সৌরভ মন্ডল, দাকোপঃ
খুলনার উপকূলীয় দাকোপ উপজেলার বানীশান্তা যৌনপল্লিতে খুলনা ব্লাড ব্যাংক ও খুলনা ফুড ব্যাংকের পক্ষ থেকে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের মধ্যে সোমবার (১৫ জুন) দুপুরে খাদ্যসহায়তা দেওয়া হয়। এদিন ৯৩ জন যৌনকর্মীকে এই সহায়তা দেওয়া হয়। অবহেলিত বানীশান্তার যৌনপল্লিতে এসব যৌনকর্মীদের মধ্যে চাল, ডাল ও আলু সহায়তা হিসেবে দেওয়া হয়। ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে ট্রলারযোগে দুর্গম জায়গায় এ ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে ছিলেন খুলনা ব্লাড ব্যাংক ও ফুড ব্যাংকের সদস্যরা।
প্রায় ৩২ বছর আগের মোংলা বন্দর অন্যরকম ছিল বলে জানান ওই পল্লির আর একজন যৌনকর্মী রাজিয়া বেগম। তিনি বলেন বন্দরে অনেক জাহাজ আসত। তখন কাজকর্ম ভাল হতো। আস্তে আস্তে জাহাজ আসা বন্ধ হয়ে গেল, সঙ্গে ব্যবসাও কমে যায়। এমনিতেই অনেকটা অসুবিধেয় দিন যাচ্ছে। তারমধ্যে করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় চার মাস হতে চলল পুরোপুরি ব্যবসা বন্ধ। এরমধ্যে আম্পান যেন মরার উপর খাড়ার ঘা। দোকান, ঘর, খাট, সৌর বিদ্যুতের প্যানেল সব ঝড়ে ভেসে গেছে। শুধু বালিশ, তোশক আর একটা পানির ট্যাংক খুঁজে পাই।
খুলনা ব্লাড ব্যাংক ও খুলনা ফুড ব্যাংকের সাধারন সম্পাদক সৌরভ গাইন বলেন, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ে। তখন মানুষের সহায়তা করার লক্ষ্যে তহবিল গঠন করে অর্থ সংগ্রহ করা হয়। পরে ওই তহবিল থেকে ঘরবন্দী মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়। এরই আওতায় আমাদের সমাজের এক শ্রেণির মানুষ যৌনকর্মীদের ঘরবাড়ি ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত হওয়ায় ও তাঁদের কাজকর্ম বন্ধ থাকায় খাদ্যসহায়তা দেয়া হয়েছে।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মফস্বল সংবাদকর্মীদের কথা ভেবে দাকোপ রিপোর্টার্স ক্লাবের ২৮ জন সদস্যদের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়।
দাকোপ রিপোর্টার্স সাধারন সম্পাদক পাপ্পু সাহার সাথে কথা হলে তিনি বলেন খুলনা ব্লাড ব্যাংক ও ফুড ব্যাংকের সদস্যরা যে মফস্বল সংবাদকর্মীদের কথা ভেবেছেন এর জন্য তাদের ধন্যবাদ ও শুভ কামনা রইল ব্লাড ব্যাংক ও ফুড ব্যাংকের সদস্যদের জন্য। তাদের এই সকল কার্যক্রম অনেক বড় মনের পরিচয় বহন করে এবং আমরা সকলে সরকারি নিয়ম মেনে চলি, মাক্স ব্যবহার করি ও ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি এই মহামারি করোনাভাইরাস ও সকল প্রাকৃতিক দূর্যোগ থেকে সকলকে রক্ষা করুক।