নিউমার্কেটে অগ্নিকাণ্ড নিয়ে গুজব না ছড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। আজ শনিবার (১৫ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে এ প্রসঙ্গে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে তারা। করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাছের স্বাক্ষরতি বিবৃতিতে এ বিষয়ে গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর ও অনাকাঙ্ক্ষিত সংবাদ প্রচার থেকেও বিরত থাকতে আহ্বান জানানো হয়ে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আগুন লাগাকে কেন্দ্র করে কিছু অসাধু ব্যক্তি, স্বার্থান্বেষী মহল নিউ মার্কেটের সঙ্গে সংযুক্ত পদচারী সেতুর (ফুটওভার ব্রিজ) সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণে করপোরেশন কর্তৃক গৃহীত উদ্যোগকে সম্পর্কিত করার অপচেষ্টা করছেন। ফলশ্রুতিতে, গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর ও অনাকাঙ্ক্ষিত সংবাদ প্রচারিত হচ্ছে, যা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে।
এই প্রেক্ষিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সংশ্লিষ্ট সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। নিউমার্কেটে অগ্নিকাণ্ড নিয়ে ভিত্তিহীন সংবাদ ও গুজব প্রচার থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ঢাকা নিউমার্কেটের সঙ্গে সংযুক্ত পদচারী সেতুটি (ফুটওভার ব্রিজ) গতবছর ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়। তখন সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয় এবং সেতুটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সে প্রতিবন্ধকতা সরিয়ে লোকজন চলাচল করছিল, যা অত্যন্ত অনিরাপদ। এ অবস্থায় দাপ্তরিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে গত ১২ এপ্রিল সেই সেতুটির সঙ্গে মার্কেটের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল রাতে (২টা থেকে ভোর ৫টা ১৫ মিনিটের মধ্যে) সেতুর সঙ্গে মার্কেটের ২য় তলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে মার্কেটে আগুন লাগে বলে গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়। সুতরাং, অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাতের সময় থেকে আধা ঘণ্টারও বেশি আগে শেষ হয় সেতুর সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ কার্যক্রম। ফলে আগুনের সঙ্গে ব্রিজের অংশ বিচ্ছিন্ন করার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
ডিএসসিসির বিবৃতিতে বলা হয়, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল সেতু অপসারণের সঙ্গে আগুন লাগাকে একসূত্রে গাঁথার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। এই অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে করপোরেশন কর্তৃক সেতু বিচ্ছিন্নকরণের ন্যূনতম কোনো সংযোগ নেই। কারণ, সেতু বিচ্ছিন্নকরণ স্থান থেকে ৪০০ ফুটেরও অধিক দূরত্বে আগুন লেগেছে। সেতু বিচ্ছিন্নকরণে করপোরেশন কোনো গ্যাস কাটার ব্যবহার করেনি। হুইল এক্সকাভেটর ব্যবহার করে সেতু বিচ্ছিন্ন করা হয়। আর বিচ্ছিন্নকরণ স্থানে করপোরেশনের কর্মকর্তা, ডিপিডিসির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। যাতে নিরাপদে এই কার্যক্রমটি সম্পন্ন করা যায়। এ ছাড়া সেতুর সঙ্গে মার্কেটের সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণের আগে থেকেই সেতুর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অগ্নিকাণ্ডসহ যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনা কারও কাম্য নয়। তথাপি, এ ধরনের দুর্ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি কমানো ও জানমালের নিরাপত্তা বিধান করা অগ্রাধিকার। সে লক্ষ্যে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, সেনাবাহিনী, র্যাবসহ সংশ্লিষ্ট সব সরকারি সংস্থা নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। সুতরাং, দুর্যোগের এই কঠিনতম সময়ে ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ভিত্তিহীন সংবাদ ও গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
পরে বলা হয়, ‘অগ্নিকাণ্ডের প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে সবাই এগিয়ে আসি। তাহলেই গণমাধ্যম আরও বেশি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে বলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মনে করে।’