হোম আন্তর্জাতিক টাইফুন খানুন: জাপানে শত শত ফ্লাইট বাতিল, হাজারো মানুষকে সরে যাওয়ার আহ্বান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

জাপানের দক্ষিণাঞ্চলের দিকে ধেয়ে আসছে একটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। এদিকে ওই অঞ্চলে বিমানের শত শত ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া ওই অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। খবর এএফপির।

টাইফুন ‘ডকসুরি’র প্রভাব শেষ হতে না হতেই প্রশান্ত মহাসাগরে সৃষ্টি হয়েছে আরও একটি টাইফুন তথা ঘূর্ণিঝড়। জাপানের দক্ষিণাঞ্চলে ধেয়ে আসছে ‘খানুন’ নামে শক্তিশালী ও বড় আকারের এ ঝড়টি। মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে প্রশান্ত মহাসাগরে সৃষ্ট তৃতীয় কোন ঘূর্ণিঝড়টি এটি।

প্রশান্ত মহাসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড়কে ‘টাইফুন’ বলা হয়। চীন, তাইওয়ান, ফিলিপিন্স ও জাপানে প্রায় প্রতিবছর একাধিক টাইফুন আঘাত হানে। খবরে বলা হয়, প্রশান্ত মহাসাগর অতিক্রম করার সময় টাইফুন খানুনে’র গতিবেগ এখন ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৬২ কিলোমিটার। এটি মঙ্গলবার (১ আগস্ট) রাতে জাপানের ওকিনাওয়া অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জাপানের আবহাওয়া সংস্থা ওকিনাওয়ার দ্বীপপুঞ্জে ১২ মিটার (৩৯ ফুট) উচ্চতার সামুদ্রিক ঢেউ আছড়ে পড়ার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এ অঞ্চলের বিভিন্ন নগরীর প্রায় ৩ লাখ ৭০ হাজার লোককে নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

সংস্থাটি তাদের সর্বশেষ হালনাগাদ করা তথ্যে বলেছে, ঝড়টি আঞ্চলিক রাজধানী নাহা থেকে প্রায় ২৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে রয়েছে। তারা এটিকে ‘অনেক শক্তিশালী’ একটি ঝড় হিসেবে বর্ণনা করে। নাহা’র কর্মকর্তারা জানান, এ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে প্রবল বাতাস এবং ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এ কারণে তারা ঝুঁকির মুখে থাকা বাসিন্দাদের আরো নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

ওকিনাওয়া আঞ্চলিক সরকারের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এ অঞ্চলের অনেক মানুষের বাড়ি কংক্রিটের তৈরি বলে তারা তাদের বাড়িতেই অবস্থান করে থাকে। কিন্তু যারা একাকী বা নিচু এলাকায় কাঠের বাড়িতে বাস করে আমরা তাদেরকে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার আগেই নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার কথা বিবেচনা করতে বলেছি।’

এদিকে জাপানের জাতীয় সম্প্রচার কেন্দ্র এনএইচকে জানিয়েছে, এমন দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে মঙ্গলবার ও বুধবার অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক মিলিয়ে ৯০০টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। স্থগিত করা হয়েছে আঞ্চলিক ফেরি ও বাস পরিষেবা। জাপান এয়ারলাইন্স ও অল নিপ্পন এয়াওয়েজ জানিয়েছে, ফ্লাইট বাতিলের কারণে ৭৪ হাজারেরও বেশি যাত্রী ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এর আগে গত সপ্তাহে প্রশান্ত মহাসাগরে তৈরি হয় প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ডকসুরি’। এরপর এটা সুপার টাইফুনে রূপ নিয়ে গত মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) রাতে প্রথমে ফিলিপিন্সের উত্তরাঞ্চলে ফুগা দ্বীপে আঘাত হানে। এর প্রভাবে ফিলিপিন্সের বহু এলাকা প্লাবিত হয়। একইসঙ্গে দেখা দেয় ভূমিধস। অনেককে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হলেও দেশটিতে টাইফুনের আঘাতে অন্তত ৭ জনের মৃত্যু হয়। ঘরছাড়া হয়ে পড়ে বহু মানুষ।

এরপর ডকসুরি কিছুটা দুর্বল হয়ে বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) সকালে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৯১ কিলোমিটার গতিতে তাইওয়ানে আছড়ে পড়ে। পরদিন তথা শুক্রবার (২৮ জুলাই) এটি চীনের পূর্বাঞ্চলে পৌঁছায়। ডকসুরির প্রভাবে চীনের রাজধানী বেইজিংসহ বিভিন্ন অঞ্চলে এখনও প্রবল বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এরই মধ্যে দেশটিতে অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া লাখ লাখ মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন