আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, রাষ্ট্র হিসেবে রাশিয়া তার অস্তিত্ব রক্ষায় লড়ছে। দেশের পূর্বাঞ্চলীয় বুরিয়াতিয়ায় একটি উড়োজাহাজ নির্মান কারখানা পরিদর্শনকালে এ কথা বলেন তিনি। খবর আল জাজিরা।
ইউক্রেন যুদ্ধের প্রতি ইঙ্গিত করে পুতিন বলেন, ‘এই যুদ্ধ আমাদের জন্য ভূ-রাজনৈতিক কোনো বিষয় নয়। এটা রুশ রাষ্ট্রের টিকে থাকার লড়াই। এ লড়াই দেশ ও আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যত নিশ্চিত করার লক্ষ্যে।’
অর্থনীতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পুতিন বলেন, গত বছর পশ্চিমারা যখন নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল, এরপর অর্থনীতি প্রত্যাশার চেয়ে বেশি শক্তিশালী হয়েছে। তার কথায়, ‘ইতোমধ্যে আমাদের অর্থনৈতিক সার্বভৌমত্ব বহুগুণ বেড়েছে। তবে আমাদের শত্রু পক্ষ বলেছিল, ২-৩ সপ্তাহে বা এক মাসের মধ্যে আমাদের অর্থনীতি ভেঙে পড়বে।’
তিনি আরও বলেন, শত্রুরা আশা করেছিল যে আমাদের কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে যাবে, আর্থিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে, বেকারত্ব বাড়বে, বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নামবে এবং রাশিয়া তার ভেতর থেকে ধসে পড়বে।’
এদিকে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্ক প্রদেশের ক্রামাতোরস্ক শহরে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৭ জন। দোনেৎস্কের বাখমুত শহরে তীব্র লড়াইয়ের মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়।ক্ষেপণাস্ত্রটি ক্রামাতোরস্ক শহরের একটি আবাসিক ভবনে আঘাত হানে।
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পুতিনবাহিনী ও ইউক্রেনীয় সেনাদের মধ্যে চলছে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন শহর বিশেষ করে বাখমুতের যুদ্ধ পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠছে বলে সোমবার (১৩ মার্চ) ভিডিও বার্তায় জানান জেলেনস্কি। বলেন, পূর্বাঞ্চলীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকার যুদ্ধের ফলাফলের ওপর নির্ভর করছে ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ। এ সময়, ইউক্রেনের যোদ্ধারা দেশটির স্বাধীনতা রক্ষা করতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
জেলেনস্কি বলেন, ‘ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের অবস্থা ভয়াবহ ও বেদনাদায়ক। আমাদের উচিত শত্রুপক্ষের সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস করে দেয়া এবং আমরা তা অবশ্যই করব। আমি প্রতিনিয়ত কমান্ডারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।’
এদিকে গুরুত্বপূর্ণ শিল্প এলাকা বাখমুত দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে রুশ সেনারা। বিশ্লেষকরা বলছেন, কৌশলগত দিক থেকে বাখমুতের গুরুত্ব তেমন না থাকলেও, পুরো দনবাস অঞ্চল দখলে শহরটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনা রাশিয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শহরটি নিজেদের দখলে নিয়ে আসা ‘বড় জয়’ হবে বলে জানিয়েছে মস্কো।