অনলাইন ডেস্ক :
বিএনপি চেয়ারপাসন বেগম খালেদা জিয়ার আগামী নির্বাচন ও রাজনীতিতে অংশগ্রহণের বিষয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক জানিয়েছেন, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তির আবেদনে যেসব বিষয় উল্লেখ করা হয়েছিল সেখানে রাজনীতির কোনো বিষয় ছিল না। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছিল, তাঁর (খালেদা জিয়ার) শারীরিক অবস্থা এমন ছিল, যে সুচিকিৎসা না করলে তাঁর জীবন বিপন্নও হতে পারে।’
আজ রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিচার প্রশাসন ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ‘সহকারী জজদের ওরিয়েন্টেশন কোর্স’উদ্বোধন শেষে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এসময় আইন সচিব মো. গোলাম সরোয়ারসহ আইন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে করা মুক্তির আবেদনের বিষয়বস্তু তুলে ধরে সাংবাদিকদের কাছে পাল্টা প্রশ্ন করে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এখন আপনারাই বিচার করুন- যিনি গুরুতর অসুস্থ তিনি কি রাজনীতি করতে পারেন? যদি আপনাদের বিবেচনায় হয় যে, তিনি রাজনীতি করতে পারেন- তাহলে আপনাদের বিবেচনাবোধ নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে। কিন্তু যিনি অসুস্থ তিনি রাজনীতি করতে পারবেন না, আমার মনে হয় এটাই হচ্ছে ‘বেস্ট জাজমেন্ট’।
আইনমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই- তিনি (খালেদা জিয়া) একজন স্বাধীন মানুষ। তিনি কী করবেন, সেটা আমার বলে দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু তাঁকে (খালেদা জিয়া) যখন ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় প্রধানমন্ত্রীর মহানুভবতায় মুক্তি দেওয়া হয়, তখন তাঁর অসুস্থতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে মুক্তি দেওয়া হয়। সেখানে আমরা তখন লিখে রাখিনি যে, তিনি (খালেদা জিয়া) রাজনীতি করতে পারবেন না।’
আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়া আবার রাজনীতি করতে পারবেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এখন যদি বলা হয়- খালেদা জিয়া আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কি না, সেক্ষেত্রে আমি বলবো, এটা সংবিধানে পরিষ্কারভাবেই বলা হয়েছে, কেউ দুই বছরের বেশি সময়ের জন্য নৈতিকস্খলনজনিত কারণে দণ্ডিত হলে তিনি জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। আর রাজনীতির প্রসঙ্গ এলে বলতে হবে- খালেদা জিয়াকে অসুস্থতার কারণে দুটি শর্তে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তিনি রাজনীতি করতে পারবে না বা তাঁর রাজনীতি বন্ধ রাখতে হবে, এমন কোনো শর্ত সেখানে দেওয়া হয়নি। কারণ জননেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসনিনার সরকার মনে করে- কারও এই স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করাটা ঠিক না।’
প্রসঙ্গত, দুর্নীতি দমন কমিশনের করা দুটি মামলায় আদালতের দেওয়া দণ্ড নির্বাহী আদেশে স্থগিত করে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। এরপর ৬ দফায় তার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, আগের মতো খালেদা জিয়া ঢাকার নিজ বাসায় থেকে তার চিকিৎসা নেবেন এবং এই সময়ে তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না- এ দুটি শর্তে দণ্ড স্থগিত করে সরকার।