অনলাইন ডেস্ক :
সোহাগ মিয়া ওরফে স্বজন ওরফে কাজল ওরফে হিজড়া সজনি (৩২)। তিনি দুই সন্তানের জনক। আপাদমস্তক সুস্থ। অথচ বেশ ধারণ করেন তৃতীয় লিঙ্গের। শুধু চাঁদাবাজি নয়, অপহরণ করে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে কাজল ওরফে সজনি চক্রের বিরুদ্ধে।
পুলিশ বলছে— রাজধানীতে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের ৯০ শতাংশই নকল। শুধু রাস্তায় বা বাসায় চাঁদাবাজি নয়, অপহরণের মাধ্যমেও চক্রটি হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এমনই এক চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওয়ারী বিভাগ।
তারা হলেন- সোহাগ মিয়া ওরফে স্বজন ওরফে কাজল ওরফে হিজড়া সজনি (৩২), নাছির (৪২), আমানুর মন্ডল (৪২), রাজু (২৬), আব্দুর রহমান (৩৬) ও হৃদয় মিয়া (২২)।
শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ডিএমপির ডিবি ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন।
মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, গত ২৩ জানুয়ারি বিকেলে রাজধানীর মুন্সি আব্দুর রব কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র সাইফুল ইসলাম (১৬) ক্যাম্পাস থেকে বাসায় ফেরার পথে যাত্রাবাড়ী এলাকায় তৃতীয় লিঙ্গের খপ্পরে পড়েন। পরে তৃতীয় লিঙ্গের কয়েকজন তাকে যাত্রাবাড়ী এলাকার একটি মেসে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে একজন পতিতার সঙ্গে ছবি তুলে তার কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করে। পরে ওই শিক্ষার্থী থানা পুলিশের আশ্রয় নেন। এরপর রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তৃতীয় লিঙ্গের বেশ ধারণ করা চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করে ডিবির ওয়ারী বিভাগ।
তিনি বলেন, চক্রটির প্রধান কাজল ওরফে সজনি হিজড়া। তার আসল নাম সোহাগ। দুই সন্তানের জনক সোহাগের রয়েছে সাত থেকে আটজনের চক্র। তারা রাজধানীতে চাঁদাবাজিসহ মানুষকে নানাভাবে ব্ল্যাকমেইল করে আসছিলেন।
ডিবির এ কর্মকর্তা বলেন, রাজধানীতে ৯০ শতাংশই নকল তৃতীয় লিঙ্গের লোকজন। শুধু রাস্তায় বা বাসায় চাঁদাবাজি নয়, অপহরণের মাধ্যমেও সোহাগের চক্রটি হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এমনকি চাঁদাবাজির টাকা চড়া সুদে ঋণ দেওয়ারও প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ।
গোয়েন্দা (ওয়ারী) বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মো. তরিকুর রহমান বলেন, দেশে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষকে হিজড়া বলা হয়। সত্যিকার অর্থেই যারা তৃতীয় লিঙ্গের তাদের অভিযোগ, রাজধানীতে অনেক নকল হিজড়া আছে। তাদের মূল উদ্দেশ্য মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া।
তিনি বলেন, সজনি হিজড়া তার মতো আরও ৭ থেকে ৮ জনকে নিয়ে তৈরি করেন নকল হিজড়া গ্রুপ। রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ী, দোকানপাট থেকে শুরু করে যেখানে-সেখানে টাকার জন্য মানুষকে নাজেহাল করেন তারা।