নিজস্ব প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরার দেবহাটার খলিষাখালী ভূমিহীন জনপদে অগ্নিসংযোগ ও বোমা নিক্ষেপ করে ত্রাস সৃষ্টির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগীদের পক্ষে মোঃ আবু বকর গাজী।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা দেবহাটা উপজেলার খলিষাখালী এলাকার ভূমিহীন জনপদের অসহায় নিরীহ ভ‚মিহীন মানুষ। আমাদের বসবাসের মত কোন জমিজায়গা নাই। আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ সি এস ১৮১২ খতিয়ানের রেকর্ডীয় মালিক চন্ডিচরন ঘোষের পরিত্যাক্ত ৪৩৯.২০ একর জমি, যাহা লাওয়ারেশ হিসেবে সরকারী ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত জমিতে ৬৩৫টি পরিবার শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করিয়া আসিতেছি। এরপর কথিত জমির মালিকরা আমাদের নামে বিভিন্ন সময়ে থানায় ফৌজদারী মামলা দায়ের করিয়া আসিতেছে। উক্ত জমিতে সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের রায়ে তৎকালীন সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসককে উক্ত জমি দেখভাল করার নির্দেশ দিলেও তিনি তা নেননি। বরং ২৯/১১/২১ তারিখে ভুয়া জাল জালিয়াতি কাগজপত্র তৈরি করে জমির মালিকানা দাবিদার ব্যক্তিদ্বয়ের পক্ষে বড় অংকের টাকার বিনিময়ে ব্যক্তি মালিকানা সম্পত্তি হিসেবে উল্লেখ করিয়া সরকারি সম্পত্তি নিজ দখলে না লইয়া ব্যক্তিগত সম্পত্তি হিসেবে ৬৩৫টি ভ‚মিহীন পরিবারগুলোকে উচ্ছেদ করার আদেশ দেন সাবেক জেলা প্রশাসক হুমায়ুন কবির। উক্ত আদেশের ভিত্তিতে ভ‚মিহীন ৬৩৫টি পরিবারের বাড়িঘর ভেঙে গুড়িয়ে দিয়ে সাতক্ষীরা জেলার ইতিহাসে নজীর বিহীন ঘটনা ঘটিয়েদেন সাবেক জেলা প্রশাসক হুমায়ুন কবির। এই সুযোগে উক্ত সম্পত্তি জবর দখল করে ভোগদখল করেন চিহ্নিত জালিয়াতী কাজী গোলাম ওয়ারেশ, ডাঃ নজরুল ইসলাম ও আব্দুল আজিজের মত ভ‚মিদসু কথিত জমির মালিক দিং। তাহারা টাইটেল লুট নং-১৮/২০১০ ও আপিল মামলা নং ২১৬/১২ জমির মালিক দাবি করে এই চক্রটি বিভিন্ন আদালতে মামলা দায়ের করে সরকারি সম্পত্তি ভোগদখল করে আসিতেছে উক্ত ঘটনাটি সাতক্ষীরা জজ কোর্টের বিজ্ঞ জিপি গাজী লুৎফর রহমানের দৃস্টিগোচর হওয়ার পর থেকে সরকার পক্ষ নড়ে চড়ে বসে এবং উক্ত সম্পত্তি রিসিভার নিয়োগের জন্য উক্ত আদালতের স্বরনাপন্ন হন এবং বিজ্ঞ আদালত উক্ত সম্পত্তি রিসিভার নিয়োগ করেন। ভ‚মিদস্যু ও ভ‚মি জবর দখলকারী জাল জালিয়াতি কাগজপত্র সৃজনকারীদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক কোন পদক্ষে নেন নাই। উক্ত জমিতে ৬৩৫টি পরিবার বর্তমান বাড়ি ঘর নির্মাণ করিয়া শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখলে আছে। ভ‚মিহীনদের পক্ষে আনারুল ইসলাম (সহ ২৮জন) রিট পিটিশন ১৫০০/২০২২ দায়ের করেন এবং মহামান্য হাইকোর্ট থেকে অদ্যবধি স্টাট্যাস্কো বহাল আছে। কিন্তু উক্ত ভ‚মিদস্যু ও এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী একাধিক হত্যা গুম ও ডাকাতি মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামী আকরাম ডাকাত, কালু ডাকাত ওরফে শরিফুল, মোকরম শেখ, সাইফুল, রিয়াজ মৌলভী, শওকাত, আব্দুল আলিম, বাকু ছিদ্দিকসহ বহিরাগত সন্ত্রাসীরা প্রতিনিয়ত এলাকায় বোমা ফাটিয়ে বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে। গত ২০/০৫/২৫ সকাল ১০টার দিকে ভ‚মিহীন মমতাজ ওরফে ভাদ্র, নার্গিস, তুলি, খাদিজা ও মজিদের বাড়িতে যেয়ে তাদের বাড়িঘর ভাংচুরসহ অগ্নি সংযোগ করে প্রায় ১৭ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন করে। মমতাজ ওরফে ভাদ্রæরী দুই পা ভেঙে ও হাতে কোপ দিয়েছে উক্ত সন্ত্রাসীরা। পরবর্তিতে ভ‚মিহীন জনপদের লোকজন একত্রিত হয়ে সন্ত্রাসীদেরকে ধাওয়া করলে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে অস্ত্র উচিয়ে গুলি করতে করতে বাহিরে চলে যান। কিন্তু সন্ত্রাসী বাহিনীর সক্রিয় সদস্য একাধিক হত্যা, অস্ত্র ও ডাকাতি মামলার আসামী নাংলার আব্দুল গফুর ও আতিয়ার ওরফে আকাশসহ অজ্ঞাতনামা ঘটনাস্থলে জনতার হাতে আটক হয়।