হোম এক্সক্লুসিভ এডিসি হারুনের বিয়েকে কেন্দ্র করে প্রকৃত তথ্য তুলে ধরলেন ডাঃ মনোয়ার হোসেন

সংকল্প ডেস্ক:

ছাত্রলীগ নেতাকে বেদম প্রহারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এডিসি হারুন ও এডিসি সানজিদাকে নিয়ে বিগত কয়েক দিনে বিভিন্ন পত্র পত্রিকা, টিভি চ্যানেল বা সোস্যাল মিডিয়ায় কম জল ঘোলা হয়নি। এতকিছুর মাঝে শনিবার বিকালে খুলনা মেডিকেল কলেজের Surgical Oncology বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ মনোয়ার হোসেন তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে এডিসি হারুনের বিয়েকে কেন্দ্র করে প্রকৃত তথ্য তুলে ধরেন।

ডাঃ মনোয়ার হোসেনের ফেসবুক পোস্টটি নিচে তুলে ধরা হলো।
#হারুনেরবিয়ে
২০১২ সালে সব ছেড়ে ছুড়ে ক্যান্সার সার্জারী পড়তে গিয়ে শাহবাগে জুনিয়রদের সাথে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পিছনে মেসে উঠলাম। মহাখালী ক্যান্সার হাসপাতাল থেকে ফিরে প্রতিদিন জাতীয় যাদুঘরের সামনে বিকেলের অবসরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একঝাক ছাত্রের সাথে পরিচয় হয়ে গেলো, এদের সবার বাড়ি সাতক্ষীরা, কেউ কেউ আবার বেশ প্রভাবশালি নেতা। কেনো জানি জুনিয়ররা সবসময় আমাকে আপন করে নেয় এবং সমীহ করে।সম্ভবত বয়স বাড়লেও আমার চিন্তাভাবনা এবং কাজকর্মের ভিতর তরুন সুলভ ভাব থাকতো, ফলে এরা আমাকে তাদেরই একজন মনে করতো।

এই সব তরুনদের ভিতর একজন ছিলো হারুন, তখন সম্ভবত সে বিসিএস পুলিশে যোগদানের অপেক্ষায়। এরপর ট্রেনিং শেষ করে তার প্রথম পোস্টিং সম্ভবত মানিকগন্জে। হারুন প্রায়ই ফোন করে তার জন্য বিয়ের পাত্রী দেখার অনুরোধ করতো, চিকিৎসক ছাড়া সে বিয়ে করবেনা। আমিও মেডিকেলে তার জন্য আমার বেশ কয়েকজন ছাত্রীর কাছে প্রস্তাব দিলাম, পাত্রী দুই একজন খুলনায় দেখাও হলো কিন্তু ব্যটে বলে এক হচ্ছিলো না।এর ভিতর হারুনের মায়ের পায়ে এক ধরনের বড়ো টিউমার ধরা পড়লে আমি সেটা ম্যানেজ করি আমার আরও সিনিয়র কলিগদের নিয়ে। হারুনের বাবা একজন শিক্ষক , আর মা গৃহিনী, দুজনই একেবারে সরলসোজা, সাদাসিধা মানুষ।

২০২১ সালে করোনার ভিতর একদিন হারুন নিজেই আমাকে ফোন করে জানালো, সে চিকিৎসক পাত্রী দেখেছে, পাত্রীর বাড়ি আমার গ্রাম কুশখালীর পার্শ্ববর্তী তলুইগাছা, এবং পাত্রীর বাবা আমার পরিচিত ,আমার সম্মতি ছাড়া এই বিয়ে হবে না। আমি খোজ নিয়ে দেখলাম মেয়ের বাবা অধ্যাপক রফি উদ্দিন, সাবেক শিক্ষক ,রাষ্টবিজ্ঞান, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ। রফি চাচারা কয় ভাই আমার বাবা চাচাদের ছোট বেলার বন্ধু ,একেবারে পরিবারের সদস্য মতো। যাইহোক রফি চাচার সাথে যোগাযোগ করলাম , চাচা হারুন সম্পর্কে জানতে চাইলে আমি ওকে বলে দিলাম, কারন হারুনের গত দশ বছরের মুভমেন্ট আমার জানা।

সেই করোনার ভিতর খুব ছোট পরিসরে হারুনের বিয়ে হয়ে গেলো। দুই পরিবারের সেতু বন্ধন হিসাবে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব হিসাবে আমিই উপস্থিত ছিলাম।

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া দু:খজনক, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পর থেকে সোস্যাল এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় একটি ছবি ভেসে বেড়াচ্ছে ,যেখানে দাবী করা হচ্ছে ছবির মেয়েটি ছাত্রীকালীন সানজিদা। কিন্তু আসল সত্য হলো এটাই হারুনের প্রকৃত স্ত্রী ,আমার রফি চাচার কন্যা ডা. ফারিহা তাসনিম।

গুজব মানুষকে এতোটাই অন্ধ করে দেয় যে ,তাদের আর ছবির দিকে ভালো করে তাকানোর সময় নেই।

গত কয়েকদিন ধরে এই বিতর্কিত এবং স্পর্শকাতর ব্যাপার থেকে দূরে ছিলাম, কিন্তু আমার পরামর্শে হওয়া একটা বিয়ে, এবং মেয়েটা আমার বোনের মতো, যিনি একজন নারী চিকিৎসক ,তাকে নিয়ে এই গুজব সহ্য করা কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। আজ সকালে রফি চাচা ফোনে অনুরোধ করলেন যেনো আমি তাদের হয়ে একটু প্রতিবাদ করি, তারা মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত ,তাই বাধ্য হয়ে এই লেখা, কারুর কোনো কাজের সাফাই গাওয়া আমার উদ্দেশ্য না।

আবার বলছি ,নিচের ছবির মেয়েটি হারুনের স্ত্রী ডা. ফারিহা , এটা সানজিদা কিম্বা অন্য কোনো মহিলার ছবি নয়।
ধন্যবাদ।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন