আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মার্কিন সেনাবাহিনীতে বর্ণবাদের কারণে পালিয়ে এসেছেন সেনা সদস্য ট্রাভিস কিং। এমনটাই বলেছে উত্তর কোরিয়া। কোরীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ। খবর বিবিসির।
গত মাসে (১৮ জুলাই) দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্ত পেরিয়ে উত্তর কোরিয়ায় অনুপ্রবেশ করেন ২৩ বছর বয়সী সেনা ট্রাভিস কিং। অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ওইদিনই তাকে আটক করা হয়। কিন্তু প্রায় দুই সপ্তাহ পর গত ৩ আগস্ট পিয়ংইয়ং জানায়, ট্রাভিস কিং তাদের হেফাজতে রয়েছে।
কেসিএনএ জানিয়েছে, আটকের পর ট্রাভিস কিংকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে কোরীয় কর্তৃপক্ষ। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি অবৈধভাবে উত্তর কোরিয়ায় প্রবেশের কথা স্বীকার করেছেন।
তবে এর পাশাপাশি বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্যও দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, মার্কিন সেনাবাহিনীতে অমানবিক আচরণ ও বর্ণবাদী বৈষম্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ থেকে পালানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। মূলত গত ১৮ জুলাইয়ের পর থেকে ট্রাভিস কিংয়ের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। ধারণা করা হচ্ছিল, উত্তর কোরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন তিনি।
ট্রাভিস কোথায় আছেন, সে বিষয়ে প্রাথমিক তথ্যের জন্য উত্তর কোরিয়ার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্তে দায়িত্বরত ইউএন কমান্ড।
গত ৩ আগস্ট ইউএন কমান্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাদের অনুরোধক্রমে ওই সেনার অবস্থান সম্পর্কে প্রাথমিক জবাব দিয়েছে পিয়ংইয়ং। তবে তার ব্যাপারে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানায়নি। এদিকে তাকে নিয়ে কোনো তথ্য না পাওয়ায় ক্রমেই উদ্বেগ বাড়ছে। তবে বসে নেই যুক্তরাষ্ট্র। তার মুক্তির জন্য ইউএন কমান্ডের মাধ্যমে আলোচনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
কেসিএনএ’র তথ্য মতে, ট্রাভিস কিং আরও বলেছেন, বৈষম্যপূর্ণ মার্কিন সমাজের ব্যাপারে বীতশ্রদ্ধ। তিনি আরও যুক্তরাষ্ট্রে ফিরতে চান না। তিনি উত্তর কোরিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশে রিফিউজি বা আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে থাকতে চান।
ট্রাভিস কিং একজন প্রাইভেট সেকেন্ড ক্লাস পদমর্যাদার মার্কিন সেনা। মার্কিন সেনা হিসেবে তিনি মূলত দক্ষিণ কোরিয়ায় দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে কারাগারে পাঠানো হয়। তবে সম্প্রতি তাকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছিল। এজন্য তাকে দক্ষিণ কোরিয়ার সেনা ঘাঁটি হামফ্রেস থেকে ছেড়ে দেয়া হয়।
কিন্তু ট্রাভিস যুক্তরাষ্ট্রে ফেরার বিমানে ওঠেননি। দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচেন বিমানবন্দরের কাস্টমস থেকেই হঠাৎ গায়েব হয়ে যান। তিনি কোনোভাবে টার্মিনাল থেকে বেরিয়ে উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট সিকিউরিটি এরিয়ায় (জেএসএ) সীমান্ত পেরিয়ে উত্তর কোরিয়ায় প্রবেশ করেন।