হোম অর্থ ও বাণিজ্য পরিবেশদূষণ ঠেকাতে মৌলভীবাজারে পলিথিন বিক্রির হাট

বাণিজ্য ডেস্ক:

পরিবেশদূষণ ঠেকাতে প্লাস্টিক ও পলিথিন নির্মূলে প্রথমবারের মতো মৌলভীবাজারে পরিত্যক্ত প্লাস্টিক ও পলিথিন বিক্রির হাট বসেছে।

রোববার (৯ জুলাই) ব্যতিক্রমধর্মী এই হাটে এক দিনেই ৫০০ কেজি প্লাস্টিক ও পলিথিন বিক্রি হয়েছে।

মৌলভীবাজার পৌরসভা নগদ ২৫ হাজার টাকা দামে এসব প্লাস্টিক ও পলিথিন কিনেছে। এ হাটে পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের অর্ধশত নাগরিক পলিথিন আর পরিত্যক্ত প্ল্যাস্টিক বিক্রি করতে আসেন।

এদিন দুপুর থেকেই পৌর মেয়র চত্বরজুড়ে খেটে খাওয়া সাধারণ নিম্ন আয়ের মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। তাদের কেউ কাঁধে করে পলিথিনের বস্তা নিয়ে এসেছেন, আবার কেউবা মাথায় বস্তা নিয়ে হাজির। তারা সবাই কুড়িয়ে আনা পরিত্যক্ত প্লাস্টিক ও বিভিন্ন আকারের পলিথিন বিক্রি করেন।

সরেজমিন জানা গেছে, পরিত্যক্ত প্লাস্টিক বিক্রি করতে আসা সবাই মৌলভীবাজার পৌর এলাকার নাগরিক। তবে অধিকাংশ সবাই খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ।

দিনমজুর ফয়জুর রহমান জানান, শুনেছি পৌরসভা ৫০ টাকা কেজি দরে পলিথিন ও প্লাস্টিক কিনে নেবে। তাই শহরের অলিগলি এমনকি ড্রেনে পড়ে থাকা পলিথিন সারা দিন কুড়িয়ে বিক্রি করতে এনেছি। ২ হাজার ২০০ টাকার পলিথিন বিক্রি করেছি।

মুক্তা ভাস্কর নামের এক নারী জানান, তিনি আট কেজি পলিথিন নিয়ে এসেছেন। পৌরসভা ৮০০ টাকা দিয়েছে। এতে তার খুব উপকার হয়েছে। তা ছাড়া এভাবে পলিথিন কুড়ালে রাস্তাঘাট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকবে। কোথাও পানি আটকাবে না। তাই এটি একটি ভালো উদ্যোগ।

পরিবেশ দূষণকারী এ বর্জ্য পর্যটন এ শহরকে একদম গ্রাস করে নিচ্ছে উল্লেখ করে পৌরসভার মেয়র মো. ফজলুর রহমান বলেন, এতে কোনোভাবেই শহরের সৌন্দর্য ধরে রাখা যাচ্ছে না। ড্রেনে পলিথিন আটকে ড্রেনের পানি সঠিকভাবে সরবরাহ হয় না। শহরের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র খাল কোদালি ছড়া অনেক কষ্টের বিনিময়ে সংস্কার হয়েছে। অথচ লোকজনের অসচেতনতার কারণে পলিথিন ফেলে পানির স্বাভাবিক ধারা ব্যাহত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, অপচনশীল পলিথিন ও প্লাস্টিক পরিবেশের নানাবিধ সমস্যা করছে। কাজেই পৌর পরিষদের সিদ্ধান্তে পলিথিন সংগ্রহের এ কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে।

পৌর মেয়র জানান, প্রথম দিন ৫০০ কেজি প্লাস্টিক ও পলিথিন ২৫ হাজার টাকায় কিনে নেয়া হয়েছে। তবে এসব কুড়ানো পলিথিন বিক্রির টাকা পেয়ে খেটে যাওয়া মানুষজন অনেক খুশি হয়েছে।

সম্প্রতি মৌলভীবাজার পৌরসভাজুড়ে পরিত্যক্ত প্লাস্টিক ও পলিথিনদূষণ ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। কোনোভাবেই এর দূষণ ঠেকানো যাচ্ছে না। হাটবাজার থেকে শুরু করে পৌর এলাকার রাস্তাঘাট ড্রেনজুড়ে যত্রতত্রভাবে নানা উপায়ে এ পলিথিন ফেলা হচ্ছে।

তাই পলিথিনের এ হাটবাজার অব্যাহত থাকবে উল্লেখ করে পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পৌর কাউন্সিলর সৈয়দ সেলিম হক জানান, প্রতি রোববার বিকেল সাড়ে ৩টায় মেয়র চত্বরে পরিবেশ দূষণকারী এই বর্জ্য কেনাবেচার হাট বসবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন