জাতীয় ডেস্ক:
চাঁপাইনবাবগঞ্জে দীর্ঘ এক যুগ ধরে মাদকের ব্যবসা করে আসছিলেন স্বামী-স্ত্রী। স্বামীর নামে রয়েছে ৬টি মাদক মামলা। আগামীতে আর কোনোদিন মাদকের কারবার না করার ঘোষণা দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তারা। ফিরতে চান স্বাভাবিক জীবনে। মাদকের ব্যবসা ছেড়ে দেয়ার পরেও যাতে কোনো হয়রানির শিকার না হতে হয় এমন চিন্তা থেকে প্রকাশ্য এ ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের গোয়াটুলি ফুনকির মোড় গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে মজিবুর রহমান ওরফে টুটুল ও তার স্ত্রী এমালী বেগম হেরোইন, ইয়াবা ও গাঁজা বিক্রি করতেন। আদালতে চলমান ৬টি মামলার ৫টিই হেরোইনের ও একটি ইয়াবার। নিজের ভুল বুঝতে পেরেই আর মাদকের কারবার না করার ঘোষণা টুটুলের।
বুধবার (০২ আগস্ট) দুপুরে জেলা শহরের বিশ্বরোড মোডের একটি অফিসে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মাদক ব্যবসায়ী মজিবুর রহমান ওরফে টুটুল বলেন, ‘আমি গত ১২ বছর ধরে গাঁজা, হেরোইনসহ বিভিন্ন মাদক কারবারির সঙ্গে জড়িত ছিলাম। গত দুই মাস আগে আমার স্বাভাবিক জ্ঞান ফিরেছে। এতে আমি বুঝতে পেরেছি আমি ভুল পথে হাঁটছিলাম। তাই এই চিন্তা থেকেই আমি মাদক ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু এলাকাবাসী আমাকে মেনে নিচ্ছে না। তারা আমাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে। তাই বাধ্য হয়ে সংবাদ সম্মেলন করছি। আমি সবার মতো স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাই।’
মাদক সেবন থেকেই মাদকের ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন টুটুল। বারবার নিষেধ করেও স্বামীকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি বলে দাবি তার স্ত্রী এমালী বেগমের। বছরে ৬ মাস ব্যবসা করলেও বাকি সময় আমের ব্যবসা করতেন বলে দাবি এমালীর। আর এমন পথে না যাওয়ায় প্রতিশ্রুতি তার।
সংবাদ সম্মেলনে এমালী বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী দুই মাস আগেই মাদক ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছে। কিন্তু মানুষ আমাদের এখনও খারাপ চোখে দেখছে। এতে আমাদের বিভিন্ন হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। আমি ও আমার স্বামী স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাই। আমার স্বামীর নামে এখনও ৬ মাদক মামলা রয়েছে। মামলাগুলোতে তিনি জামিনে আছেন।’
প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে মাদক ব্যবসা থেকে সরে আসার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে সহযোগিতার আশ্বাস পুলিশের।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবুল কালাম সাহিদ বলেন, এমন উদ্যোগকে আমরা সাদরে গ্রহণ করব। এমনকি তাকে দেখে অন্যরাও মাদক ব্যবসা থেকে ফিরে আসতে চাইলে সহযোগিতা করা হবে।