসামি ধরা পড়েছে, চুরি ট্রাক উদ্ধার হয়েছে। গাড়ির টায়ার চোর ধরা পড়েছে ধর্ষণ ও মার্ডার মামলার আসামি আটক হয়েছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন