হোম খেলাধুলা তীরে এসে ডুবল তরী, বিশ্বকাপে থাকছে না সিকান্দার রাজারা

খেলাধূলা ডেস্ক:

চমক জারি রাখল স্কটল্যান্ড। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পর জিম্বাবুয়েকেও হারাল স্কটিশরা। তাতে ঘটল ২০১৯ বিশ্বকাপেরই পুনরাবৃত্তি ঘটল এবারও। ভারতের মাটিতে হতে চলা ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলা হচ্ছে না সিকান্দার রাজা-শেন উইলিয়ামসনদের। তীরে এসে তরী ডুবল তাদের।

মঙ্গলবার (৪ জুলাই) বুলাওয়েতে স্কটল্যান্ডকে হারালেই বিশ্বকাপ খেলা নিশ্চিত হয়ে যেত জিম্বাবুয়ের। তাতে এক বিশ্বকাপ পর ফের বিশ্বমঞ্চে দেখা যেত আফ্রিকার এক সময়ের সমীহ জাগানো দলটির। কিন্তু স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৩১ রানে হেরে গেছে তারা।

২০১৯ বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের শেষ রাউন্ডে কোনমতে জয় পেলেও বিশ্বকাপ নিশ্চিত হয়ে যেত জিম্বাবুয়ের। কিন্তু সে ম্যাচে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে হেরে বসে তারা। চলতি বাছাই পর্বেও একই সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল তারা। জয় পেলেই নেদারল্যান্ডস ও স্কটল্যান্ডকে পেছনে ফেলে বিশ্বকাপ খেলা নিশ্চিত হয়ে যেত তাদের। কিন্তু হারলেই আবার পড়তে হবে বাদ। এমন ম্যাচেই কিনা পুরনো সেই সিন্দাবাদের ভূত ভর করলো জিম্বাবুইয়ানদের ঘাড়ে। জায়ান্ট কিলার স্কটল্যান্ড ওয়েস্ট ইন্ডিজের পর শিকার করলো জিম্বাবুয়েকেও। এখন তাদের সামনে ভারত বিশ্বকাপে খেলার সম্ভাবনা উঁকি দিচ্ছে।

এদিন টস ভাগ্য অবশ্য জিম্বাবুয়ের পক্ষেই ছিল। টস জিতে স্কটল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান। জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন।

উদ্বোধনী জুটিতে স্কটল্যান্ডের দুই ওপেনার ক্রিস্টোফার ম্যাকব্রাইড ও ম্যাথিউ ক্রস ৫৬ রান যোগ করেন। ২৮ রান করে ম্যাকব্রাইড চাতারার বলে বোল্ড হলে ভাঙে এই জুটি। দলীয় ১০২ রানে আরেক ওপেনার ক্রস বিদায় নেন ৩৮ রান করে। তিনি বোল্ড হন উইলিয়ামসের বলে।

এরপর কিছুটা খেই হারায় স্কটিশরা। ১০৫ রানে ব্রেন্ডন ম্যাকমুলেন ও অধিনায়ক রিচি বেরিংটন। ম্যাকমুলেন ৩৪ ও বেরিংটন ৭ রান করেন। এরপর ৩৩ রানের জুটি গড়েন জর্জ মুনশি ও টমাস ম্যাকিনটোস। কিন্তু ১৫১ রানে ম্যাকিনটোস রানআউট হয়ে যান। ১৬৮ রানে বিদায় নেন মুনশি। ৩১ রান করেন তিনি। ২ রান যোগ হতে ক্রিস গ্রেভসও বিদায় নেন। দেখতে দেখতে স্কটল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ১৭০।

স্কটল্যান্ডকে এরপর চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ এনে দেওয়ার কৃতিত্ব মাইকেল লাস্ক ও মার্ক ওয়াটের। দুজনের জুটিতে ৪৬ রান যোগ হয় স্কোরকার্ডে। ৩৪ বলে দলীয় সর্বোচ্চ ৪৮ রান করে চাতারার শিকারে পরিণত হন লাস্ক। দারুণ ইনিংসটি তিনি সাজান ৩ চার ও ২ ছয়ে।

১৫ বলে ২১ রান করেন ওয়াট। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৩৪ রান করে স্কটল্যান্ড। ১০ ওভারে ৪১ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন শেন উইলিয়ামস। ২ উইকেট নেন টেন্ডাই চাতারা।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে জিম্বাবুয়ের শুরুটাই হয়েছে দুঃস্বপ্নের মতো। প্রথম বলেই ক্রিস সোলে ফিরিয়ে দেন জয়লর্ড গুম্বিকে। দলীয় ১৩ রানে আউট হয়ে যান অধিনায়ক আরভিনও। ২৯ রানে শেন উইলিয়ামস ও ৩৭ রানে ইনোসেন্ট কাইয়াঁও বিদায় নিলে বিপদ বাড়ে জিম্বাবুয়ের। সোলে দারুণ বোলিংয়ে তছনছ করে দেন জিম্বাবুয়ের টপ অর্ডার।

সিকান্দার রাজা ও রায়ান বার্লের পঞ্চম উইকেট জুটিতে ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা জাগিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। কিন্তু ৯১ রানে রাজাও বিদায় নেন।.৪০ বলে ৮ চার ও ১ ছয়ে ৩৪ রান করেন তিনি। তার বিদায়ের পর ওয়েসলে মাধেভেরের সঙ্গে আরও একটা জুটি গড়েন বার্ল।

ভালোই এগিয়ে নিচ্ছিলেন বার্ল-মাধেভেরে জুটি। কিন্তু দলীয় ১৬৪ রানে মাধেভেরেকে এলবিডব্লিউ করে জিম্বাবুয়েকে বড় ধাক্কা দেন ওয়াট। ৩৯ বেল ৩ চার ও ১ ছয়ে ৪০ রান করেন মাধেভেরে। তার আউটের সঙ্গেই সাজঘরে মিছিল ধরে জিম্বাবুইয়ান লোয়ার অর্ডার। ১৭৭ রানে মাসাকাদজা ও ১৮২ রানে এনগারাভা ফিরে যান।

এতক্ষণ একাই চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন বার্ল। কিন্তু ১৯৭ রানে নবম উইকেট হিসেবে তিনি ফিরে গেলে হার নিশ্চিত হয়ে যায় জিম্বাবুয়ের। ৮৪ বলে ৮৩ রান করে লাস্কের শিকারে পরিণত হন তিনি। তার দারুণ ইনিংসটিতে ৮টি চার ও ১টি ছয়ের মার ছিল।

শেষ পর্যন্ত ২০৩ রানেই গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। তখনও ইনিংসের ৫৩ বল বাকি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন