অনলাইন ডেস্ক :
ইন্সুরেন্সের মোটা অংকের টাকা দাবি করতেই কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান ইচ্ছাকৃতভাবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটায় বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিভিন্ন সময় তদন্তে এ ধরনের তথ্য বের হয়ে এসেছে বলে জানান তিনি।
বুধবার (১ মার্চ) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বীমা দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বীমা প্রতিষ্ঠান থেকে ক্ষতিপূরণ পেতে অন্যায়ভাবে বাড়তি অর্থ দাবির প্রবণতা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা সময় গার্মেন্টসে শুধু আগুন লাগত। অগ্নি নির্বাপণের ব্যাপারে বর্তমানে আমরা খুব সচেতন। কিন্তু হঠাৎ আমার নজরে পড়ল, কোনো কোনো গার্মেন্টসে কিছু দিন পর পর আগুন লাগে, যেগুলোর নাম বলব না। তারপরই ইন্সুরেন্সের টাকা চান তারা। এবার খুব মোটা অংকের টাকা চাইলেন তারা। তখন আমি ইনসুরেন্স কোম্পানিকে বললাম যে, এখন টাকা দেবেন না। আমি এটির তদন্ত করব।’
‘বিশেষভাবে তদন্ত করে দেখা গেল, ওই কারখানার এক নারী শ্রমিককে ২০ হাজার টাকা দিয়ে এমন জায়গায় আগুন দেয়া হয়, যেখানে বিশেষ কিছু ছিল না। তারা সেখানে বসে খাওয়াদাওয়া করতেন। তারপরই ইন্সুরেন্সের মোটা অংকের টাকা দাবি করে বসলেন। পরে ওই শ্রমিককে ধরা হলে, তিনি স্বীকার করেন যে তাকে দিয়ে এটা করানো হয়েছে,’ যোগ করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘ঘন ঘন একটা জায়গায় আগুন লাগবে কেন! কারণ ওই কোম্পানিটি ইন্সুরেন্সের দাবিদার হয়ে যায় আর টাকা পায়! সেক্ষেত্রে আমার অনুরোধ থাকবে, কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। কতটুকু ক্ষতি হলো, সেটা যথাযথভাবে তদন্ত করা দরকার। যথাযথভাবে তদন্ত না করে কারও চাপে পড়ে কোনো টাকা দেবেন না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সম্প্রতি আমার সামনে একটি ঘটনা এসেছে। একটি ফ্ল্যাটে এক মালিকের কাছে কত সম্পদ আছে যে, তার ৪০ কোটি টাকা নষ্ট হয়ে গেল! আগুন লাগল এক ফ্ল্যাটে। সেই ফ্ল্যাটে কোনো ইন্সুরেন্স ছিল না। কিন্তু পাশের আরেক ফ্ল্যাটে ইন্সুরেন্স ছিল। সেখানে হয়ত কিছুটা আগুন লেগেছিল, কিন্তু মোটা অংকের টাকা বের করে নিয়ে গেল। একটা ফ্ল্যাটে ৪০ কোটি টাকার মতো কী সম্পদ থাকতে পারে যে ইন্সুরেন্স কোম্পানি তাকে এই টাকা দেবে? আর যার ঘরটা পুড়ল, তার বীমা নেই। তাই সে কিছুই পেল না। বিষয়টি আমি তদন্ত করে দেখব।’
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘সতর্কতার সঙ্গে খতিয়ে দেখতে হবে ক্ষতিপূরণ। নত হওয়া যাবে না ক্ষমতাধর কারও চাপের কাছে। আপনাদেরকে দেখতে হবে, প্রকৃত ক্ষতিটা কতটুকু। দাবিদার তো বড় দাবি করবেই। কিন্তু প্রকৃত ক্ষতিটাকে যাচাই-বাছাই করতে হবে।’