জয়দেব চক্রবর্ত্তী , কেশবপুর (যশোর)
যশোরের কেশবপুরে আমন মৌসুমে সরকার নির্ধারিত মূল্যে ধান-চাল বিক্রিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না কৃষক ও চুক্তিবদ্ধ মিলাররা। ইতোমধ্যে সরকারিভাবে ধান-চাল ক্রয়ের উদ্বোধনের তিন মাস সময় পর হয়েছে। কিন্তু এক ছটাকও ধান-চাল সংগ্রহ করতে পারেনি খাদ্যগুদাম কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় কৃষক ও খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সরকার কেশবপুরে চলতি আমন মওসুমে ৩২৬ মেট্রিকটন ধান ও ২৫৯ মেট্রিকটন চাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। প্রতিমন ধান ১১২০ টাকা ও প্রতিমন চাল ১৬৮০ টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়। গত বছরের নভেম্বরে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন করা হয়। কিন্তু খাদ্য গুদামে ধান-চাল ক্রয়ে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বাজার মূল্য বেশী।
এ পরিস্থিতিতে গ্রুদামে ধান-চাল বিক্রি করে কৃষক ও চুক্তিবদ্ধ মিলাররা লাভবান হবেন না। যে কারণে আমন মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান ব্যর্থ হওয়ার পথে। গত ৪ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত এক ছটাকও ধান-চাল সংগৃহীত হয়নি।
বর্তমান কেশবপুর উপজেলার হাট-বাজারে প্রতিমন ধান ১২‘শ থেকে ১৩‘শ টাকা মন দরে এবং মোটা চাল ১৮৪০ থেকে ১৮৬০ টাকা মন দরে বিক্রি হচ্ছে। এ অবস্থায় সরকার নির্ধারিত মূল্যে ধান দিলে কৃষকদের মনপ্রতি লোকসান গুনতে হবে ১৮০ টাকা, আর চালে লোকসান গুনতে হবে ১৬০ টাকা। একারণেই কৃষক ও চুক্তিবদ্ধ মিলাররা ধান-চাল বিক্রি করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।
পৌরসভার মধুকুল এলাকার কৃষক আজিজুর রহমান বলেন, এবার সরকারি দামের চেয়ে বাজারে ধানের দাম বেশি। এরপরও সরকারি খাদ্যগুদামে ধান বিক্রিতে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। আদ্রতার কথা বলে প্রতি মন ধানে এক-দুই কেজী করে বেশী দিতে হয়। অনেক সময় বিভিন্ন তালবাহানা করে ধান ফেরত দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা সুনীল মন্ডল বলেন, ধান-চালের বাজার মূল্য বেশি হলেও সরকারিভাবে ধান-চালের মূল্য বাড়ানোর কোন সুযোগ নেই। সংগ্রহ অভিযানের শুরু থেকে ৪ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত এক কেজিও ধান-চাল সংগ্রহ করা যায়নি। সরকারি মূল্যের চেয়ে ধান-চালের বাজার মূল্য বেশি থাকায় এবং ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা তোলার ঝামেলা এড়াতে কৃষকেরা গুদামে ধান দিতে চায় না।