হোম এক্সক্লুসিভ ৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচন

জাতীয় ডেস্ক:

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৭ জানুয়ারি (রোববার)। বুধবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে আগামী ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। রিটার্নিং অফিসারের আদেশের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি হবে ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনী প্রচারণা চলবে ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত।

এর আগে বিকেল ৫টায় বর্তমান কমিশনের ২৬তম সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় তফসিল চূড়ান্ত করা হয়।

সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে ইসির সভায় নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান, রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর ও মো. আনিছুর রহমান এবং ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের অফিস কক্ষে এই বৈঠকে ভোটগ্রহণের কয়েকটি সম্ভাব্য তারিখ নিয়ে কথা হয় হয় এবং তা চূড়ান্ত করা হয়। বৈঠকে নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা, বাছাই ও প্রত্যাহারের শেষ দিন নিয়েও কথা হয়।

এদিকে সকালে এক ব্রিফিংয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সচিব জাহাংগীর আলম জানান, নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ আছে বলেই তফসিল দেয়া হচ্ছে।

সংবিধান অনুযায়ী, ১ নভেম্বর থেকেই শুরু হয়েছে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের ক্ষণগণনা। ডেডলাইন ২৯ জানুয়ারি। অর্থাৎ জানুয়ারির শুরু থেকে যেকোনো সময় তফসিল দিতে পারবে কমিশন। চলতি সংসদের ৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগের ৯০ দিন অর্থাৎ ২৯ জানুয়ারির মধ্যেই ভোট হতে হবে।

ভোটের প্রস্তুতিতে আগেই রোডম্যাপ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সেই অনুসারে ভোটার তালিকা হাল নাগাদ, সীমানা পুনঃনির্ধারন, অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ, ব্যালট বাদে ভোটের বাকি সরঞ্জাম জেলায় জেলায় পৌঁছে দেয়াসহ সব কাজ সেরেছে নির্ধারিত সময়েই। রেওয়াজ অনুযায়ী ৯ নভেম্বর বঙ্গভবনে ভোটের সবশেষ প্রস্তুতি সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করে কমিশন।

এদিকে নির্বাচন কমিশনের বৈঠক, সিইসির জাতির উদ্দেশে ভাষণ ও তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আগারগাঁও নির্বাচন কমিশনের আশপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়।

গত ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর দেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে দশম সংসদ ভোট হয় ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি। তার আগে নবম সংসদ নির্বাচনের তারিখ ছিল ২৯ ডিসেম্বর। অর্থাৎ সবশেষ জাতীয় নির্বাচনগুলো ডিসেম্বরের শেষ বা জানুয়ারির শুরুতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

রাজনৈতিক দলগুলোতে চরম বিভক্তি, সংলাপের আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের
এদিকে নির্বাচন নিয়ে দুই মেরুতে দেশের সবচেয়ে বড় দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি। সরকার পতনের একদফা আন্দোলনের দাবিতে অবরোধ কর্মসূচিতে আছে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো। অন্যদিকে সংবিধান মেনেই নির্বাচন চায় ক্ষমতাসীন জোটসহ বেশ কিছু রাজনৈতিক দল।

এই অবস্থায় সমঝোতার জন্যও তাগিদ দিচ্ছে নানা মহল। বড় তিন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জাতীয় পার্টিকে চিঠি দিয়ে ‘পূর্বশর্ত ছাড়া’সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। গত কয়েক মাস ধরেই বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন আয়োজনে তাগিদ দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। এক্ষেত্রে বাধা দানকারীদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞার ঘোষণাও দিয়েছে দেশটি।

ডোনাল্ড লু’র চিঠির বিষয়ে বিএনপি মুখ না খুললেও জাতীয় পার্টি বলছে, সংলাপ ছাড়া ভোটের মাঠে নামবেন না তারা। আর সংলাপের আহ্বানকে স্বাগত জানিয়ে আওয়ামী লীগের প্রশ্ন আলোচনায় বসবে কাদের সঙ্গে?

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করছেন, বিভিন্ন সময় আন্তর্জাতিক মহল থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপের আহ্বান জানানো হলেও এই মুহূর্তে সেরকম সম্ভাবনা কম।

২০০৬ সালে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল বিএনপির মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়ার সঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিলের সংলাপ হয়েছিল। সেই সংলাপ সফল হয়নি। এরপর ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে জাতিসংঘের বিশেষ দূত অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোর মধ্যস্থতায় বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কয়েক দফা সংলাপ হয়েছিল। কিন্তু সেসব সংলাপেও কোনো কার্যকর ফলাফল আসেনি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন