অনলাইন ডেস্ক:
অপহরণের নাটক সাজিয়ে বাবা কাছ থেকে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন এক মাদ্রাসা ছাত্র। উদ্দেশ্য বাবার কাছ থেকে মুক্তিপণের টাকা নিয়ে কিনবেন আইফোন। তবে উদ্দেশ্য হাসিল হওয়ার আগেই ধরা পড়েন ওই যুবক।
রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে বগুড়ার গাবতলী মডেল থানা পুলিশ কথিত অপহৃত ৯ম শ্রেণির ওই মাদ্রাসাছাত্রকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় তার চাচাতো ভাইসহ দুই সহযোগীকে আটক করা হয়েছে।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) গাবতলী মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক মোন্নাফ আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গাইবান্ধার আলতাফুর রহমান নামে এক ব্যক্তি গত রোববার দুপুরে থানায় অভিযোগ করেন যে, তার ছেলে গাবতলী উপজেলার নশিপুর এলাকায় একটি আবাসিক মাদ্রাসায় ৯ম শ্রেণিতে পড়ালেখা করে। ঢাকা থেকে কুরিয়ার সার্ভিসে আসা বই উত্তোলনের কথা বলে গত ১৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে ওই ছাত্র মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়।
১৬ সেপ্টেম্বর রাত ১১টার দিকে তার বাবার মোবাইলে ফোন করে বলা হয়- তার ছেলেকে অপহরণ করে আটকে রাখা হয়েছে। কয়েকজন লোক একটি ঘরে তাকে আটকে রেখেছে। তখনই অন্য আরেকজন ফোন কেড়ে নিয়ে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা দিতে না পারলে তার ছেলেকে খুন করে লাশ গুম করবে ও বিভিন্ন ধরণের ক্ষতি করবে জানিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এরপর থেকে ওই ফোন নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।
আলতাফুর রহমানের অভিযোগের পর জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও গাবতলী থানা পুলিশের যৌথ টিম অভিযান চালিয়ে রোববার রাত ৯টার দিকে তিনমাথা রেলগেট এলাকা থেকে ওই মাদ্রাসা ছাত্রকে উদ্ধার করে। এ সময় তার চাচাতো ভাই খায়রুল ইসলাম লিমন (২০) ও মেহেদী হাসান(২২) নামে দুই যুবককে আটক করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা জানিয়েছেন, গত ১০ সেপ্টেম্বর বিকেলে অপহরণের নাটক সাজিয়ে পরিবারের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ওই মাদ্রাসাছাত্র নিজেই একটি মূল্যবান মোবাইল ফোন কিনবে এবং বাকিরা অবশিষ্ট টাকা ভাগ করে নেবে এমন পরিকল্পনা করে।
১৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে ভিকটিম পরিকল্পনা অনুসারে কুরিয়ার থেকে বই নিয়ে আসার কথা বলে মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে লিমনের সঙ্গে বগুড়ার সাতমাথায় দেখা করে। তারা লিমনের মেসে যায়। সেখানে লিমনের রুমমেট আকাশ এবং পাশের রুমের মেহেদীকে সঙ্গে নিয়ে পরিকল্পনা মতো আকাশ ও ওই মাদ্রাসাছাত্র বগুড়া সদর থানাধীন পীরগাছা থেকে তার বাবাকে ফোন করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে মোবাইল ফোন বন্ধ করে একত্রে মেসে এসে আত্মগোপন করে।
তবে এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো মামলা না করায় আটকদের মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।